২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের চতুর্থ সপ্তাহে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যবসায় উদ্যোগ বিষয়ের তৃতীয় এসাইনমেন্ট নেয়া হয়েছে পাঠ্য বইয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় অধ্যায়: ব্যবসায় উদ্যোগ ও উদ্যোক্তা এবং আত্মকর্মসংস্থান থেকে।এসএসসি ২০২৫ ব্যবসায় উদ্যোগ চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। উত্তর লেখার পারদর্শিতার ওপর নির্ভর করে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অনুযায়ী বিষয় শিক্ষকগণ সর্বোচ্চ ২০ নম্বর পর্যন্ত প্রদান করবেন।
চতুর্থ সপ্তাহে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ব্যবসায় উদ্যোগ বিষয় এর এসাইনমেন্ট সমাধান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা উদ্যোগ ও ব্যবসায় উদ্যোগের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবাে (২য় অধ্যায় ১ নং), আত্মকর্মসংস্থানের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবাে (৩য় অধ্যায় ১ নং), আত্মকর্মসংস্থান ও উদ্যোগের মধ্যে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করতে পারবাে (৩য় অধ্যায় ২ নং), ব্যবসায় উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য ও কার্যাবলী ব্যাখ্যা করতে পারবাে (২য় অধ্যায় ৪ নং);
নিচের ছবিতে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ব্যবসায় উদ্যোগ তৃতীয় এসাইনমেন্ট বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো
শ্রেণিঃ এসএসসি ২০২৫, বিভাগঃ ব্যবসায় শিক্ষা, বিষয়ঃ ব্যবসায় উদ্যোগ, অ্যাসাইনমেন্ট নং-০৩, অধ্যায় ও শিরোনামঃ দ্বিতীয় ও তৃতীয় অধ্যায়: ব্যবসায় উদ্যোগ ও উদ্যোক্তা এবং আত্মকর্মসংস্থান
অ্যাসাইনমেন্টঃ ব্যবসায় উদ্যোগ সৃষ্টিতে আত্মকর্মসংস্থানের ভূমিকা নিরূপণ
নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):
ক. ব্যবসায় উদ্যোগের ধারণা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করতে হবে।
খ. ব্যবসায় উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করতে হবে।
গ. উদাহরণসহ আত্মকর্মসংস্থানের ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে।
ঘ. আত্মকর্মসংস্থান ও উদ্যোগের মধ্যে সম্পর্ক যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করতে হবে।
ঙ. ব্যবসায় উদ্যোগের কার্যাবলী ব্যাখ্যা করতে হবে।
SSC ২০২৫ চতুর্থ সপ্তাহের ব্যবসায় উদ্যোগ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের চতুর্থ সপ্তাহে ব্যবসায় উদ্যোগ অ্যাসাইনমেন্ট পেপার এ উল্লেখিত নির্দেশনা ও মূল্যায়ন রুবিক্স সমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করেন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নমুনা উত্তর প্রস্তুত করে দেওয়া হল।
এসএসসি পরীক্ষার ২০২৫ সালের চতুর্থ সপ্তাহের ব্যবসায় উদ্যোগ বিষয়ে অ্যাসাইনমেন্ট এর নমুনা উত্তর অনুসরণ করে শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্টে দেওয়া প্রশ্নগুলোর যথাযথ উত্তর লিখতে পারবে এবং মূল্যায়নে সর্বোচ্চ নম্বর পাবে।
ব্যবসায় উদ্যোগ সৃষ্টিতে আত্মকর্মসংস্থানের ভূমিকা নিরূপণ
ক. ব্যবসায় উদ্যোগের ধারণা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা
উত্তরঃ ব্যবসায় উদ্যোগের ধারণাঃ একটি ব্যবসায় স্থাপনের ধারনা চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু করে ব্যবসায়টি স্থাপন ও সফলভাবে পরিচালনাই ব্যবসায় উদ্যোগ।
বিশদভাবে বলতে গেলে, ব্যবসায় উদ্যোগ বলতে বুঝায়, লাভবান হওয়ার আশায় লোকসানের সম্ভাবনা জেনেও ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়া ও সফলভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করা।
উদাহরণসরূপ বলা যায়- বিদেশ ফিরত জনাব সিয়াম ইসলাম চাকরির জন্য এদিক সেদিক ঘুরছিলেন। তিনি প্রায়ই মহাসড়ক সংলগ্ন বাজারে যাতায়াত করতেন। একদিন তিনি উপলব্ধি করলেন বাজারটি মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় এখানে প্রায়ই যানবাহনগুলো ছোটখাটো মেরামতের জন্য যাত্রা বিরতি করেন।
জনাব সিয়াম মেরামতের চাহিদা অনুধাবন করে নিজে জমানো অর্থ এবং কিছু অর্থ ধার করে মূলধন গঠন করে এবং একটি ওয়ার্কশপ স্থাপন করেন এবং যানবাহন মেরামতের দক্ষতা অর্জনের জন্য তিনি স্থানীয় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে এই বিষয় প্রশিক্ষণ নেন।
প্রথমদিকে তার তেমন আয় হয়নি কিন্তু কঠোর পরিশ্রম ও দক্ষ সেবা ও সততার জন্য তার ব্যবসার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে এবং আয় বৃদ্ধি পেতে থাকে। জনাব সিয়াম ইসলাম তার ইচ্ছা পূরনের জন্য ঝুঁকি নিয়েছেন এবং দৃঢ় মনোবল নিয়ে পরিশ্রম করেছেন তার এই কর্ম প্রচেষ্টাই তার ব্যবসায় উদ্যোগ।
খ. ব্যবসায় উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা;
উত্তরঃ ব্যবসায় উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য: ব্যবসায় উদ্যোগের ধারনা বিশ্লেষণ করলে যে সকল বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় নিচে তা দেওয়া হলো-
১) ব্যবসায় উদ্যোগের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ব্যবসায় উদ্যোগ মালিকের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অন্যদের জন্যও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেন।
২) নতুন সম্পদ সৃষ্টি করা। ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে যেমন মানব সম্পদ উন্নয়ন হয় তেমনি মূলধনও গঠন হয়।
৩) সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা। ব্যবসায় উদ্যোগ দেশের আয় বৃদ্ধি ও বেকার সমস্যার সমাধানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও অবদান রাখতে পারে।
৪) মুনাফার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা গ্রহণ করা। উদ্যোক্তাদের সমাজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করা।
গ. উদাহরণসহ আত্মকর্মসংস্থানের ধারণা;
উত্তরঃ আত্মকর্মসংস্থানের ধারণা: নিজস্ব বা ঋনকৃত স্বল্প সম্পদ ও মূলধন, নিজস্ব চিন্তাধারা, বুদ্ধি, মেধা শ্রম ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সীমিত ঝুঁকি গ্রহণ করে নিজ বা আত্নপ্রচেষ্টায় জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থা গ্রহন করাকে আত্নকর্মসংস্থান বলে। আত্মকর্মসংস্থান হচ্ছে মজুরি বা চাকরির বিকল্প পেশার অন্যতম উপাদান।
উদাহরণসরূপ বলা যায়- কবির ডিগ্রি পাশ করে চাকরি লাভে ব্যর্থ হয়েনিজ গ্রামে স্থানীয় যুব উন্নয়ন কার্যালয় থেকে মৎস্যচাষ ও হাঁসমুরগি পালনের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। তারপর নিজের জমানো টাকা এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ঋন নিয়ে বড় আকারের মৎস্য ও হাঁসমুরগির খামার গড়ে তুলেন।
এবং গ্রামের কয়েকজন বেকার যুবকেরও তিনি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। এইযে কবির নিজের দক্ষতা ও গুণাবলি দ্বারা নিজেই নিজের কর্মসংস্থান করেচেন এটাই আত্মকর্মসংস্থান।
ঘ. আত্মকর্মসংস্থান ও উদ্যোগের মধ্যে সম্পর্ক
উত্তরঃ আত্মকর্মসংস্থান ও উদ্যোগের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক বিদ্যমান-
নিজস্ব অথবা ঋন করা স্বল্প সম্পদ, নিজস্ব চিন্তা, মেধা, বুদ্ধিমত্তা, ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ন্যূনতম ঝুঁকি নিয়ে আত্মপ্রচেষ্টায় জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থাকে আত্মকর্মসংস্থান বলা হয়।
আর ব্যবসায় উদ্যোগ বলতে বুঝায় লাভবান হওয়ার আশায় লোকসানের সম্ভাবনা জেনেও ঝুঁকি নিয়ে শিল্প বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়া। আত্মকর্মসংস্থান ও উদ্যোগ উভয় ক্ষেত্রেই ঝুঁকি বিদ্যমান যা উভয়ের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক প্রকাশ করে।
ঙ. ব্যবসায় উদ্যোগের কার্যাবলী
উত্তরঃ ব্যবসায় উদ্যোগের কার্যাবলি: ব্যবসায় উদ্যোগের ধারনাগুলো বিশ্লেষণ করলে যে সকল কার্যাবলিগুলো লক্ষ্য করা যায় নিচে তা দেওয়া হলো-
১) এটি ব্যবসায় স্থাপনের কর্ম উদ্যোগ। ব্যবসায় স্থাপন সংক্রান্ত সকল কর্মকান্ড সফলভাবে পরিচালনা করতে ব্যবসায় উদ্যোগ সহায়তা করে।
২) ঝুঁকি আছে জেনেও লাভের আশায় ব্যবসায় পরিচালনা। ব্যবসায় উদ্যোগ সঠিকভাবে জুঁকি পরিমাপ করতে এবং এবং পরিমিত ঝুঁকি নিতে সহায়তা করে।
৩) ব্যবসায় উদ্যোগের ফলাফল হলো একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এর মানে হলো ব্যবসায় উদ্যোগ সম্পর্কে ধারণা কোনো চিন্তা ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়তা করে।
৪) ব্যবসায় উদ্যোগের অন্য একটি ফলাফল হলো একটি পণ্য বা সেবা।
৫) ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি সফলভাবে পরিচালনা করা।
৬) ব্যবসায় উদ্যোগ মালিকের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অন্যদের জন্যও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেন।
৭) ব্যবসায় উদ্যোগ দেশের আয় বৃদ্ধি ও বেকার সমস্যার সমাধানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও অবদান রাখতে পারে।
৮) ব্যবসায় উদ্যোগ উদ্যোক্তাদের সমাজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহন করতে অনুপ্রাণিত করে।