Business Ventures

প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশা করছি সবাই ভালো আছো। তোমরা কি ৯ম শ্রেণি দ্বাদশ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২৪ ব্যবসায় উদ্যোগ বিষয় এর উত্তর সম্পর্কে ধারণা নিতে চাচ্ছো? কিংবা এসাইনমেন্টটি কিভাবে প্রস্তুত করতে হয় সে সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? তাহলে বলবো তোমরা ঠিক ওয়েবসাইটে এসেছো। তোমাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটিতে রয়েছে ৯ম শ্রেণির দ্বাদশ সপ্তাহের ব্যবসায় উদ্যোগ অ্যাসাইনমেন্টের বাছাইকরা উত্তরসফল উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনে যে সকল গুণাবলীর প্রভাব রয়েছে সেগুলো ব্যাখ্যা।

মূল্যায়নের লক্ষ্যে প্রকাশিত নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দ্বাদশ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে সম্পন্ন করার পর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষকের নিকট জমা দিবে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকেরা মূল্যায়ন করে যথাযথ নিয়মে সংরক্ষণ করবেন। তোমাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটিতে রয়েছে ৯ম শ্রেণি দ্বাদশ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২৪ ব্যবসায় উদ্যোগ এর বাছাইকরা সমাধান

৯ম শ্রেণি ২০২৪ দ্বাদশ সপ্তাহ ব্যবসায় উদ্যোগ অ্যাসাইনমেন্ট

https://i.imgur.com/fu2BuMy.jpg

অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ:

সুমন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কক্সবাজারে এক হােটেল স্থাপন করেন। বাচ্চাদের খেলার জন্য হােটেলের সামনে একটি ছােট পার্ক স্থাপন করেন। এক বছর তার ব্যবসায় লাভের মুখ দেখেনি। তিনি চিন্তিত না হয়ে টেলিভিশন, পত্রিকা ও সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করেন এবং হােটেল ভাড়ার ৩০% ছাড়ের ব্যবস্থাসহ সকালের নাস্তা ফ্রি করেন। ফলে প্রবর্তীতে তার হােটেলে লােকসমাগম হতে থাকে এবং আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। আয়ের ৫% তিনি কর্মচারীদের মাঝে বণ্টন করেন। তার ব্যবসায় উত্তরােত্তর সফলতা লাভ করেন। উপরের কেস স্টাডি থেকে সুমনের সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে যে সকল গুণাবলি প্রভাব রেখেছে সেগুলাে ব্যাখ্যা করাে;

নির্দেশনা:

  • ক) পাঠ্যপুস্তকের সংশ্লিষ্ট অধ্যায়টি ভালােভাবে পড়ে নিতে হবে;
  • খ) উপরের শ্রেণির বইযের সাহায্য নেয়া যেতে পারে;
  • গ) ভাচুয়াল মিডিয়ার সাহায্যে শিক্ষকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে বা প্রযােজনে অভিভাবকের সাহায্য নেয়া যেতে পারে;

৯ম শ্রেণির দ্বাদশ সপ্তাহের ব্যবসায় উদ্যোগ অ্যাসাইনমেন্টের বাছাইকরা উত্তর

ব্যবসায় উদ্যোগ এর ধারণা :

একটি ব্যবসায় স্থাপনার ধারণা চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু করে ব্যবসায়টি স্থাপন ও সফলভাবে পরিচালনাই ব্যবসায় উদ্যোগ। বিশদ ভাবে বলতে গেলে, ব্যবসায় উদ্যোগ বলতে বোঝায় লাভবান হওয়ার আশায় লোকসানের সম্ভাবনা জেনেও ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের জন্য দৃঢ় ভাবে এগিয়ে যাওয়া ও সফলভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করা।

প্রতিটি স্কুলে কোনাে না কোনাে সময়ে শিক্ষা সফর হয়ে থাকে। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে একজন প্রস্তাব দিল যে, ঐ শ্রেণির সকল শিক্ষার্থী নিয়ে শিক্ষা সফর আয়ােজনে সব প্রকার সহযােগিতা সে করবে। কাজটি বেশ কষ্টসাধ্য এবং কিছুটা সৃজনশীলতা তাে রয়েছে। এই যে, একজন শিক্ষার্থী শিক্ষা সফর করা নিয়ে মূল ভূমিকা পালন করল, এটি এক ধরনের উদ্যোগ। সাধারণভাবে যে কোনাে কাজের কর্ম প্রচেষ্টা বা তৎপরতাই উদ্যোগ। ব্যবসায় কোনাে একজন ব্যক্তি বা কয়েকজন ব্যক্তির সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল।

মানুষের অপরিসীম চাহিদা পূরণের প্রচেষ্টা থেকেই মূলত: অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে শুরু। এরূপ গতিশীল ও সৃজনশীল অর্থনেতিক কর্মকাণ্ডের রূপকার হলেন উদ্যোক্তা বা ব্যবসায় উদ্যোক্তা বা শিল্পোদ্যোক্তা। ইংরেজি Entrepreneur শব্দটি ফরাসি Entreprendre শব্দ হতে উদ্ভব হয়েছে যার অর্থ হল “To undertake” অর্থাৎ কোন কিছুর দায়িত্ব গ্রহণ করা। অর্থাৎ উদ্ভাবন এবং ব্যবসায়ের মাধ্যমে প্রয়ােজন ও অভাব পূরণ করা।

উদ্যোগ ও ব্যবসায় উদ্যোগ এর পার্থক্যঃ

সাধারণ অর্থে যে কোন কাজের কর্মপ্রচেষ্টাই উদ্যোগ। উদ্যোগ যেকোনাে বিষয়েই হতে পারে। ব্যবসায় উদ্যোগ বলতে বােঝায় লাভবান হওয়ার আশায় লােকসানের সম্ভাবনা জেনে ও ঝুকি নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা জন্য দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়া ও সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা।

যে ব্যক্তি দৃঢ় মনােবল ও সাহসিকতার সাথে ফলাফল নিশ্চিত জেনেও ব্যবসায় স্থাপন করেন ও সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেন, তিনি ব্যবসায় উদ্যোক্তা বা শিল্পোদ্যোক্তা। সুতরাং বলা যায় ব্যবসায় উদ্যোগ এবং উদ্যোক্তা শব্দটি একটি অন্যটির সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। উদ্দীপকে সুমন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কক্সবাজারে একটি আধুনিক হােটেলে স্থাপন করেন।

ব্যবসায় উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য :

উদ্যোগ যে কোন বিষয়ের ব্যাপারেই হতে পারে কিন্তু লাভের আশায় ঝুঁকি নিয়ে অর্থ ও শ্রম বিনিয়োগ করাই হলো ব্যবসায় উদ্যোগ। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মনে কর তুমি বাঁশ ও বেত দিয়ে সুন্দর সুন্দর জিনিস তৈরি করতে পার। এখন নতুন এক ধরনের বেতের চেয়ার দেখে সেটা বানানোর চেষ্টা করলে। এটি তোমার উদ্যোগ। এখন তুমি যদি অর্থসংগ্রহ করে বাঁশ ও বেতের সামগ্রি তৈরির দোকান ন্থাপন করে সফলভাবে ব্যবসায় পরিচালনা কর, তখন এটি হবে ব্যবসায় উদ্যোগ।

ব্যবসায় উদ্যোগের ধারণা বিশ্লেষণ করলে যে সকল বৈশিষ্ট্য ও কার্যাবলি লক্ষ্য করা যায় তা হলো:

  • ১। এটি ব্যবসায় স্থাপনের কর্ম উদ্যোগ। ব্যবসায় স্থাপনসংক্রান্ত সকল কর্মকাণ্ড সফলভাবে পরিচালনা করতে ব্যবসায় উদ্যোগ সহায়তা করে।
  • ২। ঝুঁকি আছে জেনেও লাভের আশায় ব্যবসায় পরিচালনা। ব্যবসায় উদ্যোগ সঠিকভাবে ঝুঁকি পরিমাপ করতে এবং পরিমিত ঝুঁকি নিতে সহায়তা করে।
  • ৩। ব্যবসায় উদ্যোগের ফলাফল হলো একটি ব্যবসার প্রতিষ্ঠান । এর মানে হলো ব্যবসায় উদ্যোগ সম্পর্কে ধারণা কোনো চিন্তা ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়তা করে।
  • ৪। ব্যবসায় উদ্যোগের অন্য একটি ফলাফল হলো একটি পণ্য বা সেবা।
  • ৫। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি সফলভাবে পরিচালনা।
  • ৬। নিজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা নিজের উপার্জনের ব্যবস্থা করতে পারেন।
  • ৭। অন্যদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। ব্যবসায় উদ্যোগ মালিকের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অন্যদের জন্যও কর্মসংস্থানের সূযোগ সৃষ্টি করেন।
  • ৮। নতুন সম্পদ সৃষ্টি করা। ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে যেমন মানবসম্পদ উন্নয়ন হয় তেমনি মূলধনও গঠন হয়।
  • ৯। সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা। ব্যবসায় উদ্যোগ দেশের আয় বৃদ্ধি ও বেকার সমস্যার সমাধানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও অবদান রাখতে পারে।
  • ১০। মুনাফার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা গ্রহণ করা। ব্যবসায় উদ্যোগ উদ্যোক্তাদের সমাজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে অণুপ্রাণিত করে।

উদ্যোক্তা :

উদ্যোক্তা হলেন ব্যবসায় বা শিল্পের নেতা। তিনি যেভাবে নেতৃত্ব দেন ব্যবসায় বা শিল্পও সেভাবে গতিপ্রাপ্ত হয়। যদিও অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মীথ ও ডেভিড রিকার্ডো অর্থনৈতিক উন্নয়নে উদ্যোক্তার ভূমিকাকে তেমন কোনো স্বীকৃতি দেননি। কিন্তু আধুনিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে উদ্যোক্তার ভূমিকা আজ সর্বজন স্বীকৃত।

সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনে যে সকল গুণাবলীর প্রভাব রয়েছে :

১. দূরদর্শিতা: দুরদৃষ্টিসম্পন্ন উদ্যোক্তা ভবিষ্যত পরিবর্তনশীল বিভিন্ন অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে পূর্বানুমান করতে পারেন এবং অর্থনৈতিক মূল্যসম্পন্ন নানা পণ্য সামগ্রী, সেবাকর্ম, ধারণা, বাজার ও উৎপাদন প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করে নিজের ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে।

২. কৃতিত্বার্জন প্রেষণা: কৃতিত্বার্জন প্রেষণা হল একজন মানুষের নতুন কিছু করার আকাঙ্খা। প্রত্যেক মানুষের মাঝে কম বেশি কৃতিত্বার্জন আকাঙ্খা বিদ্যমান থাকে। যে ব্যক্তির ভিতরে যত বেশি কৃতিত্বার্জনের আকাঙ্খা বিদ্যমান থাকবে সে ব্যক্তি তত বেশি উদ্যোক্তা হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠালাভ করবে। ডেভিড সি. ম্যাক্লিল্যান্ড এ ধারণার প্রবক্তা।

৩. উদ্ভাবনী শক্তি: সফল উদ্যোক্তা অবশ্যই একজন সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তি। ভবিষ্যত সম্ভাব্য চাহিদা ও প্রয়োজনের সাথে সঙ্গতি রেখে উদ্যোক্তা নতুন নতুন পণ্য বা সেবা ধারণা, কর্মপন্থা, উৎপাদন কৌশল, বাজারে নব নব প্রযুক্তি ব্যবহার, তহবিল ও নতুন কাঁচামালের উৎস সন্ধানের প্রয়াস চালান।

৪. ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা: যে কোনো আর্থিক উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে লোকসান বা ক্ষতির ঝুঁকি থাকে। আবার ঝুঁকি গ্রহণ ছাড়া মুনাফা অর্জন সম্ভব নয়। যে উদ্যোক্তার মধ্যে বেশি ঝুঁকি গ্রহণের মনোবল আছে সে উদ্যোক্তা তত বেশি সফল।

সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনে যে সকল গুণাবলীর প্রভাব রয়েছে

৫. সাংগঠনিক দক্ষতা: ব্যবসায়ের জন্য প্রয়োজনীয় উপায় উপকরণ সুষ্ঠুভাবে সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ ও যথাযথভাবে কাজে লাগানোর উপর প্রতিষ্ঠানিক সফলতা নির্ভর করে। এ কারণে একজন উদ্যোক্তার সাংগঠনিক দক্ষতা থাকা বাঞ্ছণীয়।

৬. প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা: উদ্যোক্তা হিসেবে জন্মগত কিছু গুণাবলি থাকা সত্ত্বেও প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় জগতে টিকে থাকতে হলে তাঁকে প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। প্রশিক্ষণ, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে উদ্যোক্তা আরো দক্ষ হয়ে ওঠে।

৭. ধৈর্য্য ও কষ্টসহিষ্ণুতা: বর্তমান প্রতিযোগিতাপূর্ণ ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবসায় জগতে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনার জন্য উদ্যোক্তাকে অত্যন্ত ধৈর্য্যশীল ও পরিশ্রমী হতে হয়। বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে ধৈর্য্যরে সাথে নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে উদ্যোক্তা উদ্দেশ্য হাসিল করে।

পৃথিবীর বিভিন্ন শিল্পোন্নত দেশকে লক্ষ করলে দেখা যায়, তাদের উন্নতির প্রধান কারণ হলো নতুন নতুন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপনা, পরিচালনা ও সম্প্রসারণের অনুকূল পরিবেশ। বাংলাদেশে মেধা, উদ্যোগ, মনন ও দক্ষতার অভাব না থাকলেও ব্যবসায় উদ্যোগ গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ মোটেই সন্তোষজনক নয়।

ব্যবসায় উদ্যোগ গড়ে ওঠা ও বিকাশের জন্য একজন উদ্যোক্তার নিচের অনুকূল পরিবেশ থাকা আবশ্যক :

১। উন্নত অবকাঠামো: ব্যবসায় স্থাপনা ও পরিচালনার জন্য যে সকল সুযোগ-সুবিধা যেমন: বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদি প্রয়োজন তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা।

২। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা: একটি দেশের ব্যবসায় বান্ধব পরিবেশ গঠনে সবচেয়ে সহায়ক ভুমিকা পালন করে রাষ্ট্র তথা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা। কারণ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের ব্যবসায় উদ্যোগের সম্প্রসারণ ও সমৃদ্ধি ঘটে থাকে। কর অবকাশ, স্বল্প বা বিনা সুদে ঋণ প্রদান, মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানিতে এবং উৎপাদিত পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক সুবিধা প্রদান ইত্যাদি ব্যবসায় উদ্যোগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে।

৩। আর্থ-সামাজিক স্থিতিশীলতা: যে কোনো দেশের ব্যবসায় উদ্যোগের সমৃদ্ধি তথা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হলে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা জরুরি। এগুলোর অস্থিরতা ব্যবসায় উদ্যোগের উপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলে।

সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনে যে সকল গুণাবলীর প্রভাব রয়েছে

৪। অনুকূল আইন-শৃঙ্ঘলা ও নিরাপত্তা: দেশের সুষ্ঠু ও সাবলীলভাবে ব্যবসায় পরিচালনা ও সম্প্রসারনের জন্য অনুকূল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রয়োজন। এ কারণে মানুষের জান ও মালের নিরাপত্তা বিধান না করতে পারলে ব্যবসায়ের অগ্রগতি সম্ভব নয়।

৫। প্রশিক্ষণের সুযোগ- সুবিধা: টেকসই ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবসায় উদ্যোগের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। যত বেশি প্রশিক্ষণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে, তত বেশি মানসম্মত পণ্য ও সেবা উৎপাদনকারী শিল্প, কল-কারখানা বিনির্মাণ সম্ভব হবে।

৬। পর্যান্ত মূলধনের সহজপ্রাপ্যতা: যে কোনো ব্যবসায় উদ্যোগ সফল ও দক্ষতার সাথে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ পুঁজি বা মূলধন। উপযুক্ত সময়ে ও সঠিক পরিমাণ মূলধনের অভাবে অধিকাংশ ব্যবসায় স্থাপন ও পরিচালনা সম্ভব হয় না। তাই দেশে এরূপ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ঘটাতে হবে যাতে ব্যবসায় উদ্যোগে কোনো পুঁজির ঘাটতি না হয়।

সফল উদ্যোক্তার ব্যবসায় উদ্যোগ নিম্নোক্তভাবে আমাদের দেশের অর্থ সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে :

ক ) আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ব্যবসায় উদ্যোগের গুরুত্ব (Importance of Business Entrepreneurship in Socio Economic Development) : বাংলাদেশ একটি উন্নয়শীল দেশ। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১০ অনুযায়ী আমাদের মােট জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ৫০ ভাগ আসে সেবা খাত থেকে, প্রায় ২০ ভাগ আসে কৃষি খাত থেকে আর বাকি ৩০ ভাগ আসে শিল্প খাত থেকে। যে কোনাে দেশের উন্নয়নে শিল্পখাত মুখ্য ভূমিকা পালন করে। ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে শিল্পখাতসহ সকল খাতেরই উন্নয়ন সম্ভব। ব্যবসায় উদ্যোগ নিম্নোক্তভাবে আমাদের দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।

খ ) সম্পদের সঠিক ব্যবহার : ব্যবসায় উদ্যোগ আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ও মানব সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে। তাছাড়া নতুন নতুন শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে বিনিয়ােগ বৃদ্ধি এবং সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব।

গ ) জাতীয় উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি : ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের জাতীয় আয় বৃদ্ধি পায়। ফলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত জাতীয় আয় বৃদ্ধির লক্ষমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়।

ঘ ) নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি : সরকারের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমেও দেশে শিল্প কারখানা স্থাপন, পরিচালনা ও সম্প্রসারণ হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে নিত্যনতুন কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি হয় যা বেকার সমস্যা দূর করতে উল্লেখযােগ্য ভূমিকা রাখে।

ঙ ) দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি : বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। আমাদের এই বিশাল জনসংখ্যাই আমাদের সম্পদ হতে পারে। কারণ ব্যবসায় উদ্যোক্তা দেশের অদক্ষ জনগােষ্ঠীকে উৎপাদনশীল কাজে নিয়ােজিত করে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করতে পারে।

চ ) পরনির্ভরশীলতা দূরীকরণ : ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রনির্ভরশীলতা অনেকাংশে হ্রাস করতে পারি। ব্যবসায় উদ্যোগের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা একদিন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারব।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.