বাংলাদেশ

তৃতীয় দিনের মতো রাজধানী ঢাকার রাজপথ অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা বাস-ট্রাক-প্রাইভেট গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহনের লাইসেন্স চেক করে দেখছে। লাইসেন্স না পেলে সেই গাড়ির চাবি আটকে রাখছে তারা। কোনোরকম সহিংসতা ছাড়া স্বতঃস্ফুর্ত এই আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রীদের তৎপরতা এটুকুই। কিন্তু তাদের এই সরলতার সুযোগ নিচ্ছেন অনেকেই। যেমনটা নিয়েছেন ‘ছাত্রলীগ’ পরিচয়ধারী এই যুবক।

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেটে সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল শিক্ষার্থীরা। তারা বাসের লাইসেন্স চেক করতে করতে সার্ক ফোয়ারার মোড়ে এসে একটি বাস আটকায় তারা। ‘স্বাধীন পরিবহন’ নামের ওই বাসটির চালকের বয়স সর্বোচ্চ ১৩ থেকে ১৪! স্বাভাবিকভাবেই লাইসেন্স থাকার কোনো কারণ নেই। ইউনিফর্ম পরা ছেলেরা গাড়টি আটকে যাত্রীদের নেমে যেতে অনুরোধ করে। যাত্রীরাও বিনা প্রতিবাদে নেমে যায়। এরপরেই ঘটে সেই ঘটনা!

হঠাৎ করেই সাধারণ পোশাক পরা এক যুবক (যার বয়স আন্দোলনকারীদের চেয়ে অনেক বেশি) এসে একটা ইট কুড়িয়ে নিয়ে বাসের সামনের কাঁচে ছুড়ে মারে। ঝুর ঝুর করে ভেঙে পড়ে কাঁচ। ছাত্ররাই ওই যুবককে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। আন্দোলনকারীরা চিৎকার করে বলছিল, ‘আমরা গাড়ি ভাঙার আন্দোলন করছি না; তুই গাড়ি ভাঙলি ক্যান?’

পুলিশ এসে ওই যুবককে আটক করে। নাঈম আহমেদ নামের ওই যুবক নিজেকে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দেয়। সে বেশ কয়েকবার নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে সে নিজেকে হবিগঞ্জ ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে দাবি করে। কিন্তু পুলিশ তাকে শেষ পর্যন্ত হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। ছাত্ররা নিজেদের মতো আবারও গাড়ির লাইসেন্স চেক করতে থাকে। নাঈম সংগঠনের কর্মী কিনা- এ বিষয়টি হবিগঞ্জ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করতে পারেনি।

পুলিশের হাতে থাকা যুবকটির সঙ্গে এই প্রতিবেদকের যে কথাবার্তা হয়:

প্রশ্ন: আপনি কে, আপনার পরিচয় বলেন।
যুবক: আমি হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজের ছাত্র।
প্রশ্ন: আপনি ঢাকায় এসেছেন কেন?
উত্তর: গাজীপুরে ভুটের (ভোট) কাজে আসছি।
প্রশ্ন: কার ভোটের কাজে?
উত্তর: আমার ভুট।
প্রশ্ন: গাজীপুরে কিসের ভোট আপনার? আপনার বাড়ি তো হবিগঞ্জে বললেন।
উত্তর: আমার কাজে, মানে কলেজের কাজে।
প্রশ্ন: আপনি কোনো দল করেন?
উত্তর: ছাত্রলীগ।
প্রশ্ন: কোন ইউনিট, কোন শাখা?
উত্তর: হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজ।
প্রশ্ন: আপনার ইউনিটের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারির নাম বলেন।
উত্তর: আমার নাম নাঈম আহমেদ নাঈম। আমার নেতার নাম সাঈদুর রহমান।
প্রশ্ন: তিনি কি সভাপতি?
উত্তর: জি।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.