bd ancient cities

বাংলাদেশের কয়েকটি প্রাচীন নগর সভ্যতার নাম, অবস্থান, প্রাপ্ত নিদর্শন, বাণিজ্যিক গুরুত্ব এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে ছকের মাধ্যমে তালিকা প্রস্তুত কর এবং বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে প্রাচীন সংস্কৃতির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন তৈরি কর।

তোমাদের করনীয়ঃ

উপরের প্রশ্ন থেকে তোমরা বুঝতে পারছ তোমাদের দুটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রথম উত্তরটি দেখনো ছকের মত করে দিতে হবে এবং পরের উত্তরটি প্রতিবেদন আকারে দিতে হবে।

1-compressed-02

৬ষ্ঠ শ্রেণির ১০ম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২৪ বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় উত্তর

নমুনা উত্তরঃ

সভ্যতার নাম
সভ্যতার অবস্থান
প্রাপ্ত নিদর্শন সমূহ
বাণিজ্যিক গুরুত্ব
সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য
সিন্ধু সভ্যতা
সিন্ধু সভ্যতা ভারত উপমহাদেশের সিন্ধু, সরস্বতী, হাকরা নদ নদীর
অববাহিকায় গড়ে উঠে।
পোড়ামাটির, চুনা পাথর ও ব্রোঞ্জের বেশ কয়েকটি মূর্তি সিন্ধু সভ্যতায়
পাওয়া গিয়েছিল। তাছাড়া এই সভ্যতায় দেখা মিলেছিল অসংখ্য সিল।
সিন্ধু সভ্যতায় অন্তর্বাণিজ্য ও বহির্বাণিজ্যের ব্যবস্থা ছিল।
নগরগুলো ছিল উন্নতমানের। রাস্তাঘাট, সড়ক, ড্রেন ছিল
পরিকল্পিতভাবে।
দ্বিতীয় নগর সভ্যতা
ভারতের গঙ্গা নদীর অববাহিকায় গড়ে উঠে দ্বিতীয় নগর সভ্যতা। নরসিংদী
জেলার বেলাব উপজেলায় উয়ারী-বটেশ্বর এবং বগুড়ার মহাস্থানগড়
নিয়ে এই সভ্যতার অবস্থান।
বাংলাদেশের উয়ারী-বটেশ্বর এবং পান্ড্রুনগর (মহাস্থানগড়) দ্বিতীয় নগর
সভ্যতার নিদর্শন।উয়ারী-বটেশ্বরে প্রাপ্ত ধাতব অলংকার, পাথর ও কাচের পুঁতি, ইট,
নির্মিত স্থাপত্য, একটি উন্নত সভ্যতার পরিচয় বহন করে।
উয়ারী-বটেশ্বর ছিল একটি নদীবন্দর এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক
বাণিজ্যের কেন্দ্র। ভূমধ্যসাগর এলাকার সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক
প্রতিষ্ঠা হয়।
দ্বিতীয় নগর সভ্যতা সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে ছিল পরিপূর্ণ। বিশেষ করে
পান্ড্রুনগরের সাথে ভাতর উপমহাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক
থাকায় সাংস্কৃতিক লেনদেন হতো। ফলে ধীরে ধীরে পান্ড্রুনগর এলাকায়
ঘনবসতি গড়ে উঠে। চীনদেশের পরিব্রাজক ও ধর্মযাজক পান্ড্রুনগরে
বৌদ্ধবিহার ও ব্রাহ্মণ্য মন্দির দেখেছিল যা আধুনিককালের আবাসিক
বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সাথে তুলনা করা যায়।

বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে সংস্কৃতির পরিবর্তন হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে কালের বিবর্তনে প্রাচীন সংস্কৃতিকে আজও বর্তমান সভ্যতার সাথে জড়িয়ে আছে।

বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতির সাদৃশ্যঃ

প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতি ছিল খুবই উন্নতমানের। বর্তমানের মতো প্রাচীন সময়েও সুপরিকল্পিতভাবে দালান তৈরি করা হতো। বর্তমানে উন্নত নগরী বলতে যা বুঝায় তার সবগুলোই প্রাচীন সময়ে বিদ্ধমান ছিল। যেমনঃ প্রাচীন সময়ে নগরগুলিতে উন্নত রাস্তাঘাট, সড়ক, রাস্তার পাশে বাতি, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ছিল ড্রেন, ডাস্টবিন, বিশাল গোসলখানা প্রভৃতির ব্যবস্থা ছিল যা বর্তমান বাংলাদেশে হরহামেশাই চোখে পড়ে। প্রাচীন সময়ে বানিজ্য ও যোগাযোগের জন্য নদী ব্যবহার করা হত। বর্তমানেও নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে হাজারও ব্যবসা।

বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতির বৈসাদৃশ্যঃ

প্রাচীন সময়ের অনেক শিল্পই বর্তমানে অনেকটা বিলীন হয়ে গেছে। আগে হস্ত শিল্পের বেশ জনপ্রিয়তা ছিল। বর্তমানে হস্ত শিল্পের জনপ্রিয়তা কমে এসেছে। বিশেষ কিছু সাংস্কৃতিক উৎসব ছাড়া হস্ত শিল্পের দেখা মিলে না। তাছাড়া বাসাবাড়িতে প্রাচীন সময়ে মাটির তৈরি জিনিস ব্যবহার করা হতো। কিন্তু সভ্যতার অগ্রগতির সাথে
সাথে বর্তমানে স্টিলের ও কাঁচের তৈরি জিনিসপত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।

পরিশেষে বলা যায়, বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতির বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান থাকলেও সভ্যতার গোড়াপত্তন সূচীত হয়েছিল প্রাচীন যুগ থেকেই।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.