শিক্ষা সংবাদ

সাড়ে ৭ হাজার কলেজ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, কলেজ শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নে অধ্যক্ষদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। নতুন করে আরও সাত হাজার কলেজ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে কলেজ থেকে মানসম্পন্ন শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে সাড়ে ৭ হাজার কলেজ শিক্ষককে দেশে বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ১৩০ মিলিয়ন ডলার খরচে কলেজ শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে ৭ হাজার এবং মালয়শিয়ায় ৫০০ কলেজ শিক্ষককে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোববার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ‘কলেজ শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের’ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এতথ্য জানান।

নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, কলেজগুলোতে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকার কাজ করে চলেছে। শিক্ষার মনোন্নয়নে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩৩ হাজার ভবন নির্মাণ করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টিতে আমরা কাজ করে চলেছি। শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রাথমিক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ে অনেকগুলো প্রকল্প চলমান রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় সরকার প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে কাজ করছে।বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার ধারা নিয়ে আসতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চাহিদা অনুযায়ী টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

নাহিদ বলেন, বিগত কিছুদিনের মধ্যে ২টি ঘোষণা দিয়েছি। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা স্বল্প খরচে রক্ত পরীক্ষা করেই ক্যান্সারের অস্তিত্ব নির্নয় এবং গবাদি প্রাণির ক্ষুরা রোগের প্রতিকার আবিষ্কার করেছেন। আবিষ্কারগুলোর প্যাটেন্ট আবেদন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণাধর্মী শিক্ষার চর্চা বাড়াতে কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, আমরা সার্বজনিন শিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। শিক্ষার মানোন্নয়নে ক্লাসরুমে ও প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তরুণ প্রজন্মকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে তাদের দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করতে হবে। দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে কারিগরি শিক্ষার তুলনা নেই। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। বর্তমানে ১৫ শতাংশ শিক্ষর্থী কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে। ২০২৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এ হার ২০ শতাংশ এবং ২০৩০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এ হার ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষকরা আমাদের মাথার মণি। তারাই শিক্ষা পরিবারের মূল চালিকা শক্তি। তবে শিক্ষকদের নিয়মনীতি মানতে না চাওয়ার বিষয়টি দু:খজনক।

কর্মশালায় উপস্থিত সরকারি বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অধ্যক্ষদের বাস্তব সম্মত পরিকল্পনার মাধ্যমে সবাইকে নিয়ে কাজ করে কলেজের উন্নয়ন করতে হবে। শিক্ষার মানোন্নয়নে কি করা উচত সেই নির্দেশনা শিক্ষকরাই দিবেন। পূর্বে কলেজ শিক্ষার মানোন্নয়ন আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ ছিলো। কিন্তু তা এখন অনেকটাই স্থিতিশীল পর্যায়ে এসেছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন, অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহমুদ উল হক, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, বিশ্বব্যাংকেরে সিনিয়র অপারেশন অফিসার ড. মোখলেসুর রহমান, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যারয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম এ মান্নান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ড. নাজমা শাহীন এবং সিইডিপি প্রকল্প পরিচালক এ কে এম মুখলেছুর রহমান এবং সরকারি বেসরকারি অনার্স মাস্টার্স পর্যায়ের ৩০০ টি কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষরা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, শিক্ষার উন্নয়নে প্রকল্পগুলো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা কাজ করে চলেছি। প্রকল্পগুলোর টাকার ১০০ ভাগ বাংলাদেশ সরকারের। বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে এ টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। তাই এ টাকার অপচয় রোধ করে প্রকল্পের লক্ষ অর্জনে সকলকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কলেজ শিক্ষার উন্নয়ন প্রকল্পের বিভিন্ন দিক প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।

About Author

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.