আরও পাঁচ বেসরকারি কলেজকে সরকারি করা হয়েছে। সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ২৫ আগস্ট থেকে এসব কলেজ সরকারিকরণ কার্যকর হবে। ঈদের আগে গত ১২ আগস্ট ২৭১টি বেসরকারি কলেজকে সরকারিকরণ করা হয়। এই পাঁচটি নিয়ে এখন দেশে মোট সরকারি কলেজ ও সমমানের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬০৩টিতে।
পাঁচ কলেজ হলো-
- রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর কলেজ,
- দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার কাহারোল ডিগ্রি কলেজ,
- খানসামা উপজেলার পাকেরহাট ডিগ্রি কলেজ,
- রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলার বালিয়াকান্দি কলেজ এবং
- বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার শহীদ শেখ আবু নাসের মহিলা ডিগ্রি কলেজ।
এখন সরকারি হওয়া শিক্ষকদের অবস্থান, বদলি ও পদোন্নতি বিষয়গুলো নির্ধারণ করা হবে নতুন বিধিমালা অনুযায়ী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ২০১০ সালে সরকারি স্কুল ও কলেজবিহীন উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে ৩২৯টি স্কুল ও ২৯৯টি কলেজ জাতীয়করণে সম্মতি দেন প্রধানমন্ত্রী। সম্মতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মাউশির (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর) কর্মকর্তারা সরজমিন পরিদর্শন করে স্থাবর, অস্থাবর সম্পদ, শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত তথ্যসহ আনুষঙ্গিক সব তথ্য সংগ্রহ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনের সব সম্পত্তি সরকারকে ডিড অব গিফট (দানপত্র) দলিল করে দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা। স্কুলগুলো ধাপে ধাপে জাতীয়করণ করা হলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতির চাপে আটকে যায় কলেজ সরকারিকরণ।
এর আগে মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি কলেজ শাখার এক কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিপ্রাপ্ত ২৯৩টি কলেজ সরকারি করতে অর্থ ছাড়ের সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয় প্রতি বছর ১০০ কলেজ জাতীয়করণের প্রস্তাব দিয়ে গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়েছিল। তিন ধাপে জাতীয়করণ হলে অসম প্রতিযোগিতা ও ঘুষ দুর্নীতির আশঙ্কায় একসঙ্গে জাতীয়করণ করতে পাল্টা চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত গড়ালে শেষ পর্যন্ত পিছু হটে অর্থ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখার এক কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থবছরের বাজেটে স্কুল-কলেজ জাতীয়করণে অর্থ মন্ত্রণালয় কোনো বরাদ্দ রাখেনি। জাতীয়করণসহ চার হাজার ৯৭১ কোটি ৬০ লাখ টাকা বাড়তি বরাদ্দ চেয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখেন সচিব মো. সোহরাব হোসাইন।
চিঠিতে তিনি লেখেন, ৩২৯টি স্কুল ও ২৯৯টি কলেজ সরকারিকরণের কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তবে সরকারিকরণ কার্যক্রমের জন্য চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়নি। ২০২৫-১৯ অর্থবছরের বাজেটে নতুন সরকারিকরণকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ শুরু হচ্ছে। এজন্য আগামী অর্থবছরে সরকারিকরণকৃত ৩২৭টি স্কুলের জন্য ৩৪৯ কোটি ৪০ লাখ ৬০ হাজার এবং ২৯৯টি কলেজের জন্য ৬২৬ কোটি ৯৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রয়োজন। দেশে বর্তমানে ৩৩৫টি সরকারি কলেজ রয়েছে। ৩১৫টি উপজেলায় কোনো সরকারি কলেজ নেই।