islamic pic

শিরক শব্দের অর্থ হল অংশীদার সাব্যস্ত করা, সমকক্ষ মনে করা। ইসলামি পরিভাষায় আল্লাহ তাআলার সাথে অন্যকিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করা বা মনে করাকে শিরক বলে। যে শিরক করে তাঁকে মুশরিক বলে। শিরক হল তাওহীদের বিপরীত।

শিরকের কুফল ও পরিনতি বর্ণনা কর

শিরকের কুফল ও পরিণতি খুবই ভয়ানক। পবিত্র কুরআন মজিদে শিরকে সবচেয়ে বড় যুলুম বলা হয়েছে।

“নিশ্চয় শিরক করা চরম যুলুম ।” (সূরা লুকমান, আয়াত ১৩)

শিরকের কুফল: শিরকের সবচেয়ে বড় কুফল হল এর মাধ্যমে আল্লাহর সাথে অন্যায় আচরণ এবং বেয়াদপি করা হয়। কেননা সকল ইবাদাত এবং প্রশংসার একমাত্র হকদার হলেন মহান আল্লাহ তায়ালা। তাছাড়া শিরক একটি মর্যাদাহানিকর কাজ। মুশরিকরা শিরকে লিপ্ত হয়ে নিজ হাতে তৈরি করা অন্য সৃষ্টির কাছে মাথা নত করে। এর ফলে মানুষের (সৃষ্টির সেরা জীব  বা আশরাফুল মাখলুকাত) মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। শিরকের মাধ্যমে সামাজিক বিশৃখলা সৃষ্টি এবং ভ্রাতৃত্ববোধ নষ্ট হয়। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় শিরকের অনেক নমুনা লক্ষ্য করা যায় যেমন:

মানুষ যখন নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে তখন সে শিরকে লিপ্ত হয়। আল্লাহ বলেন:

“আপনি কি তাকে দেখেন না যে তার প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে?” (সূরা আল ফুরকান, ২৫ : ৪৩)

এখানে ইসলাম ও শরীয়তবিরোধী কোন প্রবৃত্তির অনুসারীকে প্রবৃত্তির পূজারী বলা হয়েছে। আমাদের মুসলিম সমাজে দেখা যায় নিজের খেয়ালখুশির অনুসরণ করে তা ইসলাম ও শরীয়তের  বিধান বানিয়ে দেই। তাছাড়া জ্যোতিষশাস্ত্র, ভাগ্যগণনা, তাবিজ, কবচ, ঝাড়ফুঁক, বশীকরণ, লোক দেখানো ইবাদাত বা রিয়া ইত্যাদিও শিরকের সমতুল্য। দুঃখের বিষয় আমাদের সমাজে এইসবের চিত্র ব্যাপক।

শিরকের পরিণতি: শিরকের পরিণতি অনেক ভয়াবহ। শিরকের শেষ ঠিকনা হল জাহান্নাম। শিরকের অপরাধ আল্লাহ ক্ষমা করেন না। আল্লাহ বলেনঃ

 “আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করার অপরাধ অবশ্যই ক্ষমা করবেন না, কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা এর চেয়ে কম (অপরাধ) ক্ষমা করে দেন।” (সূরা আন নিসা, ৪ : ৪৮)

আল্লাহ শিরককারীর জন্য জান্নাত হারাম করেছেন। তাদেরকে জালিক বা অত্যাচারী ঘোষণা করে তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী থাকবে না বলেও ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ বলেন:

“যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করেছে; আল্লাহ তাঁর ওপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। তার পরিণতি হবে জাহান্নাম। এ সব জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই”। (সূরা আল মায়েদাহ, ৫: ৭২)

আল্লাহ শিরকের ভয়াবহতা উল্লেখ করে করে পূর্ববর্তী নবিদেরকে সতর্ক করেছেন। যারা শিরক করে আল্লাহ তাদের সব ভাল আমল বরবাদ করে দিবেন বলে সুরা আনআ’ম  এর ৮৮ তম আয়াতে বলেছেন।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

‘যে ব্যক্তি শিরক করা অবস্থায় মারা যাবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

সুতারং আমরা শিরক থেকে নিজের দূরে রাখবো এবং মহান আল্লাহর কাছে শিরক থেকে আশ্রয় চাইবো।

আরও দেখুনঃ-

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.