বাংলাদেশ

দুই বাসের রেষারেষিতে দুই শিক্ষার্থীর নিহতের ঘটনায় বিচার দাবি করে আজ চতুর্থ দিনের মতো রাজধানীর রাজপথে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছে।

তারই ধারাবাহিকতায় শনির আখড়ায়ও আজ বুধবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে রাখে এবং চালকদের লাইসেন্স চেক করতে থাকে। এ সময় একটি পিকআপ ভ্যানের লাইসেন্স দেখতে চাইলে চালক লাইসেন্স না দেখিয়ে উল্টো গাড়ি চালানো শুরু করে।

পিকআপের সামনে থাকা একজন শিক্ষার্থী তখন রাস্তায় পড়ে যায় এবং চালক গাড়ি না থামিয়ে ওই শিক্ষার্থীর ওপর দিয়েই গাড়ি চালিয়ে দেয়।

এই ভয়ংকর দৃশ্যের সাক্ষী হোন উপস্থিত জনগণ। এ সময় মোবাইল ফোনে ভিডিও করা হয় এই দৃশ্য, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

তবে দুপুরে এ ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যাত্রাবাড়ী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কয়েকটি স্থান থেকে বিচ্ছিন্নভাবে শুনেছি, লাইসেন্স না থাকায় একটি পিকআপকে আটকে রেখেছিল শিক্ষার্থীরা। পরে উল্টা পথে দ্রুত চলে যেতে চায় পিকআপটি। তখন শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়। তখন গাড়িটি ব্রেক না করে আরো দ্রুতগতিতে সামনে এগিয়ে যায়। তখন একজন পিকআপটির নিচে চাপা পড়েন।’

এসি আরো বলেন, ‘তবে এ ঘটনা সত্য কি না, আমরা এখনো নিশ্চিত না। ঘটনাস্থল থেকে তেমন নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাইনি। ঢাকা মেডিকেল, মিটফোর্ডসহ আশপাশের সব হাসপাতালে ফোন করেছি; কিন্তু আন্দোলনরত কোনো শিক্ষার্থী কোথাও অ্যাডমিট হয়নি।’

‘তবে আমি ফোর্স পাঠিয়েছি। ঘটনাস্থলে খুঁজে না পেলে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে হলেও দেখতে বলেছি,’ যোগ করেন এসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক রাহাত খান (এসআই) বলেন, ‘এ রকম একটি বিষয় শুনেছি, কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারিনি।’

গত রোববার দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাস প্রতিযোগিতা করে মিরপুর থেকে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে আসছিল। এ সময় ফ্লাইওভারের শেষ দিকে, রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল একদল শিক্ষার্থী। এর মধ্যে একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নেমেই দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন।

নিহতরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম।

ওই ঘটনার পর থেকেই বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। গতকাল মঙ্গলবার এই বিক্ষোভের জেরে রাজধানীর ঢাকা প্রায় অচল হয়ে যায়।

এর মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সভাকক্ষে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআরটিএ ও বিআরটিসিসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে একটি সভা হয়। সেখান থেকে ঢাকায় গণপরিবহনে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এর মধ্যে আজ ফের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনে নামে।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.