ইংল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান, ইতালিসহ বিশ্বের ৩৫ দেশের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতিবছরই বাড়ছে বিদেশ থেকে আসা এসব শিক্ষার্থীর সংখ্যা। বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ায় একদিকে বহির্বিশ্বে যেমন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে লাভবান হচ্ছে দেশ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২৫ তে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার এসব তথ্য উঠে এসেছে। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এ ব্যাপারে বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশের অনেক শিক্ষার্থী পড়ছেন, এটি একটি আশার কথা। ডিজিটালাইজেশনের ফলে দেশের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেয়ে এদেশে আসছেন তারা।
এ ছাড়া বিশ্বের স্বনামধন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইউজিসিসহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন স্মারক চুক্তির কারণেই বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী হচ্ছে বিদেশি শিক্ষার্থীরা। ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৩৭ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৬১ জন ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৯৭৭ জন বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়ন করছেন। ৩৭টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী পড়ছে। ২০১৬ সালে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সংখ্যা ছিল ৩৫৫ জন। এক বছরে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী বেড়েছে ১০৬ জন। যা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে ইউজিসি। দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সফিউল আলম বলেন, বর্তমানে দুই শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. আবদুল লতিফ জানান, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ জন বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। ইউজিসি সূত্র জানায়, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২০১০ সালে ৩৫৯ জন, ২০১১ সালে ২১০ জন, ২০১২ সালে ৫২৫ জন, ২০১৩ সালে ৩২৬ জন, ২০১৪ সালে ৪৩২ জন, ২০১৫ সালে ৫৯৩ জন বিদেশি ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত ছিল। এ ছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২০২৫ সালে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৭৭ জন। ২০১৬ সালে বেসরকারিতে বিদেশি শিক্ষার্থী ছিল ১ হাজার ৯২৭ জন। ২০১৫ সালে বিদেশি ছাত্রছাত্রী ছিল ১ হাজার ৫৪৮ জন। বিদেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীর তালিকায় ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, কম্বোডিয়া, ঘানা, ফিলিপাইন, সোমালিয়া, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ অন্য দেশগুলোরও নাম রয়েছে। বিদেশি শিক্ষার্থী এদেশে টানতে শিক্ষার গুণগত মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও উন্নীত করার পরামর্শ ইউজিসির।