মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য ৩৭তম বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে দুই হাজার সহকারী শিক্ষকের চাহিদা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী সপ্তাহে এ চাহিদা বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) পাঠানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান বলেন, সারাদেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগ দিতে আমরা ৩৭তম বিসিএস নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণ এমন প্রায় দুই হাজার জনের চাহিদা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, গত ১৮ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শূন্য আসনের চাহিদা পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়। মঙ্গলবার শূন্য আসনের চাহিদা তৈরি করে পাঠানো হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এটি পিএসসিতে পাঠাবে।
জানা গেছে, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির। তাই নিয়োগবিধি অনুযায়ী এ স্তরের শিক্ষকদের নিয়োগ এবং পদোন্নতি কার্যক্রম পিএসসির আওতাভুক্ত। এ কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি নিয়োগ দেয়া যায় না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সারাদেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (পুরনো) ৩৩০টি এবং সদ্য জাতীয়করণ হওয়া ১২ মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৩০টিতে প্রায় দুই হাজার সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। গত দুই মাস আগে বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে পিএসসিতে আবেদন করা হয়। সেটি প্রক্রিয়াধীন। বিসিএস থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে দীর্ঘসময় প্রয়োজন। এ কারণে বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এক কর্মকর্তা জানান, যেহেতু এখনও এ বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন, তাই চলমান প্রক্রিয়ায় ৩৭তম বিসিএস থেকে সহকারী শিক্ষক পদে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করতে পিএসসিতে চাহিদা পাঠানো হবে। শিক্ষক নিয়োগ দেয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য, তাই যে পদ্ধতিতেই যোগ্য শিক্ষকদের পাওয়া যাবে তাদের নিয়োগ দিয়ে শূন্য পদ পূরণ করা হবে।
গত ১২ জুন ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৩১৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এ বিসিএসে সাধারণ ক্যাডারে ৪৬৫ জন, স্বাস্থ্য ক্যাডারে ৩২৩ জন এবং কারিগরি ও সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে মোট ৫২৬ জনকে উর্ত্তীণ হন। আর নন-ক্যাডার পদের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছেন ৩ হাজার ৪৫৪ জন। পদ পাওয়া সাপেক্ষে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে।
৩৭তম বিসিএসে প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিতে ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে সে বছর ৩১ মার্চ থেকে ২ মে পর্যন্ত আবেদন প্রক্রিয়া চলে। একই বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হয় প্রিলিমিনারি টেস্ট। এতে অংশ নেন ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭৬ জন, যার মধ্যে উত্তীর্ণ হন ৮ হাজার ৫২৩ জন। এরপর ২০২৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি হতে শুরু হয় লিখিত পরীক্ষা। তাতে ৫ হাজার ৩৭৯ জন পাস করেন। এরপর ২৯ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। ক্যাডার নন-ক্যাডার মিলে চূড়ান্ত উত্তীর্ণ হন ৪ হাজার ৭৬৮ জন।