শিক্ষা সংবাদ

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে ই-মনিটরিং ব্যবস্থা

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে ই-মনিটরিং ব্যবস্থা। জানুয়ারি থেকে দেশের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ পদ্ধতিতে পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শন করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।বুধবার (১২ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) ৬৪ জেলায় ই-মনিটরিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন। প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শন ব্যবস্থা ডিজিটালকরণে ই-মনিটরিং সিস্টেম নামে এ ব্যবস্থার প্রণয়ন করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ও সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ।

শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মতে, কাগজভিত্তিক স্কুল মনিটরিং সিস্টেমটি স্কুল পর্যবেক্ষণ চিত্রকে যথাযথভাবে প্রতিফলিত করে না। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন (এম অ্যান্ড ই) বিভাগে সরবরাহ করার আগে বিভিন্ন স্তর থেকে পর্যবেক্ষণ তথ্য একাধিকবার সমন্বয় করা হয়। এর ফলে কোনো বিদ্যালয়ের মূল অবস্থার বিস্তারিত তথ্য হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

অন্যদিকে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনায় নথি ঘেটে পরিদর্শন প্রতিবেদন বের করতে হয় কর্মকর্তাদের। এ প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ। তাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ও সেভ দ্য চিলড্রেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা ডিজিটাল করতে ই-মনিটরিং ব্যবস্থার উদ্ভাবন ও চালু করেছে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হাসান বলেন, সারা দেশের প্রায় ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় মনিটরিং করা জটিল কাজ। এ জন্য দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়। এ কারণে ই-মনিটরিং পদ্ধতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা যে তথ্য ছক ব্যবহার করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যবেক্ষণ করেন তার ওপর ভিত্তি করেই অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক ই-মনিটরিং সিস্টেম চালু করেছে সেভ দ্যা চিলড্রেনের আইসিটি টিম। স্কুল পর্যবেক্ষণের সারসংক্ষেপ এবং পর্যবেক্ষণের গুণগত ও পরিমাণগত তথ্য ওয়েবভিত্তিক ড্যাশবোর্ডে আপলোড করা হবে। ফলে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা স্মার্টফোন বা ট্যাব ব্যবহার করে বিদ্যালয় পর্যবেক্ষণের তাৎক্ষণিক তথ্য (রিয়েল টাইম ডাটা) সংগ্রহ করতে পারবেন।

তিনি বলেন, সার্ভারে তথ্য আপলোডের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন বিভাগ তা পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাবে। ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম থেকে শিক্ষা কর্মকর্তারা দক্ষতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহের সুযোগ পাবেন।

মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ২০১৫ সালে গাজীপুর ও মানিকগঞ্জের পাঁচটি উপজেলায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে ই-মনিটরিং সিস্টেম চালু হয়। পরে ২০১৬-১৮ পর্যন্ত আরও ৮০টি উপজেলায় ই-মনিটরিং ছড়িয়ে দেয়া হয়। মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য ৬৪ জেলা থেকে তৈরি করা হয়েছে মাস্টার ট্রেইনার।

এ ছাড়া ২০২৫ সালের আক্টোবরে ঢাকা মেট্রোপলিটনের ১২ থানার শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের ঘোষণার মাধ্যমে ২০২৫ সালের মে মাসে এ সব থানা পেপারলেস মনিটরিং এলাকায় পরিণত হয়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশব্যাপী কাগজবিহীন স্কুল পরিদর্শন ব্যবস্থা ই-মনিটরিং বাস্তবায়নে অধিদফতর ৩৭২০টি ট্যাব কিনেছে। ই-মনিটরিং কাজে ব্যবহারের জন্য আক্টোবর-নভেম্বরে দেশব্যাপী মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাঝে তা বিতরণ করা হয়। ২০২৫ সালে জানুয়ারি থেকে ৬৪টি জেলায় ই-মনিটরিং কার্যক্রম সম্প্রসারিত ও বাধ্যতামূলক করা হবে।

মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, এ কার্যক্রম সময় ও পেপার ওয়ার্ক কমিয়েছে। এর ফলে শিক্ষাবিষয়ক নীতি নির্ধারকরা আরও সহজে অগ্রাধিকার শনাক্ত করতে পারবেন। শিক্ষা বিভাগের কর্মক্ষমতা, নিরীক্ষণ এবং কার্যকরভাবে নির্দিষ্ট কাজের ফলাফল মূল্যায়নে সাহায্য করবে ই-মনিটরিং।

About Author

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.