Primary Teacher Rina

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রিনা বেগম ২০২৪ সালে নিকলী উপজেলায় অনুষ্ঠিত “কৃষি মেলা” দেখতে যান। তিনি মেলায় প্রদর্শিত কৃষিজাত পণ্য বিভিন্ন ফসলের নানা জাতের চারা ও গাছের উন্নত ফলন দেখে কৃষি কাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নিজের পৈত্রিক জমিতে কৃষি কার্যক্রম পরিচালনা করতে আগ্রহী হন। কৃষি কার্যক্রম পরিচালনা করতে রিনা বেগম কৃষি গবেষণা, কৃষি তথ্য ও সেবা প্রান্তির উৎসগুলো কীভাবে কাজে লাগাবেন?

নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তরের মাধ্যমে তোমার মতামত উপস্থাপন কর-
১| রীনা বেগম কৃষিসেলায় কী কী কৃষিজাত পণ্য দেখতে পেয়েছিলেন?
২| তার কৃষি কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য কাদের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা পেতে পারে|
৩| কৃষি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ গবেষণা করতে কোন কোন প্রতিষ্ঠান ভূমিকা রাখতে পারে?
৪ | একজন অভীজ্ঞ কৃষক কীভাবে রীনা বেগমকে সহায়তা করতে পারে?
৫| একজন কৃষক ও একজন কৃষিবিজ্ঞানীকে তুমি কীভাবে আলাদা করবে?

সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আজ তোমাদের সামনে কৃষিবিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা প্রাপ্তির উৎস নিয়ে আলোচনা করব। আজকের আলোচনার চৌম্বক তথ্য একজন কৃষক ও একজন কৃষি বিজ্ঞানী এক নয়।

https://i.imgur.com/0uH7ghH.jpg

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রিনা বেগম ২০২৪ সালে নিকলী উপজেলায় অনুষ্ঠিত ‘কৃষি মেলা’ দেখতে যান। তিনি মেলায় প্রদর্শিত কৃষিজাত পণ্য, বিভিন্ন ফসলের নানা জাতের চারা ও গাছের উন্নত ফলন দেখে কৃষি কাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নিজের পৈত্রিক জমিতে কৃষি কার্যক্রম পরিচালনা করতে আগ্রহী হন ।

কৃষি কার্যক্রম পরিচালনা করতে রিনা বেগম অভিজ্ঞ কৃষক, কৃষি মেলা, কৃষি শিক্ষা, কৃষি গবেষণা, কৃষি তথ্য ও সেবা প্রাপ্তির উৎসগুলো কিভাবে কাজে লাগাবেন?

১. রিনা বেগম কৃষি মেলায় কি কি কৃষিজাত পণ্য দেখতে পেয়েছিলেন ?

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। আমাদের জীবনে কৃষি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কেননা কৃষি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর প্রায় সকল উপকরণ উৎপাদন ও সরবরাহ করে।

এছাড়া অন্যান্য পণ্য ও সেবা ক্রয় এর অর্থও কৃষি যোগান দেয়।

খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও স্বাস্থ্য খাতের চাহিদাগুলো পূরণে আমাদের জীবনে কৃষি ব্যাপক ভূমিকা রাখে।  রিনা বেগম কৃষি মেলায় বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য দেখতে পেয়েছিলেন।

তার কৃষি কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য কাদের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা পেতে পারে?

কৃষির আধুনিক প্রযুক্তি, কৃষি উপকরণ ও উৎপাদিত কৃষিপণ্য একসাথে একমাত্র কৃষি মেলার মাধ্যমে দেখা সম্ভব। গ্রামের মতো শহরেও এ ধরনের মেলার আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

এ মেলায় এক নজরে নানা ধরনের ফসল দেখা সম্ভব হয়।এই মেলায় চারা, বীজ, সার, কৃষি প্রযুক্তি ইত্যাদি দেখানো ও বিক্রি করা হয়।

এ মেলায় কৃষি বিষয়ক নানা লিফলেট, পুস্তিকা, বুলেটিন, পত্রিকা প্রদর্শিত হয় এবং বিনামূল্যে দর্শকদের দেয়া হয়। এতে কৃষি কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও উপস্থিত দর্শকগণ ও কৃষি কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হন।

রিনা বেগম তার কৃষি কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য অনেকের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা পেতে পারে।

কৃষি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ ও গবেষণা করতে কোন কোন প্রতিষ্ঠান ভূমিকা রাখতে পারে?

অভিজ্ঞ কৃষক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কৃষি বিষয়ক তথ্য ও সেবা দিয়ে থাকেন।

বাংলাদেশের ১৬ টি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আছে।

  • এছাড়াও প্রাইভেট কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আছে। কারিগরি বোর্ডের একাডেমিক অধীনে থেকে ইনস্টিটিউটগুলো চার বছর মেয়াদি কৃষি ডিপ্লোমা প্রদান করে থাকে।
  • উচ্চতর কৃষি শিক্ষার জন্য বাংলাদেশে পাঁচটি সরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আছে । দুটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি অনুষদ চালু আছে। বাংলাদেশে অনেকগুলো কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
  • বেশিরভাগ গবেষণা প্রতিষ্ঠানই নির্দিষ্ট ফসলের উপর গবেষণা করে থাকে। যেমন- বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ধানের উন্নত জাত ও সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা করে।
  • বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পাট উন্নয়নের জন্য যাবতীয় গবেষণা করে। বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট ইক্ষু উন্নয়নের জন্য যাবতীয় গবেষণা করে থাকে। বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভিন্ন ফসলের উপর গবেষণা করে।
  • এর ফলে কৃষকেরা উন্নত মানের বীজ, নতুন জাত, রোগ ও এর প্রতিকার সহ নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছেন। সকল কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে জনগণকে অবহিত করা হচ্ছে। কৃষি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ ও গবেষণা করতে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ভূমিকা রাখতে পারে।

একজন অভিজ্ঞ কৃষক কিভাবে রিনা বেগম কে সহায়তা করতে পারেন?

একজন অভিজ্ঞ কৃষক রিনা বেগমকে সহায়তা করতে পারেন নানাভাবে।

  • অভিজ্ঞ কৃষক একজন স্থানীয় নেতা এবং একজন পরামর্শদাতা।
  • তিনি স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রাখেন ও নতুন নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
  • এছাড়া তিনি গণমাধ্যম থেকে অনেক তথ্য সংগ্রহ করেন।
  • তিনি স্থানীয় তথ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত লাভ করেন।
  • অভিজ্ঞ কৃষকেরা কৃষি জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করেন।
  • অতঃপর তিনি নিজ এলাকার কৃষকদের কৃষি বিষয়ে পরামর্শ দান করেন।
  • কৃষকেরা ফসল নিয়ে নানা সমস্যায় ভোগেন। যেমন- ফসলের রোগ হওয়া, কীটপতঙ্গ আক্রমণ করা, বন্যা ও খরা দেখা দেওয়া ইত্যাদি।
  • এসব প্রতিকূল অবস্থার মোকাবিলা করার জন্য প্রাথমিকভাবে কৃষকেরা অভিজ্ঞ কৃষকের দ্বারস্থ হয়ে থাকেন।
  • আর তিনিও আন্তরিকভাবে যতটুকু জানেন সে মোতাবেক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

একজন কৃষক ও একজন কৃষি বিজ্ঞানী কে তুমি কিভাবে আলাদা করবে?

  • একজন কৃষক ও একজন কৃষি বিজ্ঞানী এক নয়।
  • একজন কৃষক কেবল কৃষিকাজ করেন।
  • কিন্তু তার ফসলের জন্য কোন উপাদান কি পরিমাণে লাগবে কিংবা সঠিক সময়ে ফসলের সঠিক যত্ন ইত্যাদি সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে পারেন না।
  • ফসলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য কারো নিকট তাকে দ্বারস্থ হতে হয়।
  • পক্ষান্তরে, কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে যিনি গবেষণা করে নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন, তিনি কৃষি বিজ্ঞানী।
  • তিনি একটি ফসল এর জীবনচক্র সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন এবং তার নিকট কৃষি বিষয়ক নানা প্রকার তথ্য পুঞ্জিভূত থাকে।
  • তারা নতুন ফসল ও প্রাণীর উন্নতজাত উৎপাদন ও সংরক্ষণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করে দেশের কল্যাণ সাধন করছেন।
I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.