tawheed

তাওহীদ অর্থ কি:

তাওহীদ শব্দের আভিধানিক অর্থ- এক করা, একক ও অদ্বিতীয় সাব্যস্ত করা, একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করা। শারী‘য়াতের পরিভাষায় তাওহীদের অর্থ হলো- আল্লাহ্‌কে তাঁর সুমহান জাত (সত্তা) সর্বসুন্দর নাম ও সিফাতে (গুণরাজি-বৈশিষ্ট্যে) এবং তাঁর অধিকার, কর্ম ও কর্তৃত্বে এক, একক ও অদ্বিতীয় ষোষণা ও সাব্যস্ত করা, এবং এসব ক্ষেত্রে নিজের কথা, কাজ ও বিশ্বাসের দ্বারা আল্লাহ্‌র একত্ব অক্ষুন্ন রাখা।

তাওহীদ কাকে বলে?

উত্তর: তাওহীদ শব্দটি (وحد) ক্রিয়ামূল থেকে উৎপত্তি হয়েছে। এর আভিধানিক অর্থ কোনো জিনিসকে একক হিসেবে নির্ধারণ করা। ‘না’ বাচক ও ‘হ্যাঁ’ বাচক উক্তি ব্যতীত এটির বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ একককৃত বস্তু ব্যতীত অন্য বস্তু হতে কোনো বিধানকে অস্বীকার করে একককৃত বস্তুর জন্য তা সাব্যস্ত করা। উদাহরণস্বরূপ আমরা বলব, “আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো মা‘বূদ নেই” একথার সাক্ষ্য দেওয়া ব্যতীত কোনো ব্যক্তির তাওহীদ পূর্ণ হবে না। যে ব্যক্তি এ সাক্ষ্য প্রদান করবে, সে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য সকল বস্তু হতে উলুহিয়্যাতকে (ইবাদাত) অস্বীকার করে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য তা সাব্যস্ত করবে। কারণ, শুধুমাত্র নাফী বা ‘না’ বাচক বাক্যের মাধ্যমে কোনো বস্তুকে গুণাগুণ থেকে মুক্ত করা হয়। আর শুধুমাত্র ‘হ্যাঁ’ বাচক বাক্যের মাধ্যমে কোনো বস্তুর জন্য কোনো বিধান সাব্যস্ত করলে সেই বিধানে অন্যের অংশ গ্রহণকে বাধা প্রদান করে না। যেমন. উদাহরণস্বরূপ যদি আপনি বলেন, ‘অমুক ব্যক্তি দাঁড়ানো’। এ বাক্যে আপনি তার জন্য দণ্ডায়মান হওয়াকে সাব্যস্ত করলেন। তবে আপনি তাকে দণ্ডায়মান গুণের মাধ্যমে একক হিসাবে সাব্যস্ত করলেন না। হতে পারে এ গুণের মাঝে অন্যরাও শরীক আছে। অর্থাৎ অমুক ব্যক্তির সাথে অন্যান্য ব্যক্তিগণও দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। আর যদি বল, “যায়েদ ব্যতীত আর কেউ দাঁড়ানো নেই” তবে আপনি দণ্ডায়মান হওয়াকে শুধুমাত্র যায়েদের সাথে সীমিত করে দিলেন। এ বাক্যে আপনি দন্ডায়মানের মাধ্যমে যায়েদকে একক করে দিলেন এবং দাঁড়ানো গুণটিকে যায়েদ ব্যতীত অন্যের জন্য হওয়াকে অস্বীকার করলেন। এভাবেই তাওহীদের প্রকৃত রূপ বাস্তবায়ন হয়ে থাকে। অর্থাৎ নাফী (না বোধক) ও ইসবাত (হ্যাঁ বোধক) বাক্যের সমন্বয় ব্যতীত তাওহীদ কখনো প্রকৃত তাওহীদ হিসেবে গণ্য হবে না। মুসলিম বিদ্বানগণ তাওহীদকে তিনভাগে বিভক্ত করেছেন:

১. তাওহীদুর রুবূবীয়্যাহ

২. তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ

৩. তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত

কুরআন ও হাদীস গভীরভাবে গবেষণা করে আলিমগণ এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, তাওহীদ উপরোক্ত তিন প্রকারের মাঝে সীমিত।

আরও দেখুনঃ আল-আসমাউল হুসনা বলতে কী বােঝায়?

তাওহীদ তিন প্রকার যথা:-

(১) তাওহীদুর রুবূবিয়্যাহ। আর তা হলো- নিজের কথা, কাজ ও বিশ্বাসের দ্বারা আল্লাহ্‌কে তাঁর যাবতীয় কর্ম ও কর্তৃত্বে এক ও অদ্বিতীয় তথা লা-শরীক (অংশীদারহীন) সাব্যস্ত করা।

(২) তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ। অর্থাৎ- ‘ইবাদাতে আল্লাহ্‌র একত্ব অক্ষুন্ন রাখা। অন্য কথায়, ‘ইবাদাতে আল্লাহ্‌র একত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

(৩) তাওহীদুল আছমা ওয়াস্‌সিফাত। অর্থাৎ- আল্লাহ্‌কে তাঁর নাম ও গুণাবলীতে এক ও অদ্বিতীয় সাব্যস্ত করা। অন্য কথায়, আল্লাহ্‌র সুমহান নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহ্‌র একত্ব অক্ষুন্ন রাখা।

“সাব্যস্ত করার’’ অর্থ হলো- নিজের ‘আক্বীদাহ-বিশ্বাসে, কথা-বার্তায় ও কাজে-কর্মে আল্লাহ্‌র একত্ববাদ প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত করা।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.