বাংলাদেশ

বাংলাদেশের সংবিধানে সপ্তদশ সংশোধনী এনে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনের বিধি আরও ২৫ বছর বহাল রাখার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) আইন, ২০২৪’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সংবিধানে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা কম ছিল, ২০১১ সালে ওটা বাড়িয়ে ৫০ করা হয়েছে।

“সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে আবার নতুনভাবে মেয়াদ কার্যকর করার জন্য প্রস্তাবটা আনা হয়েছে। এই ৫০টি আসন আগামী ২৫ বছরের জন্য আবার সংরক্ষিত থাকবে।”

২৫ বছরের ব্যাখ্যায় শফিউল বলেন, “এটা এমনভাবে হবে যে পরবর্তী সংসদের অর্থাৎ একাদশ সংসদের প্রথম বৈঠক (অধিবেশন) থেকে শুরু করে আগামী ২৫ বছর পর্যন্ত সংসদ না ভেঙে যাওয়া পর্যন্ত এই ৫০টি আসন সংরক্ষিত থাকবে।”

সংবিধান অনুযায়ী ৩৫০ জন সংসদ সদস্য নিয়ে দশম জাতীয় সংসদ গঠিত হয়। সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে ৩০০ জন এবং সংসদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে ৫০ জন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

সংবিধানের ৬৫ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, “সংবিধান (চতুর্দশ সংশোধন) আইন, ২০০৪ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অব্যবহিত পরবর্তী সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে শুরু করিয়া দশ বৎসর কাল অতিবাহিত হইবার অব্যবহিত পরবর্তীকালে সংসদ ভাঙ্গিয়া না যাওয়া পর্যন্ত পঞ্চাশটি আসন কেবল মহিলা-সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে …।”

২০০৪ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদে সংবিধান সংশোধন করে সংরক্ষিত নারী সদস্যের ৪৫টি আসন সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টনের ব্যবস্থা করা হয়। তখন এর মেয়াদকাল নির্ধারণ করা হয় পরবর্তী সংসদের অর্থাৎ, নবম সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে দশ বছর।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি। সেই হিসেবে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের মেয়াদ আছে ২০২৪ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।

২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী সদস্যদের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ এ উত্তীর্ণ করা হলেও ওই সময় আর মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বছরখানেক হাতে থাকতেই আইন সংশোধনের এই উদ্যোগে নিল সরকার।

সংবিধান সংশোধনের এই প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় তা এখন বিল আকারে সংসদে পাঠানো হবে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে যাচাই-বাছাইয়ের পর তা পাস করতে হবে।

সংবিধান সংশোধন করতে হলে সংসদ সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট লাগে। সংসদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হাতে আছে ২৩২টি আসন।

সংবিধানের সর্বশেষ সংশোধন হয়েছিল ২০১৬ সালে। ওই সংশোধনে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। পরে সর্বোচ্চ আদালত ওই সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেয়।

আরও পড়ুনঃ

সবার জন্য পেনশন চালুর খসড়া তৈরি হয়েছে: অর্থমন্ত্রী

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.