প্রতিদিন শিখি

কলেজে ভর্তি হওয়ার আগে যে ৭টি কাজ অবশ্যই করবেন

কলেজের ফার্স্ট ইয়ার মানে জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ের সূচনা। এই তিন-চার-পাঁচ বছরে এমন কিছু অভিজ্ঞতা হতে পারে যা জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। খুব বুঝেশুনে পা ফেলার সময় এখন।

কলেজের প্রথম বছরে বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীরই খেই হারিয়ে যায়। অনেক কড়াকড়ি শিথিল হয়, আর বড় হওয়ার একটা উন্মাদনাও পেয়ে বসে। তাই কলেজে ভর্তি হওয়ার আগে কয়েকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ সেরে রাখা প্রয়োজন।

১) কেরিয়ার কাউন্সেলিং
কোন পেশা আপনার পক্ষে সবচেয়ে উপযুক্ত অথবা আপনার কোন বিশেষ দিকে প্রতিভা রয়েছে তা জানার উপায় কেরিয়ার কাউন্সেলিং। যদিও দশম শ্রেণির আগেই এই কাউন্সেলিং করা উচিত তবু যদি না হয়ে থাকে তবে কলেজে ফর্ম ফিল আপ করার আগে একবার জেনে নেওয়া ভাল কোন পথে গেলে আপনার সবচেয়ে বেশি উন্নতির সম্ভাবনা।

২) ইমোশনাল স্ট্রেস কাউন্সেলিং
যদি কোনও কারণে প্রচণ্ড ইমোশনাল স্ট্রেসের মধ্যে থাকেন তবে কলেজে ভর্তি হওয়ার আগে মনোবিদের কাছে সে সব বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলুন। কলেজে গিয়ে একদম নতুন পরিবেশ, পড়ার চাপ, র‌‌্যাগিং ইত্যাদির সঙ্গে যুঝতে গেলে নিজের মনের ভিতরটাকে শক্ত করাটা খুব জরুরি।

৩) পরীক্ষার ফল ভুলে যান
দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফল যাই হয়ে থাক না কেন, কলেজে গিয়ে তা নিয়ে একদমই মাথা ঘামাবেন না। অনেক ছাত্রছাত্রী খুব ভাল ফল করে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভোগেন আবার আর এক দল ফল খারাপ হওয়ায় কলেজে খুব সঙ্কোচে থাকেন। এই দুই মনোভাবই প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় ভরাডুবির কারণ হতে পারে। দ্বাদশ শ্রেণি আর স্নাতক স্তরের সিলেবাসের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে।

৪) স্মার্টনেস বাড়ান

কলেজ যাই হোক না কেন, অল্পবিস্তর র‌‌‌্যাগিং হবেই। অনেক চেষ্টা করেও সমাজকে এখনও এই ব্যাধি থেকে মুক্ত করা যায়নি। বেশিরভাগ কলেজে ‘বোকা বানানো’প্রশ্ন করে র‌্যাগিং করা হয় এবং র‌্যাগিংয়ের টার্গেট হন প্রধানত তাঁরাই যাদের মধ্যে একেবারেই কনফিডেন্সের অভাব দেখা যায়। তাই নিজের স্মার্টনেস বাড়ানোর চেষ্টা করুন কিন্তু ‘ওভারস্মার্ট’ হতে যাবেন না।

৫) নিজেকে বলুন, কলেজে প্রেম নয়
এটা পড়ে মাথায় রক্ত চড়ে গেলেও কথাটা খুব খাঁটি সত্যি। বন্ধুত্ব করুন মন-প্রাণ খুলে কিন্তু প্রেম, কথা দেওয়া-নেওয়া বা তার বেশি কিছুর দিকে যাবেন না কলেজের গণ্ডি পেরনোর আগে। খুব কম মানুষই এই বয়সে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে। এই সময়টা কেরিয়ার তৈরি করার শেষ বা শেষের আগের ধাপ। এই সময়ে প্রেমিক বা প্রেমিকা হওয়া উচিত একমাত্র কেরিয়ার। প্রতিদিন ফোনে কথা না বললে বা ক্লাস বাংক করে দেখা না করলে যে প্রেম হাওয়া হয়ে যায়, জানবেন সেই প্রেম আদতে কোনওদিনই টিকবে না।

৬) সংসারের দায়িত্ব বুঝুন
যে পরিবার এতদিন আপনাকে লালন-পালন করল সেই পরিবারের প্রতি আপনারও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। কলেজে উঠে আড্ডা-ইউনিয়ন-ডেটিংয়ের স্রোতে কীভাবে গা ভাসিয়ে দেবেন সেই চিন্তায় দিনরাত মগ্ন হয়ে না থেকে সংসারের কিছু দায়িত্ব নিন। যেমন, কোনও বিল জমা দেওয়া বা বাজার করা, টিউশন করে নিজের হাতখরচটা চালানো। কিছুই না পারলে অন্তত বাড়ি থেকে দেওয়া পকেট মানি বুঝে-শুনে খরচ করুন এবং টাকা জমানোর অভ্যাস তৈরি করুন।

৭) নেশা নয়, পেশাই ধ্যান-জ্ঞান
কলেজে উঠে বেশিরভাগ ছেলেমেয়েই যে কোনও একটি নেশার দিকে ঝোঁকেন। সেটা সিগারেট বা গাঁজা হতে পারে, মদও হতে পারে। এদেশে অনেক কিছুই আইনসিদ্ধ নয় আবার আইনের ফাঁক বুঝে নেশার কবলে পড়ার ঘটনাও বিরল নয়। এইভাবে চিরজীবনের মতো হারিয়ে গিয়েছেন বহু প্রতিভাবান। আপনিও কি তাঁদের দলেই নাম লিখিয়ে নিজেকে ‘লুজার’ প্রমাণ করতে চান? ফর্ম ফিল-আপ করার আগে এই প্রশ্নটি অবশ্যই করবেন নিজেকে।

আরও পড়ুনঃ শারীরিক শিক্ষা কাকে বলে? শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব কি কি ?

About Author

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.