Education tour

শিক্ষা সফর অনুচ্ছেদ লিখন ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ শ্রেণি। শিক্ষা সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এইজন্য যে, এটি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সহমর্মিতা ও ভাবের আদান-প্রদান ঘটায়। একটি শিক্ষা সফরের অভিজ্ঞতা – একটি স্মরণীয় স্মৃতি নিয়ে গল্পগুলো আজ আপানদের সাথে শেয়ার করবো।

শিক্ষা সফর অনুচ্ছেদ লিখন ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ শ্রেণি

বৈচিত্র্যের সন্ধানী মানুষ কখনাে স্থির হয়ে বসে থাকতে পারে না। নতুন আকর্ষণে মানুষ প্রতিনিয়ত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে। দেশ সফর মানুষের জ্ঞান সঞ্চয়ের ও অবকাশ যাপনের একটি উৎকৃষ্ট পন্থা। এতে অভিজ্ঞতা বাড়ে এবং হৃদয়ের প্রসার ঘটে। এই উদ্দেশ্যগুলােকে সামনে রেখে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষাসফরের আয়ােজন করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীরা বই-পুস্তক পাঠ করে দেশ-বিদেশের ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্থান ও বস্তুসমূহের সম্বন্ধে অনেক কিছু জানতে পারে। কিন্তু নিজের চোখে দেখলে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা লাভ হয় অনেক বেশি।

বই পড়ে কোনাে একটি স্থান ও বিষয় সম্বন্ধে জ্ঞানার্জন সম্পূর্ণ হয় না বলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর ছাত্রদের শিক্ষাসফরের ব্যবস্থা করেন। এর অন্যতম উদ্দেশ্য একাডেমিক প্রয়ােজন মেটানাে। কিন্তু শিক্ষা সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এইজন্য যে, এটি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সহমর্মিতা ও ভাবের আদান-প্রদান ঘটায়। ছাত্ররা জাতির মেরুদণ্ড, ছাত্রদের সুশিক্ষা দানের মধ্যে রয়েছে দেশ গড়ার কার্যকারিতা। আর হাতে-কলমে শিক্ষা গ্রহণই সুশিক্ষার অন্যতম পন্থা যা শিক্ষা। সফরের মাধ্যমে সম্ভব। শিক্ষা শুধু বইয়ের কয়েকটা পাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শিক্ষার আলো সর্বত্রই বিচরণ করে। আর শিক্ষা সফর সেই আলোকে ছড়িয়ে দেয় উন্মুক্ত আকাশে। শিক্ষা সফরের মূল আনন্দ হলো প্রকৃতির আবার সৌন্দর্য্যকে প্রাণ খুলে অবলোকন করা। কিছুটা সময় প্রকৃতির মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলা এবং প্রকৃতির মাঝেই নিজেকে আবিষ্কার করা এ এক অদ্ভুত অনুভূতি। ভ্রমণের আনন্দ একে অন্যের সাথে ভাগাভাগি করার মাধ্যমে সেই অনুভূতি হয়ে উঠে আনন্দের মহাসমুদ্র।

শুধু যে আনন্দই শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্য তা কিন্তু নয়। শিক্ষা সফরের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। শিক্ষা সফরের মাধ্যমে শিক্ষার্থী অনেক স্থান এবং ওই স্থানের জীবন যাপনের ধরণ এবং বিভিন্ন ধরণের সংস্কৃতির সম্পর্কে জানতে পারে। তাদের কল্পনা শক্তি বৃদ্ধি পায়। শরীর এবং মননের বিকাশ ঘটে। পড়াশুনার একঘেমেয়ি দূর হয়। মন প্রফুল্ল থাকে যা পরবর্তীতে শিক্ষার্থীকে পূনরায় পড়াশুনায় উজ্জীবিত করে। সুতরাং শিক্ষা সফরের গুরুত্ব অত্যধিক ও অপরিসীম।

একটি শিক্ষা সফরের অভিজ্ঞতা – একটি স্মরণীয় স্মৃতি

একটি শিক্ষা সফরের অভিজ্ঞতা: ভ্রমণ বা শিক্ষা সফর মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করে। শিক্ষা সফর বা ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষ পৃথিবীর এবং নিজের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারে। কোন বিশেষ অঞ্চলের ভ্রমণের মাধ্যমে আমরা সে অঞ্চলের সংস্কৃতি ভাষা প্রাকৃতিক বৈচিত্র সহ সার্বিক বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে পারি। ভ্রমণ মানুষের জীবনের ক্লান্তি দূর করে মানসিক প্রশান্তি আনতে সাহায্য করে। আজকে আমি তোমাদের সাথে আমার জীবনের একটি সুন্দর একটি শিক্ষা সফরের অভিজ্ঞতা বিষয়ে আলোচনা করব।

আপনার জন্য বাছাইকৃত

Shikkha Sofor Assignment

ভূমিকা:

আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব কেউ দূরে থাকলে তার বাড়িতে ঘুরতে যাওয়া ভ্রমণ হলেও ভ্রমণ মানুষের সুদূর বিলাসী জিনিস। সবাই ভালবাসে সরমর পেরিয়ে মৌলিক হিমালয় জয় করে কৃষ্ণবর্ণ অরণ্যে মশাল জ্বেলে পথ খুঁজে জীবন আজীবন বেড়াতে। কিন্তু ছোটবেলা থেকে এসে সামান্য পদ ঘুরেছি তাতে আমার মনের সাধ মেটেনি।

তাই পায়ে শিকল বাঁধা পাখির মত ছটফট করেছি আর দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই বহু বিখ্যাত কবিতাটি বারবার আবৃত্তি করেছি-

“ইচ্ছা সম্যক গমন ভ্রমণে, কিন্তু পাঠের নাস্তি,
পায়ের শিকলি মন উড়ু, উড়ু একই দৈত্যে শান্তি।”

শিক্ষা সফরে ভ্রমণের কৌতুহল:

আমার জীবনে সবে মাত্র ১৪ টি ক্যালেন্ডার অতিক্রান্ত হয়েছে। এরই মাঝে লোকমুখে বর্ণিত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, পাঠ্যপুস্তকে রঙিন ছবি এবং নদনদী পাহাড়-পর্বত সমুদ্র রাজার কাহিনী স্মৃতিস্তম্ভ ঐতিহাসিক উপাদান প্রভৃতি গল্পে মনকে স্থির রাখতে না পেরে যেন বারে বারে এক কল্পনার উদয় ঘটেছে হৃদয়ে।

তারি মাঝে হঠাৎ শিক্ষকদের শিক্ষা সফরে ভ্রমণে যাওয়ার প্রস্তাব যেন উদ্দেশ্যে যেন বাস্তব রূপ নিতে চলেছে। এই কৌতুহলকে বাস্তবে দৃষ্টি নিক্ষেপ করার লক্ষ্যে ভ্রমণ হয়ে উঠেছিল এক অফুরন্ত কৌতুহল।

শিক্ষা সফরে ভ্রমণের স্থান নির্ধারণ:

ভ্রমণের স্থান নির্ধারণ করা ছিল আমাদের কাছে কঠিন একটি কাজ। ইতিহাস স্যারের কাছে ঢাকা সোনারগাঁও এর গল্প শুনে স্যারের প্ররোচনায় এবং অভিভাবকদের মতামত নিয়ে আমরা স্থির করলাম ঢাকার সোনারগাঁও এই আমরা ভ্রমণে যাব। মার্চের ১৭ তারিখে স্থির হল আমাদের ভ্রমণে তারিখ।

শিক্ষা সফরের যাত্রা শুরু:

যথারীতি মার্চের ১৭ তারিখ সকাল সাতটায় আমরা সকলে স্কুল প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলাম। সকাল সাড়ে সাতটায় আমাদের বাস রওনা দিল। আমাদের অভিভাবকদেরকে আমরা বিদায় জানালাম এবং খুশিমনে আমাদের গন্তব্যের দিকে যাত্রা শুরু করলাম।

সোনারগাঁও এর ইতিহাস:

শিল্পকলা সংস্কৃতি ও সাহিত্য সোনারগাঁও ছিল বাংলাদেশের এক গৌরবময় জনপদ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেষ্টিত নৈসর্গিক পরিবেশে প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁওয়ে নামটির উদ্ভব ঘটেছে সুবর্ণগ্রাম থেকে।

আবার অনেকের মতে বারোভূঁইয়ার প্রধান ঈশা খাঁ স্ত্রী সোনাবিবির নামে সোনারগাঁও এর নামকরণ করা হয়েছে।

আনুমানিক ১২৮৭ খ্রিস্টাব্দে এই অঞ্চলে মুসলিম আধিপত্যের সূচনার পর আওরঙ্গজেবের আমলে বাংলার রাজধানী ঢাকা ঘোষণা হওয়ার আগে পর্যন্ত মুসলিম সুলতানের রাজধানী ছিল সোনারগাঁও।

যদিও তখন প্রাচীন এ রাজধানীর নাম পানাম নামেই পরিচিত ছিল। বর্তমানে সোনারগাঁও নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা।

সোনারগাঁ গিয়ে যা যা দেখলাম:

সোনারগাঁওয়ে রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। তার মধ্যে অন্যতম হলো লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর, জয়নুল আবেদীন স্মৃতি জাদুঘর, পানাম সিটি ও বাংলার তাজমহল। বাংলার তাজমহল ছাড়া বাকি জায়গা গুলো খুবই কাছাকাছি।
কেন বিখ্যাত:

প্রাচীন বাংলার বিখ্যাত জনপদ সহস্রা বছরের ইতিহাস হল সোনারগাঁ। বাংলাদেশের প্রাচীনতম রাজধানীর নাম সোনারগাঁ। সোনারগাঁ লোকশিল্প জাদুঘর এর জন্য বিখ্যাত। এখানে উৎপাদিত মসলিন কাপড় একসময় গোটা বিশ্বে বিখ্যাত ছিল।

এই কাপড় এত সূক্ষ্ম সুতার তৈরি হতো যে মসলিনের তৈরি একটি বড় ধরনের চাদর দিয়াশলাইয়ের প্যাকেটে ঢুকিয়ে রাখা যেত।

সোনারগাঁর গৌরব আরো অনেক কারণে। ইতিহাস থেকে জানা যায় সোনারগাঁ যখন শহর ছিল তখন ঢাকা ছিল গ্রাম। আর ঢাকা যখন শহর হলো তখনও কলকাতা ছিল গ্রাম।

উপসংহার:

সোনারগাঁও হল আমাদের দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন। বাংলাদেশের প্রাচীনতম রাজধানীর নাম হল সোনারগাঁও। সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর বিখ্যাত। এখানে দেশ-বিদেশের অনেক মানুষ আসে। তারা জাদুঘর ও এর বিচিত্র রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে প্রশংসা করে। যা আমাদের বাংলাদেশের জন্য অনেক গৌরবের।

একজন দেশপ্রেমিক নাগরিকের ১০ টি গুণ

অন্যান্য অ্যাসাইনমেন্টের লিঙ্ক

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.