উদ্ভিদ দেহে ভাইরাস যেসব রোগ ছড়ায়
উদ্দীপকে প্রথম অণুজীব টির নাম হল ভাইরাস। জীবিত জীব দেহ ছাড়া বা জীবদেহের বাহিরে এরা জীবনের কোন লক্ষণ দেখায় না। এ কারণেই ভাইরাস প্রকৃত পরজীবী।
এই অনুজীবটি মানব দেহের নানা রোগ ছাড়াও উদ্ভিদ দেহে নানা রকম রোগ সৃষ্টি করে।
যেমনঃ
(ক) ধান গাছে টুংরো রোগ এই ভাইরাসের কারণে হয়। যার ফলে ধান অতি তাড়াতাড়ি ঝরে পড়ে।
(খ) তামাকের মোজাইক রোগ এই ভাইরাসের কারণে হয়। এর ফলে তামাকের পাতা বিবর্ণ হয়ে যায়।
উদ্ভিদের কোন কোন রোগ সৃষ্টি করে তা ব্যাখ্যা করা হল
উদ্ভিদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি করতে পারে, যা সাধারণত ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, এবং নিমাটোডসের কারণে হয়। এসব রোগ উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি, বিকাশ, এবং উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটায়। নিচে উদ্ভিদের কিছু সাধারণ রোগ এবং সেগুলোর কারণ ব্যাখ্যা করা হলো:
১. ভাইরাসজনিত রোগ:
- তামাক মোজাইক ভাইরাস (TMV): এই ভাইরাসটি তামাক গাছের পাশাপাশি টমেটো, মরিচ, এবং অন্যান্য উদ্ভিদের মধ্যে রোগ সৃষ্টি করে। এর ফলে উদ্ভিদের পাতায় মোজাইক ধরনের দাগ পড়ে এবং পাতার রঙ পরিবর্তিত হয়।
- পেপাইন মোজাইক ভাইরাস: পেপার গাছের মধ্যে এই ভাইরাসটির কারণে পাতার আকার এবং গঠন পরিবর্তন হয়। ফলের গুণগত মানও হ্রাস পায়।
২. ছত্রাকজনিত রোগ:
- ডাউনির মিলডিউ: এই রোগটি আঙ্গুর, শসা, এবং অন্যান্য উদ্ভিদের মধ্যে দেখা যায়। পাতায় হলুদ দাগ পড়ে এবং পরবর্তীতে সেগুলো বাদামী রঙ ধারণ করে।
- পাউডারি মিলডিউ: বিভিন্ন উদ্ভিদ যেমন গোলাপ, শসা, এবং আপেলের মধ্যে পাউডারি মিলডিউ দেখা যায়। এতে পাতায় সাদা পাউডারের মতো আচ্ছাদন তৈরি হয়।
৩. ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ:
- ফায়ার ব্লাইট: আপেল এবং নাশপাতির মধ্যে এই রোগটি দেখা যায়। এর ফলে ফুল, ফল, এবং পাতা কালো হয়ে যায় এবং শুকিয়ে যায়।
- ব্ল্যাক রট: এই রোগটি মূলত ব্রাসিকা জাতের ফসলের মধ্যে দেখা যায়। পাতার শিরায় কালো দাগ দেখা দেয় এবং গাছ ধীরে ধীরে মরে যায়।
৪. নিমাটোডস জনিত রোগ:
- রুট নট নিমাটোড: এই রোগটি টমেটো, মরিচ, এবং অন্যান্য সবজি গাছের শিকড়ে গিঁট তৈরি করে। ফলে গাছের পুষ্টি শোষণ বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং গাছ দুর্বল হয়ে যায়।
৫. ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংমিশ্রণ:
- সাইট্রাস ক্যান্কার: এই রোগটি লেবু জাতীয় গাছের মধ্যে দেখা যায়। এতে পাতার, ডালের, এবং ফলে বাদামী দাগ তৈরি হয় এবং ফসলের উৎপাদন কমে যায়।
উপরোক্ত রোগগুলো উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশে আক্রমণ করে এবং উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং উৎপাদনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সঠিক রোগ নির্ণয় এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই রোগগুলো থেকে উদ্ভিদকে রক্ষা করা সম্ভব।