সময় তালিকার প্রয়োজনীয়তা
ভূমিকা: জীবনকে আরও গতিময় ও প্রানবন্ত করার জন্য সময়তালিকার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অনেক। সময় তালিকার মাধ্যমে কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কর্ম দিবস ও সময়ে যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়।
করণীয় কাজ সম্পর্কে ধারণা হয়। কোন কাজগুলো বেশি এবং কোন কাজগুলো কম প্রয়োজনীয় সে সম্বন্ধে সঠিক ধারণা লাভ করা যায়।
সময়মতো কাজ করার অভ্যাস গড়ে উঠে। কাজের সময় নির্ধারিত থাকে বলে সময়ের কাজ সময়ে করার অভ্যাস গড়ে ওঠে।
প্রতিটা কাজে কতটুকু সময় ব্যয় হয় তার ধারণা জন্মে। কাজের দক্ষতা ও গতিশীলতা বাড়ে। সময়-তালিকা অনুসরণ করলে সময় মত কাজ শেষ হয়ে যায়। বাড়তি সময়ে বিভিন্ন রকম সৃজনশীল কাজের সুযোগ পাওয়া যায়।
বিশ্রাম, অবসর ও বিনোদন করা সম্ভব হয়। কারণ, সময়-তালিকায় কাজ , বিশ্রাম ও অবসর বিনোদনের ব্যবস্থা থাকে।
ছোটবেলা থেকেই আমাদের সবারই সময়ের প্রতি যত্নবান হওয়া দরকার। সময় মতো সব কাজ করলে কাজ জমে যায় না। ফলে প্রয়োজনীয় কাজগুলো সহজেই সম্পন্ন করা যায়।
যেমন- ছাত্রছাত্রীরা যদি প্রতিদিনের পড়ালেখা সময়মত সম্পন্ন করে, তাহলে সে খুব সহজে কৃতকার্য হতে পারবে। আর যে সময় মত পড়ালেখা করে না, পরীক্ষার সময় পড়া তার কাছে বোঝা মনে হবে।
সময় মত পড়ালেখা না করার জন্য তখন এই সমস্যা তৈরি হবে।
তাইতো একটি প্রচলিত বচন আছে যে- “সময়ের এক ফোঁড় , অসময়ের দশ ফোঁড়।”
সময় তালিকা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নিচে সময় তালিকা প্রণয়নের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করা হলো:
১. সময় ব্যবস্থাপনা ও দক্ষতা বৃদ্ধি:
সময় তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে প্রতিদিনের কাজগুলো সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করা যায়। এটি কাজে গতি এনে দেয় এবং সময়ের অপচয় কমায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলে ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
২. প্রাধান্য নির্ধারণ:
কোন কাজগুলো আগে করতে হবে এবং কোনগুলো পরে করা যেতে পারে, তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয় সময় তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি কাজগুলো সঠিক সময়ে সম্পন্ন হয়, ফলে অপ্রয়োজনীয় কাজগুলোতে সময় নষ্ট হয় না।
৩. উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি:
নিয়মিত সময় তালিকা অনুসরণ করলে কাজের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। কাজের চাপ কমে এবং একটানা কাজ করার মানসিক ক্লান্তি দূর হয়। সময় তালিকা অনুযায়ী কাজ করলে নির্দিষ্ট সময়ে অধিক পরিমাণ কাজ করা সম্ভব হয়।
৪. স্ট্রেস কমানো:
সুশৃঙ্খল সময় ব্যবস্থাপনা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। সময় তালিকা থাকলে কাজের সঠিক ধারণা পাওয়া যায়, যা স্ট্রেস কমায় এবং কাজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
৫. লক্ষ্য অর্জন:
ব্যক্তিগত এবং পেশাগত লক্ষ্যগুলো নির্ধারণের পর, সেগুলো পূরণের জন্য সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন। সময় তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্য অর্জন করা সহজ হয়।
৬. প্রক্রিয়াগত উন্নতি:
সময় তালিকা প্রণয়নের ফলে নিজের কাজের ধারাবাহিকতা এবং প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করা যায়। এতে কোন কাজগুলোতে বেশি সময় লাগে, কোনগুলো কম সময়ে করা যায়, তা নির্ধারণ করে প্রক্রিয়া উন্নত করা সম্ভব হয়।
৭. কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য:
সময় তালিকা প্রণয়ন করলে কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা সহজ হয়। কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় এবং ব্যক্তিগত সময়ের জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করে কর্ম ও বিশ্রামের সমন্বয় সাধন করা যায়।
সময় তালিকা প্রণয়ন করলে কাজগুলো আরও কার্যকর এবং সময়মতো সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুশৃঙ্খলতা আনয়ন করে এবং দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের পথ সুগম করে।
আরও দেখুনঃ