দুনিয়া আখিরাতের শস্যক্ষেত্র কথাটির ব্যাখ্যা হল: শস্য ক্ষেত্রে মানুষ যেরূপ চাষাবাদ করে সেরূপ ফল লাভ করে। যেমন কেউ ধান চাষ করলে ধান লাভ করে আর গম চাষ করলে গম লাভ করে।
তেমনি ভালো করে চাষাবাদ করলে ফসল বেশি ভালো হয় আর অলসতার কারণে চাষাবাদ না করলে জমি ফেলে রাখলে সে কিছুই লাভ করে না।
দুনিয়া ও আখিরাতের অবস্থাও ঠিক তেমন। আমরা যদি দুনিয়াতে ভাল কাজ করি, আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলি তাহলে আখেরাতে ভালো ফল লাভ করব।
আর যদি নিজ ইচ্ছা মত চলাফেরা করি, অন্যায় ও পাপ কাজ করি তাহলে আমরা পরকালে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হব।
সুতরাং পরকালের অনন্ত জীবনের জন্য দুনিয়াতেই আমাদেরকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা এভাবে বলেছেনঃ
“আর এ দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয় এবং নিশ্চয় আখিরাতের নিবাসই হলো প্রকৃত জীবন, ঘদি তারা জানত”। (সুরা আল আনকারত:৬৪)
মুলত দুনিয়া হলো পরীক্ষার স্থান। আর আখিরাত হল দুনিয়ার কর্মফলের স্থান। আমরা দুনিয়াতে ঘা কামাই করবো তারই প্রতিদান আখিরাতে পাব। দুনিয়া পশ্চাৎপানে চলে গেছে। আর আখিরাত সন্মুখ থেকে এগিয়ে আসছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
“দুনিয়া ঘার গুরুত্বের বিষয় হবে, আল্লাহ তার সবকিছু বিক্ষিপ্ত করে দিবেন”। (ইবনে মাজাহ, সহীহ)
তাই দুনিয়ার পেছনে দৌড়ঝাঁপ নয়, আখিরাতের পেছনেই সর্বশক্তি নিয়োগ করুন। তাহলে দুনিয়া আখিরাত উভয়টাই পাব। আখিরাতের উপর দুনিয়াকে প্রাধান্য দিলে দুনিয়াও হারাতে হবে সাথে আখিরাতও। দুনিয়া তো হলো আখিরাতের শস্যক্ষেত্র। এ শস্যক্ষেত্রে যে ফসল ফলাবে না সে আখিরাতকে হারিয়ে ফেলবে।
ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
“দুনিয়াতে তুমি এমনভাবে থাকো যেন তুমি অপরিচিত অথবা পথিক’। (বুখারী)
এ হদীসটির ব্যাখ্যা হল দুনিয়াতে মুমিনকে এমনভাবে থাকতে হবে, যেন সে সফর অবস্থায় আছে এবং প্রস্থানের জন্য মাল-সামানা গোছগাছ করছে।
আখিরাতের জীবনই আসল জীবন। মানুষ আখিরাতের বাস্তব দৃশ্য যখন চক্ষে দেখবে, সে নিজেই তখন শ্বীকার করবে, আখিরাতের জীবনই আসল জীবন।
সে বলবে : “হায়! যদি আমি কিছু আগে পাঠাতাম আমার জীবনের জন্য”। (সুরা আল ফাজর: ২৪)
সুতরাং আমাদের উচিত ভাল আমল দ্বারা দুনিয়াতেই থেকে আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করা।
আরও দেখুনঃ