Business Organization Assignment

এইচএসসি ২০২৪ সেশনের ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশা করছি সকলেই সুস্থ আছো। ২২ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ষষ্ঠ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এরই সূত্র ধরে তোমাদের মধ্যে অনেকেই এইচএসসি ২০২৪ ৬ষ্ঠ সপ্তাহের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্টের মানসম্মত ও নির্ভুল উত্তর খুঁজছো। তোমাদের এই অন্বেষণের কথা মাথায় রেখেই আজকের প্রতিবেদনটি তৈরি করেছি। আজকের আলোচনায় থাকছে এইচএসসি ২০২৪ ৬ষ্ঠ সপ্তাহের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর। আলোচনার বিষয়বস্তু- দেশের অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে শিল্প, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ সেবার অবদান বিশ্লেষণ।

আমরা এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ এর ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র এসাইনমেন্টে দেওয়া নির্দেশনা সমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করে প্রশ্নে উল্লেখিত নির্দেশনাসমূহ ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব, যাতে তোমাদের অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে সুবিধা হয়।

এইচএসসি ২০২৪ ৬ষ্ঠ সপ্তাহ ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট

https://i.imgur.com/RoJS5uC.jpg

এইচএসসি ২০২৪ ৬ষ্ঠ সপ্তাহ ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অ্যাসাইনমেন্ট

অ্যাসাইনমেন্ট: দেশের অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে শিল্প, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ সেবার অবদান বিশ্লেষণ;

নির্দেশনা (সংকেত ধাপ পরিধি):

  • ব্যবসায়ের ধারণা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করতে হবে
  • পাঠ্যপুস্তকে বর্ণিত ব্যবসায়ের আওতা ও কার্যাবলি ব্যাখ্যা করতে হবে।
  • ব্যবসায়ের অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ করে সেটি কীভাবে অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অবদান রাখে তা ব্যাখ্যা করতে হবে।

এইচএসসি ২০২৪ ৬ষ্ঠ সপ্তাহের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর

Management is getting thing done by others অর্থাৎ অন্যকে দিয়ে করানোর পদ্ধতিই হচ্ছে ব্যবস্থাপনা। ইহার কাজ অন্যের দ্বারা কার্য সম্পাদন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় মানুষের মস্তিস্ক (ব্রন)। মস্তিস্ক যেমন উহার উদ্দেশ্য সাধনের জন্য দেহকে চালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে, ব্যবস্থাপনা ও সে প্রকার কারবারকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে উহার উদ্দেশ্য সাধন করে থাকে।

ক) ব্যবসার ধারণা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা

সাধারণত ব্যবসায় বলতে জীবিকা নির্বাহ ও মুনাফার আশায় যে কাজগুলো করে থাকে সেগুলোই ব্যবসায়ের অন্তর্ভুক্ত। পরিবারের সদস্যদের জন্য খাদ্য উত্পাদন করা, হাঁস মুরগি পালন করা, সবজি চাষ করাকে ব্যবসায় বলা যায় না। কিন্তু যখন কৃষক মুনাফার আশায় ধান চাষ করে বা সবজি ফলায় তা ব্যবসায় বলে গণ্য হবে। পানের দোকানদার ফেরিওয়ালা হতে শুরু করে বৃহৎ আমদানিকারক রপ্তানিকারক শিল্প মালিক পর্যন্ত সকলেই জীবিকা নির্বাহ তবে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত সকল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যবসা বলে গন্য হবে যদি সেগুলো দেশের আইনে বৈধ ও সঠিক উপায় পরিচালিত হয়।

ব্যবসায়ে আরও কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা একে অন্য সব পেশায় থেকে আলাদা করেছে | পান-বিড়ির দোকানদার,ফেরিওয়ালা হতে শুরু করে বৃহৎ আমদানীকারক, রপ্তানিকারক , শিল্পমালিক পর্যন্তসকলেই জীবিকা নির্বাহ ও উন্নয়নের উদ্দেশ্যে মুনাফা অর্জনের জন্য উৎপাদন ও বন্টণ সংক্রান্ত কাজে জড়িত থাকে। তাই এদের সকলের কাজই ব্যবসায় হিসেবে গন্য। সাধারন অর্থে ব্যবসায় হলো ব্যবসায় হলো মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে কম মূল্যে পন্যসামগ্রী ক্রয় করে বেশি মূল্যে তা অন্যের কাছেবিক্রয় করা। সুতরাং, ব্যবসায় হলো কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টার সমষ্টি যার উদ্দেশ্য হলো একদিকে মুনাফা অর্জনের মাধ্যমে প্রচেষ্টাকারীর নিজস্ব অভাব পূরণ ও উন্নয়ন সাধন এবং অন্যদিকে জনগনের অভাব মোচন বা সেবা প্রদান করা।

(খ) ব্যবসায় আওতা কার্যাবলি ব্যাখ্যা

ব্যবসায় , বাণিজ্য ও পন্য বিনিময় সাধারণভাবে একই রুপ মনে হলেও ব্যবসায় শব্দটির অর্থ, আওতা ও পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক। মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পন্যদ্রব্য ও সেবাকর্ম উৎপাদন, বন্টন ও এর সহায়ক যাবতীয় কাজের সমষ্টিকে ব্যবসায় বলে। ব্যবসায় ক্ষেত্রে উৎপাদন সংক্রান্ত কাজ বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। বন্টনের ক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় বা পন্য বিনিময় মুখ্য কাজ হিসেবে গন্য। অন্যান্য কাজ পন্য বিনিময়ের সহায়ক কার্য়াবলী হিসেবে বিবেচিত হয় । ব্যবসায়কে শিল্প এবং বানিজ্য সমষ্টি গন্য করা হলেও সমাজে প্রত্যক্ষ সেবা ক্রয়-বিক্রয় বর্তমানকালে গুরুত্বপূর্ন আরেকটি অর্থনৈতিক কার্য হিসেবে বিবেচিত।

সাধারনভাবে পেশা হিসেবে গন্য হলেও এ সকল স্বাধীন পেশাজীবিদের কাজ ব্যবসায় হিসেবে গন্য হতে পারে । সুতরাং ব্যবসায়ের আওতা বা পরিধি নিমোক্ত রেখা চিত্রের সাহায্যে উপস্থাপন করা হল:

https://i.imgur.com/pTV6XvH.png

ব্যবসায়ের আওতা বা পরিধি

শিল্প :

শিল্পকে উৎপাদনের বাহন হিসেবে বিবেচনা করা হয় । যে প্রক্রিয়ায় প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ, কাচামালে রূপদান এবং প্রক্রিয়াজাতকরনের মাধ্যমে কাচামালকে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্যে পরিণত করা হয় তাকে শিল্প বলা হয়। শিল্পকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়।

  • প্রজনন শিল্পে উৎপাদিত সামগ্রী পুনরায় সৃষ্টি বা উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয় । যেমন-র্নাসারী,হ্যাচারি ইত্যাদি।
  • নিষ্কাশন শিল্পে মাধ্যমে ভূগর্ভ, পানি বা বায়ু হতে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরন করা হয়। যেমন –খনিজ শিল্প।
  • নির্মাণ শিল্পের মাধ্যমে রাস্তাঘাট, সেতু ইত্যাদি নির্মান করা হয়।
  • উৎপাদন শিল্পে শ্রম ও যন্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে কাঁচামালকে প্রক্রিয়াজাত করে চূড়ান্ত পন্যে রূপান্তর করা হয়। যেমন – বস্ত্র শিল্প
  • সেবা শিল্প বিভিন্ন প্রকার সেবা প্রদানের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রা সহজ ও আরামদায়ক করে। যেমন –বিদ্যুৎও গ্যাস উৎপাদন ও বিতরণ, ব্যাংকিং ও স্বাস্থ্য সেবা ইত্যাদি ।

বানিজ্য :

বানিজ্যকে ব্যবসায়ের পন্য সেবা সামগ্রী বন্টনকারী শাখা হিসেবে চিহ্নিত করে। ব্যবসায় বা শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল উৎপাদকের নিকট পৌছানো কিংবা শিল্পে উৎপাদিত পন্য বা সেবা সামগ্রী ভোক্তাদের নিকট পৌছানোর সকল কার্যাবলিকে বানিজ্য বলে। পণ্য-দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় কার্য যথাযথ ভাবে সমাধানের ক্ষেত্রে অর্থগত, ঝুঁকিগত , স্থানগত , কালগত ও তথ্য গত বাধা বা সমস্যা দেখা দেয়। এ সকল বাধা দুরীকরনে বানিজ্যের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন পরিবহন পরিবহন ,গুদামজাতকরন,ব্যাংকিংবিমা বিপনন ও বিজ্ঞাপন ইত্যাদির সহযোগিতার প্রয়োজন হয়।

ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের বাধা বানিজ্যের উপাদান ভূমিকা
স্বত্বগত পন্য বিনিময় মালিকানাসংক্রান্ত বাধা দুর করে
স্থানগত পরিবহন স্থানগত বাধা দুর করে
সময়গত গুদামজাতকরন সময়গত বাধা দুর করন
অর্থগত ব্যাংকিং অর্থসংক্রান্ত বাধা দুর করে
ঝুঁকিগত বিমা ঝুঁকিসংক্রাস্ত বাধা দুর করে
তথ্যগত বিজ্ঞাপন তথ্য প্রচার সংক্রান্ত বাধা দুর করে
বানিজ্য

প্রত্যক্ষ সেবা :

অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে স্বাধীন পেশায় নিয়োজিত ডাক্তার, উকিল, প্রকৌশলী প্রভৃতি পেশাজীবীরা বিভিন্ন রকম সেবা অর্থের বিনিময়ে প্রদান করে থাকেন। এসকল সেবাকর্ম বা বৃত্তি প্রত্যক্ষ সেবা হিসেবে পরিচিত। যেমন- ডাক্তারী ক্লিনিক, আইন চেম্বার, প্রকৌশলী ফার্ম, অডিট ফার্ম ইত্যাদি। প্রত্যক্ষ সেবা আধুনিক ব্যবসায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা।

(গ) ব্যবসায়ের কার্যাবলিগুলো নিম্নরূপ

  • ১.উৎপাদন
  • ২.ক্রয়
  • ৩.বিক্রয়
  • ৪.অর্থসংস্থান
  • ৫.ঝুঁকি গ্রহন
  • ৬.পরিবহন
  • ৭.মজুতকরন
  • ৮.গ্রাহক সেবা প্রদান
  • ৯.বাজারজাতকরন প্রসার
  • ১০.বাজার গবেষনা
  • ১১.হিসাবরক্ষন
  • ১২.কর্মী সংক্রান্ত কাজ
  • ১৩.অফিস সংক্রান্ত কাজ

উৎপাদন : উৎপাদন ব্যবসায়ের মূখ্য কাজ বিক্রয়ের জন্য পন্য বা সেবা প্রস্তুত কার্য বা নতুন উপযোগ সৃষ্টিকে উৎপাদন বলে।বিভিন্ন ধরনের শিল্পের কাজে কিছুটা বিভিন্ন থাকলেও এরূপ কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন, কাচামাল , ইত্যাদি দরকার হয়।

ক্রয় : ব্যবসার প্রকৃতির যেমনই হোক না কেন সেখানে কমবেশি কাঁচামাল উপায়-উপকরণ বাপন দ্রব্যাদি করার প্রয়োজন পড়ে। তাই ক্রয় কার্য ব্যবসায় একটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

দেশের অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে শিল্প, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ সেবার অবদান বিশ্লেষণ

বিক্রয় : সব ধরনের ব্যবসায় ক্ষেত্রে বিক্রয় একটা গুরুত্বপূর্ণ কার্য। বিক্রয়ের মাধ্যমে পন্যের স্বত্ব ক্রেতার নিকট হস্তান্তরিত হয়। এজন্য পণ্য বা সেবার মূল্য নির্ধারণ বিক্রয় শতাব্দীর নির্দিষ্টকরণ, পণ্যের মান নির্ধারণ ও বিভাজন মোড়কীকরণ ইত্যাদি কাজ করতে হয়।

আত্ম সংস্থান : ব্যবসায় যেকোনো ধরনের ই হোক না কেন তাতে প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থানের প্রয়োজন পড়ে। বৃহদায়তন ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনায় প্রচুর পুঁজির প্রয়োজন হয় ।

ঝুঁকি গ্রহণ : ব্যবসায়ের সাথে যোগে ও অনিশ্চয়তা জড়িত।নানান ধরনের বিপদ আপদ ব্যবসায় ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে। এসকল জুবি কমানোর জন্য ব্যবসায়ীগণ নানান ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সম্ভাব্য বীমার আশ্রয় গ্রহণ করেন।

পরিবহন : বিভিন্ন উৎস থেকে কাঁচামাল বাপন সামগ্রী সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠান নিয়ে আসা এবং উৎপাদিত পণ্য ক্রেতা সাধারণের নিকট পৌঁছে দেয়া হোক বর্তমান বৃহদায়তন ব্যবসায় একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এজন্য অনেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলে।

মজুতকরণ : উৎপাদিত বা ক্রয় কৃত পণ্য বিক্রয় হতে কিছুটা সময় নেয়। মৌসুমী দ্রব্য উৎপাদনে সংগ্রহের পর অনেকদিন মজবুত করে রাখার প্রয়োজন পড়ে। তাই এরূপ সংরক্ষণের জন্য ব্যবসায়ীকে প্রয়োজন অনুযায়ী গুদামজাতকরন সুবিধা গড়ে তুলতে দেখা যায়।

গ্রাহক সেবা প্রদান : প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশে সফলতা অর্জনের ব্যবসায়ীকে সাধ্যমত গ্রাহক সেবার ব্যবস্থা করতে হয়।

দেশের অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে শিল্প, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ সেবার অবদান বিশ্লেষণ

বাজারজাতকরণ প্রসার : বর্তমান যুগ প্রচারক তাই কোন সামগ্রী উৎপাদন বা সংগ্রহ করলে তা বিক্রয় করা যায় না। এজন্য সম্ভাব্য ক্রেতাদের তা অবগত করার উৎসাহ সৃষ্টির প্রয়োজন পড়ে। এ জন্য বিজ্ঞাপন ব্যক্তিক বিক্রয় প্রসার বিক্রয় প্রসার ইত্যাদি কর্মসূচি গ্রহণ করতে হয়।

বাজার গবেষণা : কোন পণ্য বা সেবা বাজার না থাকলে বা বাজার সৃষ্টি করা না গেলে ব্যবসায় চলে না। এজন্য সফলতা অর্জনে বাজার সম্পর্কে গবেষণার প্রয়োজন পড়ে।

হিসাবরক্ষণ : যে কোন ব্যবসায় হিসাবরক্ষণ একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সঠিক হিসাব রক্ষণের মাধ্যমে ব্যবসায় আয় ব্যয় লাভ-লোকসান ও সম্প্রদায়ের গতিপ্রকৃতি জানা যায়।

কর্মীর সংক্রান্ত কাজ : ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে একসাথে প্রচুর সংখ্যক কর্মী কাজ করে। এরূপ কর্মী সংগ্রহ নির্বাচন নিয়োগ প্রশিক্ষণ বেতন ভাতা প্রদান ইত্যাদি নানান ধরনের কাজ সম্পাদন করতে হয়।

উপসংহারে বলা যায়, ব্যবসায় কার্যাবলী বিভিন্ন ধরনের। কার্যত মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে মানুষের সকল বৈধ অর্থনৈতিক কার্যাবলি ব্যবসায়িক কার্যকলাপ হিসেবে গণ্য ।

(ঘ) ব্যবসায়ের গুরুত্ব আলোচনা

যেকোনো সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিষ্ঠায় ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত শক্তিশালী উপাদান। এটি এমন একটি শক্তি যা প্রতিষ্ঠান সকল উপায়-উপকরণ কে কার্যক্রম ভাবে সংগঠিত ও লক্ষ্যপানে পরিচালিত কর। ব্যবস্থাপনা কার্য দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে পরিচালিত হলে তা যেমনি প্রতিষ্ঠানকে সফলতা দান করে তেমনি ব্যবস্থাপনা কার্য অদক্ষতা প্রদর্শিত হলে উপায়-উপকরণ যত উন্নত হোক না কেন তা কোনো কার্যকর ফল দিতে পারেনা। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবে গণ্য হলেও ব্যবসায় যেকোনো দেশের আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক তথা সামগ্রিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখেছে। ব্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেই গড়ে উঠেছে ছোট বড় দোকান থেকে শুরু করে বিশাল শিল্প কারখানা।

বর্তমান বিশ্বে ব্যবসার গুরুত্ব অপরিসীম। আজকের পৃথিবীতে সে সকল দেশ উন্নতির চরম শিখরে অবস্থান করছে যে দেশগুলো ব্যবসা-বাণিজ্যে উন্নত। ব্যবসার মাধ্যমে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার সহজ হয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। ব্যবসার ফলে সঞ্চয় বৃদ্ধি পায় মূলধন গঠিত হয় ও জাতীয় আয় বৃদ্ধি পায়। ব্যবসার মাধ্যমে বেকার মানুষের কর্মসংস্থান হয়। ব্যবসায় গবেষণা ও সৃজনশীল কাজের উন্নয়ন ঘটায়। ব্যবসা-বাণিজ্যের ফলে দেশে দেশে পণ্যদ্রব্যের আদান-প্রদানের সাথে সাথে সংস্কৃতির বিনিময় ঘটে।

ব্যবসায়-বাণিজ্য কে ঘিরে নতুন নতুন শহর বন্দর গড়ে ওঠে । একটি এলাকায় একাধিক কলেজ রয়েছে। সেই কলেজের শিক্ষার্থীরা ভিড় জমাচ্ছে কারণ ওই কলেজটির ব্যবস্থাপনা অন্যটির চেয়ে ভালো। এভাবেই প্রতিটা পরিবার সমাজ প্রতিষ্ঠার রাষ্ট্রসহ সর্বত্রই সঠিক পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব আলোচনা করা হলো :

উপকরণাদি সুষ্ঠ ব্যবহার :

উপকরণ বলতে কার্য সম্পাদনের জন্য ব্যবহারযোগ্য বস্তু কে বোঝায়। উৎপাদনের কাজে লাগে এমন প্রয়োজনীয় বস্তুকে উৎপাদনের উপকরণ বলে। ভূমি শ্রম মূলধন ইত্যাদি উপকরণ কোথাও থাকায় উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট নয়।এগুলোর যথাযথ ব্যবহারের জন্য যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তাই ব্যবস্থাপনা। ।

দক্ষতা বৃদ্ধি :

দক্ষতা হল কম খরচে বেশি কাজ বা ফল লাভের সামর্থ্য। সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে পারো দক্ষতা হিসেবে গণ্য। কারণ উত্তম ব্যবস্থাপনার অধীনে এর প্রতিটা জনশক্তির দক্ষতা বাড়ে। ফলে বস্তুগত উপকরণ যেমন যন্ত্রপাতি কাঁচামাল মূলধন ইত্যাদি দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। তাই একটা প্রতিষ্ঠান সার্বিক দক্ষতা ব্যবস্থাপনার ভাল-মন্দের উপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল।

শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা :

শৃঙ্খলা বলতে রীতি নিয়ম-নীতি সুব্যবস্থা ইত্যাদি কে বোঝায়। একটা প্রতিষ্ঠান যদি এগুলো না থাকে তবে ওই প্রতিষ্ঠানের কখনোই ভালো চলতে পারে না। একটা পরিবারের কথাই ধরা যাক যেখানে যদি কোনো নিয়মনীতি না থাকে যে তার মত চলে কোন মান্যতা ভাবতা না রেখে তবে শান্তি ও উন্নতি সেখানে আশা করা যায় না। একটি প্রতিষ্ঠান সমাজ রাষ্ট্র ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে এই বিষয়টি প্রযোজ্য। আমাদের দেশের সর্বক্ষেত্রে যে বিশৃংখলা লক্ষনীয় এর পিছনে মূল কারণ হলো ব্যবস্থাপনা বা প্রশাসনের অদক্ষতা।

কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি :

কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি বলতে মানুষকে কাজে লাগানোর মত নতুন নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি কে বুঝায়। উত্তম ব্যবস্থাপনা শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান উন্নয়নে নিশ্চিত করে না ব্যবসায়ের সমপ্রসারণ ও নতুন নতুন ব্যবসা গঠনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী গনের অনেকেই তাদের ব্যবস্থাপনার দক্ষতা আর কারনে নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নতুন নতুন কারখানা গড়ে হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সমর্থ হয়েছেন। এতে দেশের যেমনি বেকার সমস্যা লাঘব হচ্ছে সেই সাথে মানুষের আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশ ও সমাজ উপকৃত হচ্ছে।

(ঙ) ব্যবসায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ করে সেটি যেভাবে অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অবদান রাখে

পেশাদারী সংস্থার প্রদত্ত পরামর্শ সেবা ও উপদেশ গ্রহণ করে সমাজের সমস্যা পিরিত বহু সংখ্যক লোক তাদের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানিক সমস্যাগুলি দূর করে দুর্বিষহ জীবন থেকে অব্যাহিত পায়। ফলে তারা জীবন ও জীবিকার সন্ধানে নির্ভাবনায় পূর্ণ সময় ব্যয় করতে পারে। এতে আয় বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের জীবন যাত্রার মান বাড়ে।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব :

দেশের বিরাজমান কার্যকর অর্থ ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা কৃষি ও শিল্পের অবদান জনগণের সঞ্চয় ও বিনিয়োগ মানসিকতা ও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ব্যবসায় পরিবেশে সুদৃঢ় অর্থনৈতিক উপাদান হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উপাদানগুলোর কয়েকটি ভিত্তি বেশ মজবুত হলেও অনেকগুলো ভিত্তি তেমন সহজ নয়। ১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর রাষ্ট্রীয় মালিকানার পাশাপাশি ব্যক্তিমালিকানাকে উৎসাহ দেয়া হলেও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নানা কারণে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জনে সমর্থ হয়নি।

স্বাধীনতা অর্জনের সময় একই অর্থনৈতিক সমসাময়িক বিভিন্ন দেশ যেমন- থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন প্রভৃতি যথেষ্ট অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাধনে সক্ষম হলেও বাংলাদেশে সঠিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণে ও সংস্কারে ব্যর্থ হয়। প্রশাসনিক জটিলতা প্রক্রিয়াগত বিধি নিষেধ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় ইত্যাদি কারণে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন সম্ভব হয়নি। মুদ্রা স্থাপিত বিনিময় হার আরে উদ্যোগপতি উচ্চ সুদের হার মূল্যস্তরের স্থিতিশীলতা ইত্যাদিও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বাধা।সঠিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা উদার শিল্প ও বিনিয়োগ নীতি উদারনীতি অবকাঠামোগত অবস্থার উন্নয়ন ইত্যাদির মাধ্যমে সহজেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নের গতি সঞ্চার করা যায।

সামাজিক গুরুত্ব :

এদেশে সামাজিক সাংস্কৃতিক অবস্থা ব্যবসায় বিনিয়োগ শিল্প স্থাপন অর্থাৎ যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পাদনের উপযোগী। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ধ্যান-ধারণার প্রসারণ উন্নয়নের ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসঙস্কারাচ্ছন্ন সমাজব্যবস্থার স্থলে সৃষ্টি হতে চলেছে প্রগতিশীল একটি সমাজ ব্যবস্থার। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় শিক্ষা সংস্কৃতির বিকাশ ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূরীকরণ স্বাস্থ্যসচেতনতার উন্মেষ, দারিদ্র বিমোচন, মানব অধিকারের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ, নারী সমাজের উন্নয়ন, জাতিগত ও ধর্মীয় সম্প্রীতি ও উন্নয়ন ইত্যাদি কর্মসূচি সমাজব্যবস্থায় আধুনিক উন্নয়ন উপযোগী দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা করেছে।

শিল্প উদ্যোগ তথা অর্থনৈতিক উন্নয়ন বান্ধব এরূপ সমাজ ব্যবস্থায় আশা করা যায়। ভবিষ্যতে এদেশে ব্যবসায় উদ্যোগ শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাঙ্খিত জোয়ার বইবে। অর্থাৎ বলা যায় কোন ব্যবসায় সংগঠন ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণ এর ধারা বজায় রেখে ক্রমান্বয়ে অগ্রসর হলে স্বাভাবিকভাবেই তার প্রতিষ্ঠান উচ্চতার নির্দেশ করে।

অতএব ব্যবসায় মানুষের জীবিকা অর্জনের মুখ্য উপায়। একজন সাধারন মানুষ স্বল্প পুঁজি ও সাধারণ শিক্ষার যোগ্যতা নিয়ে ছোট ব্যবসায় গড়ে সারা জীবন তা থেকে আয়-রোজগারও বংশপরম্পরায় উপার্জন করতে পারে। তাই ছোট-বড় নানা ধরনের ব্যবসায়ীকে মানুষ জীবিকা অর্জনের উপায় হিসেবে নিয়ে থাকে।

এই ছিল তোমাদের এইচএসসি ২০২৪ ৬ষ্ঠ সপ্তাহের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্টের উত্তরদেশের অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে শিল্প, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ সেবার অবদান বিশ্লেষণ।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.