civilized civilization

২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের চতুর্থ সপ্তাহে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ের তৃতীয় এসাইনমেন্ট নেয়া হয়েছে পাঠ্য বইয়ের প্রথম অধ্যায়: পৌরনীতি ও নাগরিকতা থেকে। এসএসসি ২০২৪ পৌরনীতি চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের চারটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। উত্তর লেখার পারদর্শিতার ওপর নির্ভর করে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অনুযায়ী বিষয় শিক্ষকগণ সর্বোচ্চ ১৬ নম্বর পর্যন্ত প্রদান করবেন।

চতুর্থ সপ্তাহে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয় এর এসাইনমেন্ট সমাধান করতে গিয়ে • পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকারের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারব। • রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে বর্ণনা করতে পারব পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করতে পারব।

নিচের ছবিতে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মানবিক বিভাগের পৌরনীতি ও নাগরিকতা ৩য় এসাইনমেন্ট বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো

https://i.imgur.com/yYkDNY8.jpg

শ্রেণিঃ এসএসসি ২০২৪, বিভাগঃ মানবিক, বিষয়ঃ পৌরনীতি ও নাগরিকতা, অ্যাসাইনমেন্ট নং-০৩, অধ্যায় ও শিরোনামঃ তৃতীয় অধ্যায়: প্রথম অধ্যায়: পৌরনীতি ও নাগরিকতা

অ্যাসাইনমেন্টঃ রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের উপাদান, রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত মতবাদ এবং রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্ক বিশ্লেষণ

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):

ক. পাঠ্যপুস্তক/শিক্ষক (মােবাইলে/অনলাইনে) যােগাযােগ করে নেয়া যেতে পারে;

খ. প্রয়ােজনে ইন্টারনেট থেকেও সহায়তা নেয়া যেতে পারে;

গ. রাষ্ট্র ধারণা বর্ণনা করতে হবে;

ঘ. রাষ্ট্র গঠনের উপাদানসমূহ বিশ্লেষণ করতে হবে;

ঙ. কোন উপাদান ছাড়া রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না তা বর্ণনা করতে হবে;

এসএসসি পরীক্ষা ২০২৪ চতুর্থ সপ্তাহের পৌরনীতি ও নাগরিকতা অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের চতুর্থ সপ্তাহে পৌরনীতি ও নাগরিকতা অ্যাসাইনমেন্ট পেপার এ উল্লেখিত নির্দেশনা ও মূল্যায়ন রুবিক্স সমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করেন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নমুনা উত্তর প্রস্তুত করে দেওয়া হল।

এসএসসি পরীক্ষার ২০২৪ সালের চতুর্থ সপ্তাহের অর্থনীতি বিষয়ে অ্যাসাইনমেন্ট এর নমুনা উত্তর অনুসরণ করে শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্টে দেওয়া প্রশ্নগুলোর যথাযথ উত্তর লিখতে পারবে এবং মূল্যায়নে সর্বোচ্চ নম্বর পাবে।

(উত্তর শুরু)

ক. রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের উপাদান সমূহ

রাষ্ট্রঃ প্রত্যেক মানুষই কোন না কোন রাষ্ট্রে বসবাস করে। হঠাৎ করে কোন রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয় নি। আদিম মানুষ প্রথমে গোত্রভিত্তিক বসবাস করত। সময়ের পরিবর্তনে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ ও রাজনৈতিক তত্ত্ববিদরা বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।

এরিস্টটলের মতে, “স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনের জন্য কতিপয় পরিবার ও গ্রামের সংগঠনে গঠিত সংগঠনই রাষ্ট্র।”

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আর. এম. ম্যাকাইভারের মতে, “রাষ্ট্র হচ্ছে সরকার প্রণীত আইন দ্বারা পরিচালিত একটি সংগঠন, যার কর্তৃত্বমূলক ক্ষমতা রয়েছে এবং যা নির্দিষ্ট ভূখন্ডে বসবাসরত নাগরিকদের উপর বলবৎ হয়।” অধ্যাপক গার্নার রাষ্ট্রের সবচেয়ে সুস্পষ্ট ও পূর্ণাঙ্গ সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্র হল বহুসংখ্যক ব্যক্তি নিয়ে গঠিত এমন এক সমাজ, যা বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ হতে মুক্ত এবং যাদের সুসংগঠিত সরকার আছে, যে সরকারের প্রতি ঐ জনসমাজ স্বভাবতই অনুগত।‘

সুতরাং আমরা বলতে পারি, রাষ্ট্র হল একটি ভূ-খণ্ডভিত্তিক সমাজ বিশেষ, যার সংগঠিত সরকার ও জনসমষ্টি রয়েছে এবং যার নিজস্ব এলাকার মধ্যে অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের উপর সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত আছে।

রাষ্ট্রের উপাদান সমূহ:

রাষ্ট্রের ধারণা ব্যাখ্যা করলে আমরা চারটি উপাদান দেখতে পাই। যথা, ১. জনসমষ্টি, ২. নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, ৩. সরকার ও ৪. সার্বভৌমত্ব। প্রত্যেক রাষ্ট্রই এই চারটি উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয়।

১. জনসমষ্টিঃ

রাষ্ট্র গঠনের অপরিহার্য উপাদান জনসমষ্টি। কোনাে ভূখণ্ডে একটি জনগােষ্ঠী স্থায়ীভাবে বসবাস করলেই রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে। তবে একটি রাষ্ট্র গঠনের জন্য কী পরিমাণ জনসমষ্টি প্রয়ােজন, এর কোনাে সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই। যেমন- বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি, ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১২১ কোটি (২০১১), ব্রুনাইয়ে প্রায় দুই লক্ষ।তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, একটি রাষ্ট্রের সম্পদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ জনসংখ্যা থাকা বাঞ্ছনীয়।

২. নির্দিষ্ট ভূখণ্ডঃ

রাষ্ট্র গঠনের জন্য নির্দিষ্ট ভূখণ্ড আবশ্যক। ভূখণ্ড বলতে একটি রাষ্ট্রের স্থলভাগ, জলভাগ ও আকাশসীমাকে বােঝায়। রাষ্ট্রের ভূখণ্ড ছােট বা বড় হতে পারে।

যেমন- বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলােমিটার। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত স্থল সীমানা চুক্তি অনুযায়ী ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক ছিটমহল বিনিময়ের ফলে বাংলাদেশের মােট ভূখন্ডে ১০,০৪১.২৫ একর জমি যােগ হয়েছে।

এছাড়া বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমার ও ভারতের সাথে আন্তর্জাতিক আদালতে সমুদ্রসীমা মামলার রায় বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার আয়তন বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে সমুদ্রে ১,১১,৮১৩ বর্গ কি.মি. সমুদ্র অঞ্চলে বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গণচীন, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা প্রভৃতি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রফল
বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বড়;

৩. সরকারঃ

রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সরকার। সরকার ছাড়া রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। রাষ্ট্রের যাবতীয় কার্যাবলি সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সরকার গঠিত হয় তিনটি বিভাগ নিয়ে। যথাআইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ। সকল রাষ্ট্রের সরকারের গঠন একই রকম হলেও রাষ্ট্রভেদে সরকারের রূপ ভিন্ন ভিন্ন।

যেমন- বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার, আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার। রাষ্ট্রের যাবতীয় শাসনকাজ সরকারই পরিচালনা করে থাকে।

৪. সার্বভৌমত্বঃ

সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। এটি রাষ্ট্রের চরম, পরম ও সর্বোচ্চ ক্ষমতা। এর দুটি দিক রয়েছে, যথা- অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সার্বভৌমত্ব।

অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্বের সাহায্যে রাষ্ট্র দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন আদেশ-নির্দেশ জারির মাধ্যমে ব্যক্তি ও সংস্থার উপর কর্তৃত্ব করে। অন্যদিকে, বাহ্যিক সার্বভৌমত্বের মাধ্যমে রাষ্ট্র বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণ থেকে দেশকে মুক্ত রাখে।

খ. রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত মতবাদ

রাষ্ট্রের উৎপত্তিঃ রাষ্ট্র কখন ও কীভাবে উৎপত্তি লাভ করেছে তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা অতীত ইতিহাস ও রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে কতগুলাে মতবাদ প্রদান করেছেন।

তন্মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলাে- ১। ঐশী মতবাদ, ২। বল বা শক্তি প্রয়ােগ মতবাদ, ৩। সামাজিক চুক্তি মতবাদ ও ৪। ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ।

১. ঐশী মতবাদঃ

এটি রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে সবচেয়ে পুরাতন মতবাদ। এ মতবাদে বলা হয়- বিধাতা বা স্রষ্টা স্বয়ং রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছেন এবং রাষ্ট্রকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনি শাসক প্রেরণ করেছেন। শাসক তাঁর প্রতিনিধি এবং তিনি তার কাজের জন্য একমাত্র স্রষ্টা বা বিধাতার নিকট দায়ী, জনগণের নিকট নয়।

শাসক যেহেতু স্রষ্টার নির্দেশে কাজ করে, সেহেতু শাসকের আদেশ অমান্য করার অর্থ বিধাতার নির্দেশ অমান্য করা। এ মতবাদ অনুসারে শাসক একাধারে যেমন রাষ্ট্রপ্রধান এবং অন্যদিকে তিনিই আবার ধর্মীয় প্রধান। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এ মতবাদকে বিপদজনক, অগণতান্ত্রিক ও অযৌক্তিক বলে সমালােচনা করেন। তাদের মতে, যেখানে জনগণের নিকট শাসক দায়ী থাকে না, সেখানে স্বৈরশাসন সৃষ্টি হয় । এ মতবাদকে বিধাতার সৃষ্টিমূলক মতবাদও বলা হয় ।

২. বল বা শক্তি প্রয়ােগ মতবাদঃ

এ মতবাদের মূল বক্তব্য হলাে- বল বা শক্তি প্রয়ােগের মাধ্যমে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে এবং শক্তির জোরে রাষ্ট্র টিকে আছে। এ মতবাদে বলা হয়, সমাজের বলশালী ব্যক্তিরা যুদ্ধ-বিগ্রহ বা বল প্রয়ােগের মাধ্যমে দুর্বলের উপর নিজেদের আধিপত্য স্থাপনের মাধ্যমে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে এবং শাসনকার্য পরিচালনা করে।

আরও বলা হয়, সৃষ্টির লু থেকে আজ পর্যন্ত এসবেই যুদ্ধবিগ্রহের মাধ্যমে রাষ্ট্র জন্ম হয়েছে। সমালোচক এ মহদিকে অযৌক্তিক, শান্ত ও ক্ষতিকর বলে আখ্যায়িত করেছেন।

তারা বলেন, শক্তির মাধ্যমেই যদি রাষ্ট্র টিকে থাকত তাহলে শক্তিশালী রাষ্ট্রের পাশাপাশি সামরিক দিক থেকে দুর্বল বই টিকে থাকতে পাচ্ছি না। আসলে শক্তির জোরে নয় বরং
সম্মভি ভিক্তিছে রট্র গড়ে উঠে এবং টিকে থাকে।

৩. সামাজিক মুক্তি মতবাদঃ

এ মঙ্গবাদের মূলকথা হলাে- সমাজে বসবাসকারী জনগণের পারস্পরিক চুক্তির ফলে রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। ব্রিটিশ বই দার্শনিক টমাল হল ও জন লক এবং ফাসি দার্শনিক া জকি বুলো সামাজিক চুক্তি মতবাদের প্রবর্তক ছিলেন।

এ মতবাদ অনুযায়ী, রাষ্ট্র সৃষ্টির পূর্বে মানুষ প্রকৃতি রাজ্যে বসবাস করত। তারা প্রকৃতির নিয়ম মেনে চলত এবং প্রাকৃতিক সুযােগ-সুবিধা ভােগ করত। কিন্তু প্রকৃতির রাজ্যে আইন অমান্য করলে শাস্তি দেয়ার কোনাে কর্তৃপক্ষ ছিল না। ফলে সামাজিক জীবনে অরাজক ও বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়।

মানুষ হয়ে উঠে স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক। দুর্বলের উপর চলে সবলের অত্যাচার। এ কারণে মানুষের জীবন কষ্টকর ও দুর্বিষহ হয়ে উঠে। এ ছাড়া প্রকৃতির রাজ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যক্তিগত সম্পত্তির আকাক্ষা ও প্রয়ােজনীয়তা দেখা দেয়।

প্রকৃতির রাঙ্গের এ অরাজকন্তপূর্ণ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মানুষ নিজেদের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্র সৃষ্টি করে এবং নিরাপত্তার বিনিময়ে নিজেদের উপর শাসন করার জন্য স্থায়ীজাবে শাসকের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করে।

৫. ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদঃ

এ মতবাদের মূল বক্তব্য হলাে- রাষ্ট্র কোনাে একটি বিশেষ কারণে হঠাৎ করে সৃষ্টি নি। দীর্ঘদিনের বিবর্তনের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্থরে বিক্রি শক্তি ও উপাদান ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে হতে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে।

যেসব উপাদানের কার্যকারিতার ফলে রাষ্ট্র উৎপত্তি হয়েছে, সেগুলাে হলােসকৃতির বল, মফের বল, ধর্মের বন্ধন, যুদ্ধবিগ্রহ, অর্থনৈতিক ও রাজনৈক্তি চেতনা ও কার্যকলাপ। ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ সম্পর্কে ৮, পার্লার বলেন, রাষ্ট্র বিধাতার সৃষ্টি নয়, ফল প্রয়ােগের মাধ্যমেও সৃষ্টি হয়নি বরং ঐতিহাসিক ক্রমবিবর্তনের ফলে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে।

রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন মতবাদের মধ্যে ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযােগ্য মতবাদ। এ মতবাদে রাষ্ট্রের উৎপত্তির সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। আসলে বর্তমানের রাষ্ট্র বহুযুগের বিবর্তনের ফল।

গ. রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্ক

প্রাচীনকালে রাষ্ট্র ও সরকারের মধ্যে কোনাে পার্থক্য করা হতাে না। ফ্রান্সের চতুর্দশ লুই বলতেন, আমিই রাষ্ট্র। তবে আধুনিককালে রাষ্ট্র ও সরকারের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে, নিমে সেগুলাে বর্ণিত হলাে-

১. গঠনগত : জনসমষ্টি, ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব-এ চারটি উপাদান নিয়ে রাষ্ট্র গঠিত হয় সরকার। উক্ত চারটি উপাদানের মধ্যে একটি অন্যতম উপাদান, যার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়।

২. জনসমষ্টি : রাষ্ট্র গঠিত হয় দেশের সব জনগণ নিয়ে। আর সরকার গঠিত হয় আইন, শাসন ও বিচার বিভাগে নিয়ােজিত ব্যক্তিদের নিয়ে।

৩. স্থায়িত্ব : রাষ্ট্র স্থায়ী প্রতিষ্ঠান, কিন্তু সরকার অস্থায়ী এবং পরিবর্তনশীল। জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এবং রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালনার সুবিধার্থে সরকার পরিবর্তিত হয়। কিন্তু রাষ্ট্রের পরিবর্তন হয় না। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ সরকারের পরিবর্তন হয়েছে বহুবার কিন্তু রাষ্ট্রের স্থায়িত্বের কোনাে পরিবর্তন হয়নি।

৪. প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য : বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য অভিন্ন। কিন্তু সরকারের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য রাষ্ট্রভেদে ভিন্ন ভিন্ন। যেমন- বাংলাদেশে রয়েছে সংসদীয় সরকার, আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার।

৫. সার্বভৌমত্ব : রাষ্ট্র সার্বভৌম বা সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। সরকার সার্বভৌম ক্ষমতার বাস্তবায়নকারী মাত্র।

৬. ধারণা : রাষ্ট্র একটি বিমূর্ত ধারণা। রাষ্ট্রকে দেখা যায় না, কল্পনা বা অনুধাবন করা যায় । কিন্তু সরকার মূর্ত। কারণ, যাদের নিয়ে সরকার গঠিত হয়, তাদের দেখা যায়।

সুতরাং রাষ্ট্র ও সরকারের মধ্যে উল্লেখিত পার্থক্য থাকলেও আমরা বলতে পারি, উভয়ের পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ । একটিকে ছাড়া অন্যটির কথা কল্পনা করা যায় না। রাষ্ট্রকে পরিচালনার জন্যই সরকার গঠিত হয়।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.