Logic Assignment

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত তৃতীয় সপ্তাহের এসাইনমেন্ট মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের নৈর্বাচনিক বিষয় যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয় পত্র তৃতীয় এসাইনমেন্ট হিসেবে পাঠ্য বইয়ের প্রথম অধ্যায় যৌক্তিক সংজ্ঞা এর মানুষ জ্ঞানী ও বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন প্রাণী যার পাখা নাই সংজ্ঞাটির সঠিকতা যাচাই সংক্রান্ত অ্যাসাইনমেন্ট করতে দেয়া হয়েছে।

সকল সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয় পত্র দ্বিতীয় এসাইনমেন্ট নেয়া হয়েছে পাঠ্য বইয়ের প্রথম অধ্যায় যৌক্তিক সংজ্ঞা থেকে।

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট যুক্তিবিদ্যা

সংক্ষিপ্ত সিলেবাস এর আলোকে শিক্ষার্থীরা যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের দ্বিতীয় এসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে গিয়ে যৌক্তিক সংজ্ঞা ব্যাখ্যা করতে পারবে, যৌগিক সংখ্যার প্রাসঙ্গিকতা মূল্যায়ন করতে পারবেন, সংজ্ঞার নিয়মাবলী বর্ণনা করতে পারবে, সংখ্যার নিয়ম লঙ্ঘনজনিত অনুপপত্তি সমূহ মূল্যায়ন করতে পারবেন, যথার্থ সংখ্যা প্রদানের সমর্থ হবেন, সংখ্যার অনুপপত্তি জনিত সমস্যা সমাধান করতে পারবেন;

নিচের ছবিতে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মানবিক বিভাগের যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয় পত্র দ্বিতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো

https://i.imgur.com/5HvoHXK.jpg

বিষয়ঃ যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র, অ্যাসাইনমেন্ট নং-০২, অধ্যায় ও শিরোনামঃ প্রথম অধ্যায় (যৌক্তিক সংজ্ঞা)

অ্যাসাইনমেন্টঃ মানুষ জ্ঞানী ও বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন প্রাণী যার পাখা নাই – সংজ্ঞাটির সঠিকটা যাচাই

নির্দেশনা (ধাপ/পরিধি/সংকেত):

ক. সংখ্যাটিতে কোন নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে তা সংক্ষেপে লিখ;

খ. নিয়ম লঙ্ঘনের ফলে কি কি অনুপপত্তি সৃষ্টি হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো;

গ. মানুষের সঠিক সংজ্ঞা দিয়ে তার প্রক্রিয়াটি লেখ;

ঘ. সংজ্ঞার নিয়ম অনুসারে যেকোনো একটি (যেমন- পাখি, পশু, লেখক) ধারনার সংজ্ঞা দাও এবং যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করো;

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ তৃতীয় সপ্তাহের যুক্তিবিদ্যা অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের তৃতীয় সপ্তাহের মানবিক বিভাগের নৈর্বাচনিক বিষয় যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয় পত্র দ্বিতীয় এসাইনমেন্ট এ দেওয়া নির্দেশনায় প্রশ্নসমূহ ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন রুবিকস এর আলোকে সমাধান করে দেয়া হলো।

[উত্তর শুরু]

মানুষ জ্ঞানী ও বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন প্রাণী যার পাখা নাই

যৌক্তিক সংজ্ঞার নিয়ম অনুসারে কোনাে পদের সংজ্ঞা দিতে হলে সেই পদটির সম্পূর্ণ জাত্যৰ্থ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে, কোনােক্রমেই জ্ঞাতার্থের অতিরিক্ত কিছু বা জ্ঞাতার্থের অংশবিশেষ উল্লেখ করা যাবে না। অর্থাৎ এ নিয়ম অনুসারে, কোনাে পদের সংজ্ঞায়নের সময় শুধুমাত্র এর আসন্নতম জাতি ও বিভেদক লক্ষণ উল্লেখ করতে হবে, এর বেশিও নয় কমও নয়।

ক. সংখ্যাটিতে কোন নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে তা সংক্ষেপে লিখ;

ক এর উত্তর

“মানুষ জ্ঞানী ও বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন প্রাণী যার পাখা নাই’ সংজ্ঞাটিতে যৌক্তিক সংজ্ঞার দ্বিতীয় নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে।

দ্বিতীয় নিয়মঃ সংজ্ঞেয় পদের ব্যক্ত্যর্থ সংজ্ঞায় বর্ণিত পদের ব্যক্তৰ্থের সমান হতে হবে, এর কম বা বেশি হলে চলবে না। যেমন, মানুষের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে যখন বলা হয়, মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী’ তখন মানুষ’-এর ব্যক্তৰ্থ এবং ‘বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী’-এর ব্যক্তৰ্থ পরস্পর সমান। তাই সংজ্ঞাটি যথার্থ। এ নিয়মটি লঙ্ঘন করলে যে সকল যৌক্তিক ভ্রান্তি বা অনুপপত্তি ঘটে সেগুলাে নিম্নরূপ:

(i) অব্যাপক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি (Fallacy of Too Narrow Definition)

(ii) অতি ব্যাপক বা অসম্পূর্ণ সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি (Fallacy of Too Wide or Incomplete Definition)

খ. নিয়ম লঙ্ঘনের ফলে কি কি অনুপপত্তি সৃষ্টি হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো;

খ এর উত্তর

“মানুষ জ্ঞানী ও বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন প্রাণী যার পাখা নাই’ সংজ্ঞাটিতে যৌক্তিক সংজ্ঞার দ্বিতীয় নিয়ম লঙ্ঘন এর ফলে অতি ব্যাপক বা অসম্পূর্ণ সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি (Fallacy of Too Wide or Incomplete Definition) সৃষ্টি হয়েছে।

ব্যাখ্যাঃ অতি ব্যাপক বা অসম্পূর্ণ সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি (Fallacy of Too Wide or Incomplete Definition) : কোনাে পদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে যদি জাত্যর্থের অংশবিশেষ উল্লেখ করা হয় তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে অতি ব্যাপক বা অসম্পূর্ণ সংজ্ঞা (Fallacy of too Wide or incomplete Definition) বলে।

যেমন, “মানুষ জ্ঞানী ও বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন প্রাণী যার পাখা নাই’ ’-মানুষের এ সংজ্ঞাটি অতি ব্যাপক বা অসম্পূর্ণ সংজ্ঞা দোষে দুষ্ট। কারণ এখানে মানুষ’ পদটির সংজ্ঞায় মানুষ কী ধরনের প্রাণী তা উল্লেখ করা হয়নি। ফলে সংজ্ঞাটি অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে এবং এতে অতি ব্যাপক অনুপপত্তি ঘটেছে।

অব্যাপক সংজ্ঞা অনুপপত্তি (Fallacy of Too Narrow Definition):

মানুষ জ্ঞানী ও বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন প্রাণী যার পাখা নাই’ যৌক্তিক সংজ্ঞার নিয়ম অনুসারে কোনাে পদের সংজ্ঞা দিতে হলে সেই পদটির সম্পূর্ণ জাত্যৰ্থ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। অর্থাৎ এ নিয়ম অনুসারে, কোনাে পদের সংজ্ঞায়নের সময় শুধুমাত্র এর আসন্নতম জাতি ও বিভেদক লক্ষণ উল্লেখ করতে হবে, এর বেশিও নয় কমও নয়। কিন্তু এ নিয়ম লঙ্ঘন করে সংজ্ঞায় যদি জাত্যর্থের অতিরিক্ত কোনাে গুণের উল্লেখ করা হয় এবং সেই অতিরিক্ত গুণটি যদি ‘বিচ্ছেদ্য অবান্তরলক্ষণ হয়, তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে অব্যাপক সংজ্ঞা অনুপপত্তি (Fallacy of Too Narrow Definition) বলে।

এক্ষেত্রে মানুষ পদের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যে, ‘মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী যার পাখা নাই’ এখানে মানুষ’ পদটির সংজ্ঞায় এর জাত্যর্থের অতিরিক্ত একটি গুণ ‘পাখা’ উল্লেখ করা হয়েছে এবং সেই অতিরিক্ত গুণটি হলাে এর ‘বিচ্ছেদ্য অবান্তরলক্ষণ’। ফলে এ সংজ্ঞাটি মানুষের ক্ষেত্রে প্রযােজ্য নয়। তাই মানুষের এ সংজ্ঞাটিতে অব্যাপক সংজ্ঞা অনুপপত্তি ঘটেছে।

অব্যাপক সংজ্ঞা অনুপপত্তির আরও দৃষ্টান্ত : ১। ছাগল হলাে কালাে রং বিশিষ্ট প্রাণী। ২। যুক্তিবিদ্যা হচ্ছে একটি মানসিক বিজ্ঞান। ৩। বক হয় সাদা প্রাণী।

গ. মানুষের সঠিক সংজ্ঞা দিয়ে তার প্রক্রিয়াটি লেখ;

এর উত্তর

মানুষের সঠিক সংজ্ঞাঃ মানুষ জ্ঞানী ও বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন প্রাণী

জাত্যর্থভিত্তিক সংজ্ঞা (Connotative Definition) : সংজ্ঞায়নের যে পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট যে কোনাে জাতিবাচক পদকে এর পরিপূর্ণ জাত্যর্থের সুস্পষ্ট উল্লেখের মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা হয় তাকে জাত্যর্থভিত্তিক সংজ্ঞা বলা হয় । আর কোনাে পদের জাত্যৰ্থ এর আসন্নতম জাতি ও বিভেদক লক্ষণ নিয়ে গঠিত।

তাই এ পদ্ধতি অনুযায়ী কোনাে পদের আসন্নতম জাতি ও বিভেদক লক্ষণ উল্লেখ করেই সেই পদটিকে সংজ্ঞায়িত করা হয়। আসন্নতম জাতি একটি পদ কোন্ শ্রেণির অন্তর্ভূক্ত তা নির্দেশ করে এবং বিভেদক লক্ষণ পদটিকে এর সমজাতীয় অন্যান্য উপজাতি থেকে পৃথক করে।

যেমন, ‘মানুষ’ পদটির সংজ্ঞায় বলা হয়, মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী’। অর্থাৎ এখানে মানুষ পদটির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে এর আসন্নতম জাতি ‘প্রাণী এবং বিভেদক লক্ষণ বুদ্ধিবৃত্তি’ উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আসন্নতম জাতি ‘প্রাণী’ শব্দটি দ্বারা মানুষকে প্রাণী শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং বুদ্ধিবৃত্তি’ নামক মানুষের বিভেদক লক্ষণ দ্বারা মানুষকে তার সমজাতীয় অন্যান্য উপজাতি যেমন- গরু, ঘােরা, মহিষ, ছাগল, বিড়াল ইত্যাদি থেকে পৃথক করা হয়েছে।

এর ফলে মানুষের প্রকৃত অর্থ সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট হয়েছে। আর এভাবে পদের অর্থ সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট করাকেই বলা হয় যৌক্তিক সংজ্ঞা। সংজ্ঞায়নের এ পদ্ধতিকে আধুনিক যুক্তিবিদদের অনেকেই একটি সহজবােধ্য ও গ্রহনযােগ্য পদ্ধতি বলে মনে করেন।

ঘ. সংজ্ঞার নিয়ম অনুসারে যেকোনো একটি (যেমন- পাখি, পশু, লেখক) ধারনার সংজ্ঞা দাও এবং যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করো;

এর উত্তর

সংজ্ঞার নিয়মাবলিঃ (Rules of Definition)

আমরা জানি, কোনাে পদের পূর্ণ জাত্যর্থের সুস্পষ্ট বিবৃতির মাধ্যমে ঐ পদের সংজ্ঞা প্রদান করা হয়। আর কোনাে পদের সংজ্ঞা প্রদান করতে গিয়ে যাতে এর জাত্যৰ্থ সুস্পষ্টভাবে ও শুদ্ধরূপে উল্লেখ করা যায় সে উদ্দেশ্যে যুক্তিবিদগণ কতগুলাে নিয়ম বা বিধি প্রণয়ন করেছেন।

এ নিয়ম বা বিধিসমূহই যুক্তিবিদ্যার আলােচ্য বিষয়ে যৌক্তিক সংজ্ঞা হিসেবে পরিচিত। যৌক্তিক সংজ্ঞায়নে এ নিয়ম বা বিধিসমূহ অনুসরণ না করলে যৌক্তিক ভ্রান্তি বা অনুপপত্তি ঘটে। নিম্নে এ নিয়মগুলাে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলাে :

প্রথম নিয়মঃ কোনাে পদের সংজ্ঞা দিতে হলে সেই পদটির সম্পূর্ণ জাত্যৰ্থ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে, কোনােক্রমেই জাত্যর্থের অতিরিক্ত কিছু বা জাত্যর্থের অংশবিশেষ উল্লেখ করা যাবে না। অর্থাৎ এ নিয়ম অনুসারে, কোনাে পদের সংজ্ঞায়নের সময় শুধুমাত্র এর আসন্নতম জাতি ও বিভেদক লক্ষণ উল্লেখ করতে হবে, এর বেশিও নয় কমও নয়। এ নিয়মটি লঙ্ঘন করলে যে সকল যৌক্তিক ভ্রান্তি বা অনুপপত্তি ঘটে সেগুলাে নিম্নরূপ :

(ক) বাহুল্য সংজ্ঞা (Redundant Definition) : সংজ্ঞায় যদি জাত্যর্থের অতিরিক্ত কোনাে গুণের উল্লেখ করা হয় এবং সেই অতিরিক্ত গুণটি যদি ‘উপলক্ষণ হয়, তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে বাহুল্য সংজ্ঞা (Redundant Definition) বলে । যেমন, ‘মানুষ হয় এমন প্রাণী যার বিচার ক্ষমতা আছে’-মানুষের এ সংজ্ঞাটি বাহুল্য দোষে দুষ্ট। কারণ এখানে ‘মানুষ’ পদটির সংজ্ঞায় ‘বিচার ক্ষমতা গুণটি উল্লেখ করা হয়েছে যা এর একটি উপলক্ষণ।

(খ) অতি ব্যাপক বা অসম্পূর্ণ সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি (Fallacy of Too Wide or Incomplete Definition) : কোনাে পদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে যদি জাত্যর্থের অংশবিশেষ উল্লেখ করা হয় তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে অতি ব্যাপক বা অসম্পূর্ণ সংজ্ঞা (Fallacy of Too Wide or Incomplete Definition) বলে।

সাধারণত একটি পদ দ্বারা যে বিষয় বা বস্তুসমূহকে নির্দেশ করা হয় সংজ্ঞায়নের মাধ্যমে যদি সে পদের ব্যপকতা তার চেয়ে বেড়ে যায় তখন পদটি অতিব্যাপক বলে ধরা হয়। যেমন, ‘মানুষ হয় এক শ্রেণীর প্রাণী’ -মানুষের এ সংজ্ঞাটি অতি ব্যাপক বা অসম্পূর্ণ সংজ্ঞা দোষে দুষ্ট।

কারণ এখানে মানুষ’ পদটির সংজ্ঞায় মানুষ কী ধরনের প্রাণী তা উল্লেখ না করায় অন্যান্য প্রাণী থেকে মানুষকে পৃথক করা যায়নি। অর্থাৎ এখানে মানুষ পদের সংজ্ঞায় অন্যান্য প্রাণীও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ফলে সংজ্ঞাটি অসম্পূর্ণ এবং এতে অতি ব্যাপক অনুপপত্তি ঘটেছে।

(গ) আপতিক বা অবান্তর লক্ষণজনিত সংজ্ঞা (Accidental Definition) : সংজ্ঞায় যদি জাত্যর্থের অতিরিক্ত কোনাে গুণের উল্লেখ করা হয় এবং সেই অতিরিক্ত গুণটি যদি ‘অবান্তর লক্ষণ হয়, তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে আপতিক বা অবান্তর লক্ষণজনিত সংজ্ঞা (Accidental Definition) বলে। যেমন, ‘মানুষ হয় এক শ্রেণীর বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন হাস্যপ্রিয় প্রাণী মানুষের এ সংজ্ঞাটি আপতিক বা অবান্তর লক্ষণজনিত সংজ্ঞা দোষে দুষ্ট। কারণ এখানে মানুষ’ পদটির সংজ্ঞায় ‘হাস্যপ্রিয়তা’ গুণটি উল্লেখ করা হয়েছে যা এর একটি অবান্তর লক্ষণ।

(ঘ) অব্যাপক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি (Fallacy of Too Narrow Definition) : সংজ্ঞায় যদি জাত্যর্থের অতিরিক্ত কোনাে গুণের উল্লেখ করা হয় এবং সেই অতিরিক্ত গুণটি যদি ‘বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ হয়, তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে অব্যাপক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি (Fallacy of Too Narrow Definition) বলে।

সাধারণত একটি পদ দ্বারা যে বিষয় বা বস্তুসমূহকে নির্দেশ করা হয় সংজ্ঞায়নের মাধ্যমে যদি সে পদের ব্যপকতা তার চেয়ে কমে যায় তখন পদটি অব্যাপক বলে ধরা হয়। যেমন, ‘মানুষ হয় এক শ্রেণির সভ্য বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী মানুষের এ সংজ্ঞাটি অব্যাপক সংজ্ঞা দোষে দুষ্ট।

কারণ এখানে মানুষ’ পদটির সংজ্ঞায় ‘সভ্য গুণটি উল্লেখ করা হয়েছে যা এর একটি বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ। আর সভ্য গুণটি উল্লেখ করায় এখানে মানুষ পদের সম্পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ প্রকাশিত হয়নি বলে এ সংজ্ঞাটিতে অব্যাপক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি ঘটেছে।

দ্বিতীয় নিয়মঃ সংজ্ঞেয় পদের ব্যক্ত্যর্থ সংজ্ঞায় বর্ণিত পদের ব্যক্তৰ্থের সমান হতে হবে, এর কম বা বেশি হলে চলবে না।

যেমন, মানুষের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে যখন বলা হয়, মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী তখন ‘মানুষ’-এর ব্যর্থ এবং ‘বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী’-এর ব্যর্থ পরস্পর সমান। তাই সংজ্ঞাটি যথার্থ। এ নিয়মটি লঙ্ঘন করলে যে সকল যৌক্তিক ভ্রান্তি বা অনুপপত্তি ঘটে সেগুলাে নিম্নরূপ :

(ক) অব্যাপক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি (Fallacy of Too Narrow Definition) : সংজ্ঞায় যদি জাত্যর্থের অতিরিক্ত কোনাে গুণের উল্লেখ করা হয় এবং সেই অতিরিক্ত গুণটি যদি ‘বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ হয়, তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে অব্যাপক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি (Fallacy of Too Narrow Definition) বলে। যেমন, ‘মানুষ হয় এক শ্রেণির সভ্য বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন প্রাণী’-মানুষের এ সংজ্ঞাটি অব্যাপক সংজ্ঞা দোষে দুষ্ট। কারণ এখানে মানুষ’ পদটির সংজ্ঞায় ‘সভ্য গুণটি উল্লেখ করা হয়েছে যা এর একটি বিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ ।

(খ) অতি ব্যাপক বা অসম্পূর্ণ সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি (Fallacy of Too Wide or Incomplete Definition) : কোনাে পদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে যদি জাত্যর্থের অংশবিশেষ উল্লেখ করা হয় তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে অতি ব্যাপক বা অসম্পূর্ণ সংজ্ঞা (Fallacy of too Wide or incomplete Definition) বলে ।

যেমন, ‘মানুষ হয় এক শ্রেণির প্রাণী’-মানুষের এ সংজ্ঞাটি অতি ব্যাপক বা অসম্পূর্ণ সংজ্ঞা দোষে দুষ্ট। কারণ এখানে মানুষ’ পদটির সংজ্ঞায় মানুষ কী ধরনের প্রাণী তা উল্লেখ করা হয়নি। ফলে সংজ্ঞাটি অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে এবং এতে অতি ব্যাপক অনুপপত্তি ঘটেছে।

তৃতীয় নিয়মঃ যে পদের সংজ্ঞা দেয়া হবে সংজ্ঞায় সে পদের সমার্থক পদ বা সংজ্ঞেয় পদ ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ একই পদের পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে কোনাে পদের সংজ্ঞা নির্ধারণ করা যাবে না। এ নিয়মটি লঙ্ঘন করলে চক্রক সংজ্ঞা অনুপপত্তি (Fallacy of Circular or Tautologous Definition) ঘটে।

চক্রক সংজ্ঞা অনুপপত্তি (Fallacy of Circular or Tautologous Definition) : কোনাে পদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে যদি সে পদের সমার্থক পদ বা সংজ্ঞেয় পদ ব্যবহার করা হয় তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে চক্রক সংজ্ঞা অনুপপত্তি (Fallacy of Circular or Tautologous Definition) বলে।

যেমন, ‘মানুষ হয় মানব সন্তান’-মানুষের এ সংজ্ঞাটি চক্রক সংজ্ঞা দোষে দুষ্ট। কারণ এখানে ‘মানুষ’ পদটির সংজ্ঞায় ‘মানব সন্তান’-এ সমার্থক পদ উল্লেখ করা হয়েছে ।

চতুর্থ নিয়ম : যে পদের সংজ্ঞা দেয়া হবে সংজ্ঞাটিকে সেই পদ অপেক্ষা স্পষ্ট ও সহজবােধ্য হতে হবে এবং সংজ্ঞাটিকে কিছুতেই কোনাে রূপকের মাধ্যমে বা দুর্বোধ্য ভাষায় ব্যক্ত করা যাবে না। অর্থাৎ সংজ্ঞায় সর্বদা সহজ ও সরল ভাষা ব্যবহার করতে হয় এবং রূপক বা আলঙ্কারিক শব্দ কিংবা জটিল ভাষা পরিহার করতে হয়।

এ নিয়মটি লঙ্ঘন করলে যে সকল যৌক্তিক ভ্রান্তি বা অনুপপত্তি ঘটে সেগুলাে নিম্নরূপ:

(ক) রূপক বা আলঙ্কারিক সংজ্ঞা অনুপপত্তি (Fallacy of Figurative Definition) : কোনাে পদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে যদি রূপক বা আলঙ্কারিক শব্দ ব্যবহার করা হয় তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে রূপক বা আলঙ্কারিক সংজ্ঞা অনুপপত্তি (Fallacy of Figurative Definition) বলে।

যেমন, ‘উট হলাে মরুভূমির জাহাজ’ অথবা, ‘সিংহ হয় পশুর ‘রাজা’ উল্লিখিত বাক্য দু’টিতে ‘মরুভূমির জাহাজ’ এবং পশুর রাজা’ শব্দগুলি রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে এক্ষেত্রে রূপক বা আলঙ্কারিক সংজ্ঞা অনুপপত্তি ঘটেছে।

(খ) দুর্বোধ্য সংজ্ঞা অনুপপত্তি (Fallacy of Obscure Definition) : কোনাে পদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে যদি কঠিন বা দুর্বোধ্য শব্দ এমনভাবে ব্যবহার করা হয় যে তা বুঝতে পারা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায় তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে দুর্বোধ্য সংজ্ঞা অনুপপত্তি (Fallacy of Obscure Definition) বলে ।

যেমন, “শিক্ষা হচ্ছে শারীরবৃত্তিক ও মনােবৃত্তিক উৎকর্ষ সাধনের একমাত্র মাধ্যম এ সংজ্ঞায় কঠিন বা দুর্বোধ্য শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে এক্ষেত্রে দুর্বোধ্য সংজ্ঞা অনুপপত্তি ঘটেছে।

পঞ্চম নিয়ম : যেক্ষেত্রে সদর্থক সংজ্ঞা প্রদান সম্ভব, সেক্ষেত্রে নঞর্থক সংজ্ঞা দেয়া যাবে না। অর্থাৎ সংজ্ঞেয় পদ নঞর্থক হলে সংজ্ঞা কখনও নঞর্থক হবে না। কারণ সংজ্ঞার মূল উদ্দেশ্য হলাে কোনাে পদের অর্থ স্পষ্ট করা বা একটি পদ আসলে কী তা নির্দেশ করা।

অর্থাৎ পদটি কী নয় তা নির্দেশ করা সংজ্ঞার কাজ নয়। এ নিয়মটি লঙ্ঘন করলে যে যৌক্তিক ভ্রান্তি বা অনুপপত্তি ঘটে তা নিম্নরূপ : ausera spelararao garfo (Fallacy of Negative Definition) কোনাে পদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে যদি নেতিবাচক শব্দ ব্যবহার করা হয় তাহলে সংজ্ঞায়নে যে ত্রুটি দেখা দেয় তাকে নঞর্থক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি (Fallacy of Negative Definition) বলে।

যেমন, ‘পাপ নয় পূণ্য’ এ সংজ্ঞায় নেতিবাচক শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। তাই এতে নঞর্থক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি ঘটেছে।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.