social work

২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় সপ্তাহের সমাজকর্ম বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট ডব্লিউ. এ. ফ্রিডল্যান্ডার এবং এনসাইক্লোপিডিয়া অব সােস্যাল ওয়ার্ক প্রদত্ত সমাজকর্মের সংজ্ঞার আলােকে সমাজকর্ম শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তার পক্ষে যৌক্তিকতা শীর্ষক একটি প্রবন্ধ নিয়ে হাজির হলাম। এটি অনুসরণ করার মাধ্যমে তোমরা ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার মানবিক বিভাগের সমাজকর্ম বিষয়ের প্রথম এসাইনমেন্ট খুব সুন্দরভাবে সমাধান করতে পারবে এবং মূল্যায়নে ভালো ফলাফল পাব।

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ সমাজকর্ম ১ম অ্যাসাইনমেন্ট

মানবিক বিভাগের যে সকল শিক্ষার্থী নৈর্বাচনিক বিষয় হিসেবে সমাজকর্ম নিয়েছে তাদের জন্য দ্বিতীয় সপ্তাহে সমাজকর্ম পাঠ্য বইয়ের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে প্রথম অধ্যায়ের সমাজকর্ম : প্রকৃতি এবং পরিধি থেকে।

মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য সমাজকর্ম বিষয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস এর আলোকে প্রণীত এই এসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা সমাজকর্মের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে, সমাজকর্মের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে পারবে, সমাজকর্ম শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে পারবে।

নিচের ছবিতে মানবিক বিভাগের সমাজকর্ম বিষয়ের প্রথম এসাইনমেন্ট, নির্দেশনা ও মূল্যায়ন রুবিক্স গুলো তুলে ধরা হলো

https://i.imgur.com/kY1mcQH.jpg

অ্যাসাইনমেন্টঃ ডব্লিউ. এ. ফ্রিডল্যান্ডার এবং এনসাইক্লোপিডিয়া অব সােস্যাল ওয়ার্ক প্রদত্ত সমাজকর্মের সংজ্ঞার আলােকে সমাজকর্ম শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তার পক্ষে যৌক্তিকতা;

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):

ক. ডব্লিউ. এ. ফ্রিল্যান্ডার এবং এনসাইক্লোপিডিয়া অব সােস্যাল ওয়ার্ক প্রদত্ত সমাজ কর্মের সংজ্ঞা;

খ. সমাজকর্মের এই ২টি সংজ্ঞার তুলনামূলক উপস্থাপন ও ব্যাখ্যা;

গ. সমাজকর্ম ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে সমাজকর্মের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা;

ঘ. সমাজকর্ম শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তার পক্ষে যৌক্তিকতা;

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ সমাজকর্ম ১ম অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট লেখার সুবিধার্থে সমাজকর্ম প্রথম পত্র প্রথম অ্যাসাইনমেন্টের দেওয়া মূল্যায়ন রুবিক্স সমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় সপ্তাহের সমাজকর্ম বিষয়ে অ্যাসাইনমেন্ট এর একটি নমুনা উত্তর প্রদান করা হলো।

২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সপ্তাহে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুসরণের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন তথ্য সূত্র থেকে পাঠ্য বইয়ের প্রথম অধ্যায়ের দেওয়া অ্যাসাইনমেন্ট ডব্লিউ. এ. ফ্রিডল্যান্ডার এবং এনসাইক্লোপিডিয়া অব সােস্যাল ওয়ার্ক প্রদত্ত সমাজকর্মের সংজ্ঞার আলােকে সমাজকর্ম শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তার পক্ষে যৌক্তিকতা নিরূপণ করে একটি প্রবন্ধ দেয়া হলো।

প্রশ্ন-ক: ডব্লিউ. এ. ফ্রিল্যান্ডার এবং এনসাইক্লোপিডিয়া অব সােস্যাল ওয়ার্ক প্রদত্ত সমাজ কর্মের সংজ্ঞা;

ক নং প্রশ্নের উত্তর

ভূমিকাঃ একটি সাহায্যকারী পেশা যা কতকগুলো পদ্বতির মাধ্যমে ব্যক্তি, দল বা সমষ্টির সমস্যা সমাধানে এমনভাবে সহায়তা করে যাতে তারা নিজেরাই নিজেদের সমস্যা সমাধানে সক্ষম হয়।

ডব্লিউ এ ফ্রিড ল্যান্ডারের মতে, ” সমাজকর্ম হল বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও মানবিক সম্পর্ক বিষয়ক এমন এক পেশাদার সেবা কর্ম, যা ব্যক্তিগত ও সামাজিক সন্তুষ্টি এবং স্বাধীনতা লাভে কোন ব্যক্তিকে একক অথবা দলীয় ভাবে সাহায্য করে।”

সমাজকর্ম বিশ্বকোষ (Encyclopedia of Social Work)-এ সমাজকর্মের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘সমাজকর্ম হলাে একটি পেশাগত ও একাডেমিক শৃঙ্খলা, যা ব্যক্তি, পরিবার, দম্পতি, দল ও সমষ্টির গুণগত জীবনমান অর্জন ও কল্যাণে গবেষণা, নীতি, সমষ্টি সংগঠন, সরাসরি অনুশীলন, সঙ্কটে হস্তক্ষেপ ও শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে উন্নয়নে সচেষ্ট, যার সুফল। সামাজিকভাবে অসুবিধাগ্রস্ত যেমন- দারিদ্র্য, মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা বা অক্ষমতা এবং জনগণের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতাে সামাজিক অবিচার দূর করে।

প্রশ্ন-খ. সমাজকর্মের এই ২টি সংজ্ঞার তুলনামূলক উপস্থাপন ও ব্যাখ্যা;

নং প্রশ্নের উত্তর

সমাজকর্মের সংজ্ঞার তুলনামূলক উপস্থাপনঃ

উপরে আলােচিত ওয়াল্টার এ. ফিনল্যান্ডের ও সমাজকর্ম বিশ্বকোষ এর সংজ্ঞা দুটিতে সমাজকর্ম কে একটি পেশাগত কর্ম বলা হয়েছে। উভয় সংঘাতে দেখা যায় যে সমাজকর্ম একটি পেশাদার সেবাকর্ম যা স্বতন্ত্র ব্যক্তি, দল কিংবা সামাজিক সন্তুষ্টি অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

ফিল্যান্ডারের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে সমাজকর্ম স্বাধীনতা অর্জনে এককভাবে বা দলীয়ভাবে ব্যক্তিকে সহায়তা করে। তেমনিভাবে সমাজকর্ম বিশ্বকোষ-এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে।

সমাজকর্ম সামাজিক অসুবিধা গ্রস্থ যেমন দারিদ্র মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা বা অক্ষমতা এবং জনগণের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতাে সামাজিক অবিচার দূর করে। অর্থাৎ ব্যক্তির স্বাধীনতা রক্ষায় ভূমিকা পালন করে। ডব্লিউ এ ফিনল্যান্ডের ও সমাজকর্ম বিশ্বকোষ- উভয় সংজ্ঞাতেই সমাজকর্মের ধারণার যথেষ্ট মিল রয়েছে।

প্রশ্ন-গ. সমাজকর্ম ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে সমাজকর্মের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা;

নং প্রশ্নের উত্তর

সমাজকর্মের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ মানুষ সামাজিক জীব মানুষ সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকেই সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করে আসছে। কারণ কোন মানুষের পক্ষেই একা বসবাস করা সম্ভব নয়। সমাজ পরিবর্তনশীল এবং এই পরিবর্তনশীল সমাজের সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলতে মানুষ অনেক সময় ব্যর্থ হয়।

যার ফলে সমাজে সৃষ্টি হয় নানা সামাজিক সমস্যার। আর এ সকল সমস্যার সমাধান এবং মানুষকে তার সামাজিক পরিবেশের প্রতিটি স্তরের জনগণকে সক্রিয় ও সামঞ্জস্য স্থাপনে সক্ষম করে তােলার জন্যই সমাজকর্মের উদ্ভব।

১. জনগণের সমস্যার সমাধান, উপযােজন এবং ক্ষমতার উন্নয়ন;

২. সম্পদ, সমাজের সাথে মানুষের সংযােগ ঘটানাে;

৩. কার্যকরী ও মানবীয় ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করা;

৪. সামাজিক নীতির বিকাশ ও উন্নয়ন;

৫. কার্যকর সামাজিক ভূমিকা পালনের জন্য ব্যক্তিগত ও সামাজিক সম্পদের সমাবেশ করা;

৬. সামাজিক বিপর্যয় প্রতিরােধ করা;

সার্বিকভাবে বলা যায় যে, সমাজকর্মের লক্ষ্য হলাে সমাজজীবন থেকে সকল প্রকার জটিল সমস্যা দূর করে পরিকল্পিত উপায়ে কাভিক্ষত ও গঠনমূলক সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করা। এ উদ্দেশ্যে সমাজকর্ম জাতি, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি নির্বিশেষে সকল মানুষের ব্যক্তিগত, দলীয় ও সমষ্টিগত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।

ঘ. সমাজকর্ম শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তার পক্ষে যৌক্তিকতা;

নং প্রশ্নের উত্তর

সমাজকর্ম হচ্ছে মানুষকে সামাজিক ভূমিকা পালনে সক্ষম করে তােলার অভিপ্রায়ে প্রতিশ্রুতিশীল একটি বহুমুখী পেশা। মানবজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা হতে অর্জিত জ্ঞানের সমন্বয়ে গঠিত সমাজকর্ম হচ্ছে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, পেশাগত মূল্যবােধ ও দক্ষতাভিত্তিক ব্যবহারিক সামাজিক বিজ্ঞান।

সমাজের জটিল ও বহুমুখী সমস্যার প্রতিকার, প্রতিরােধ ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সমাজকর্ম শিক্ষা ও তার প্রয়ােগ বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। বর্তমান বিশ্বের বহুমুখী সমস্যার বৈশিষ্ট্য, প্রকৃতি, কারণ ও প্রভাব সম্পর্কে যথাযথ অনুসন্ধান করে সমস্যা সমাধানে সমাজকর্মের বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞানের গুরুত্ব উল্লেখযােগ্য।

সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে সমস্যা মােকাবিলায় বাস্তবমুখী ও যুগােপযােগী নীতি, পরিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সমাজকর্মের জ্ঞান বিশেষভাবে উপযােগী।

বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে অদ্যবধি আমেরিকা, ইউরােপ, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে প্রায় দুই হাজারের অধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্মে উচ্চ শিক্ষা চালু রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রতি বছর পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী সমাজকর্মে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্ম বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচ.ডি. ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। সমাজকর্মে উচ্চ শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়ােজনীয়তা বিবেচনা করে জাপানের টোকিওতে কলেজ অব সােশ্যাল ওয়ার্ক নামে একটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

চীনে ২০০৯ সালে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম বিভাগ খােলা হয়েছে এবং ২০১২ সাল থেকে ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি প্রােগ্রাম চালু রয়েছে;

যা সমাজকর্ম শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা তুলে ধরছে। বাংলাদেশেও উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এম.ফিল ও পিএইচ.ডি. পর্যায়ে সমাজকর্ম শিক্ষা চালু রয়েছে। বাংলাদেশে পাঁচটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রায় একশতটির মতাে কলেজে সমাজকর্মে স্নাতক প্রােগ্রাম চালু আছে।

এছাড়া কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও সমাজকর্ম শিক্ষা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়ােজনীয়তা উপলব্ধি করে BCSWE নিয়মিত ভাবে সেমিনার, কনফারেন্স ও জার্নাল প্রকাশ করছে।

সুতরাং একথা অনস্বীকার্য যে বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে সমাজকর্ম শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.