Civics assignment

এসএসসি 2024 পৌরনীতি ও নাগরিকতা [৫ম সপ্তাহ] অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর পাবেন আমাদের এইখানে। রাষ্ট্রের ধরন বিশ্লেষণসহ গণতন্ত্র সফল করার উপায় এবং সংসদীয় সরকারের গুন ও ত্রুটি ব্যাখ্যাকরণ এর সমাধান দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়েন আর ভালো লাগলে শেয়ার করেন সবার সাথে।

অ্যাসাইনমেন্টঃ

রাষ্ট্রের ধরন বিশ্লেষণসহ গণতন্ত্র সফল করার উপায় এবং সংসদীয় সরকারের গুন ও ত্রুটি ব্যাখ্যাকরণ।

নির্দেশনাঃ

  1. রাষ্ট্র ও সরকারের ধারণা বর্ণনা করতে হবে।
  2. রাষ্ট্রের ধরন বিশ্লেষণ করতে হবে।
  3. গণতন্ত্রের ধারণা বর্ণনা করতে হবে।
  4. গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ত্রুটি উল্লেখ করতে হবে।
  5. গণতন্ত্র সফল করার উপায় বর্ণনা করতে হবে।
  6. সংসদীয় সরকারের ধারণা বর্ণনা করতে হবে। সংসদীয় সরকারের গুন ও ত্রুটি বর্ণনা করতে হবে।

https://i.imgur.com/cVCUYoP.jpg

এসএসসি 2024 পৌরনীতি ও নাগরিকতা ৫ম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

রাষ্ট্র ও সরকারের ধারণা বর্ণনা করতে হবে।

রাষ্ট্র ও সরকার একটি আরেকটির পরিপূর্ণ শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয় । কিন্তু দুটি এক মনে হলেও এদের মধ্যে পার্থক্য আছে । রাষ্ট্র হলাে একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্থায়ী প্রতিষ্ঠান । এটি সার্বভৌম বা সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী । আর সরকার রাষ্ট্র গঠনের চারটি উপাদানের ( জনসংখ্যা , ভূখণ্ড , সরকার ও সার্বভৌমত্ব ) মধ্যে একটি উপাদান মাত্র । পৃথিবীর সব রাষ্ট্র একই উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হলেও সব রাষ্ট্র ও সরকারব্যবস্থা একি রকমের নয় । আবার সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে যেকোনাে দেশে রাষ্ট্র ও সরকারের স্বরূপ পরিবর্তিত হতে পারে ।

ক. রাষ্ট্রের ধরণের চিত্র উপস্থাপন : 

বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা লক্ষ করা যায় । নিচের ছকে রাষ্ট্রের বিভিন্ন রূপ লক্ষ করি

অর্থনীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্রঃ সম্পত্তি বা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ থাকা না-থাকার ভিত্তিতে রাষ্ট্র দুই ধরনের হয়, যেমন- পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র।

পুঁজিবাদী রাষ্ট্রঃ  পুঁজিবাদী রাষ্ট্র বলতে সেই রাষ্ট্রকে বোঝায়, যেখানে সম্পত্তির উপর নাগরিকদের ব্যক্তিগত মালিকানা স্বীকার করা হয়। এ সরকারব্যবস্থায় উৎপাদনের উপাদানসমূহ (ভূমি, শ্রম, মূলধন ও ব্যবস্থাপনা) ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকে। এর উপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। অবাধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। এ ধরনের রাষ্ট্রে নাগরিকগণ সম্পদের মালিকানা ও ভোগের ক্ষেত্রে স্বাধীন। বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রই পুঁজিবাদী।

সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রঃ  সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলতে সেই ধরনের রাষ্ট্রকে বোঝায়, যা ব্যক্তিমালিকানা স্বীকার করে না। এতে উৎপাদনের উপকরণগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানায় থাকে। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন ও বণ্টনের ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। এটি পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের বিপরীত। সমাজতন্ত্রে ব্যক্তিস্বাতন্ত্রকে স্বীকার করা হয় না। এ ধরনের রাষ্ট্রে একটিমাত্র দল থাকে। গণমাধ্যম রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিরোধী মত প্রচারের সুযোগ থাকে না। যেমন- চীন এবং কিউবা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র।

ক্ষমতার উৎসের ভিত্তিতে রাষ্ট্রঃ ক্ষমতার উৎসের ভিত্তিতে রাষ্ট্রকে আবার দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা – গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রঃ যে শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা রাষ্ট্রের সকল সদস্য তথা জনগণের হাতে ন্যস্ত থাকে, তাকে গণতান্ত্রিক  রাষ্ট্র বলে । এটি এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে শাসনকার্যে জনগণের সকলে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সকলে মিলে সরকার গঠন করে। এটি জনগণের অংশগ্রহণে, জনগণের দ্বারা এবং জনগণের কল্যাণার্থে পরিচালিত একটি শাসনব্যবস্থা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের মতপ্রকাশ ও সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ থাকে। এতে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় অর্থাৎ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তিত হয়।

একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থাঃ  একনায়কতন্ত্র এক ধরনের স্বেচ্ছাচারী শাসনব্যবস্থা। এতে রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা জনগণের হাতে ন্যস্ত কজন স্বেচ্ছাচারী শাসক বা দল বা শ্রেণির হাতে ন্যস্ত থাকে। এতে নেতাই দলের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, তাকে বলা হয় একনায়ক বা ডিকটেটর। একনায়কতান্ত্রিক শাসককে সহায়তা করার জন্য মন্ত্রী বা উপদেষ্টা পরিষদ থাকে। কিন্তু তারা শাসকের আদেশ ও নির্দেশ মেনে চলে। একনায়কের আদেশই আইন। এ ব্যবস্থায় শাসকের কারও কাছে জবাবদিহিতা থাকে না। এতে একটিমাত্র রাজনৈতিক দল  থাকে। এই দলের নেতাই সরকারপ্রধান। তার ইচ্ছা অনুযায়ী দল পরিচালিত হয় এবং তার অন্ধ অনুসারীদের নিয়ে দল গঠিত হয়।

ক্ষমতা বণ্টনের নীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্রঃ রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টনের নীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র দুই ধরনের হয়। যথা- এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্র।

এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রঃ এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রে সংবিধানের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সকল শাসনতান্ত্রিক ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত করা হয়। ফলে কেন্দ্র থেকে দেশ পরিচালনা করা হয় । শাসনকার্যের সুবিধার জন্য দেশকে বিভিন্ন প্রদেশে বা অঞ্চলে ভাগ করে কিছু ক্ষমতা তাদের হাতে অর্পণ করা হয়। তবে প্রয়োজনবোধে কেন্দ্রীয় সরকার সে ক্ষমতা ফিরিয়ে নিতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রঃ  যে রাষ্ট্রব্যবস্থায় একাধিক অঞ্চল বা প্রদেশ মিলিত হয়ে একটি রাষ্ট্র গঠন করে, তাকে যুক্তরাষ্ট্র বলে । এ ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের শাসনকার্যের সুবিধার জন্য সংবিধানের মাধ্যমে কেন্দ্র ও প্রদেশ বা অঞ্চলের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে পাশাপাশি অবস্থিত কতগুলো ক্ষুদ্র অঞ্চল বা প্রদেশ একত্রিত হয়ে একটি বড় রাষ্ট্র গঠন করে বলে রাষ্ট্রটি শক্তিশালী হয়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার রাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকার সম্পদ আহরণ করে একটি বৃহৎ অর্থনীতি গঠনপূর্বক রাষ্ট্রকে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।

উত্তরাধিকার সূত্রের ভিত্তিতে রাষ্ট্রঃ  উত্তরাধিকার সূত্রে রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা লাভ দুই ধরনের, যথা- নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র ও নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র ।

নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রঃ এ ধরনের রাষ্ট্রে রাজা বা রানী রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। এতে শাসনব্যবস্থায় জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। বর্তমান বিশ্বে এ ধরনের রাষ্ট্রের সংখ্যা নগণ্য। সৌদি আরবে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র বিদ্যমান রয়েছে।

নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র : এ ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থায় রাষ্ট্রের রাজা বা রানী উত্তরাধিকার সূত্রে বা নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাষ্ট্রপ্রধান হন। কিন্তু তিনি সীমিত ক্ষমতা ভোগ করেন। রাষ্ট্রের প্রকৃত শাসন ক্ষমতা থাকে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে। যুক্তরাজ্যে (গ্রেট ব্রিটেন) নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র প্রচলিত রয়েছে।

উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রঃ 

কল্যাণমূলক রাষ্ট্রঃ যে রাষ্ট্র জনগণের দৈনন্দিন ন্যূনতম চাহিদা পূরণের জন্য কল্যাণমূলক কাজ করে, তাকে বলা হয় কল্যাণমূলক রাষ্ট্র। এ ধরনের রাষ্ট্র জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য কর্মের সুযোগ সৃষ্টি করে, বেকার ভাতা প্রদান করে, বিনা খরচে শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। রাষ্ট্র সমাজের মঙ্গলের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করে। খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে। রাস্তাঘাট, এতিমখানা, সরাইখানা, খাদ্য ভর্তুকি প্রদান ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে। বেকার ভাতা, অবসরকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ইত্যাদি প্রদান করে। সচ্ছলদের উপর উচ্চহারে কর ধার্য করে ও কম সচ্ছলদের উপর কম কর ধার্য করে দরিদ্র ও দুস্থদের সাহায্য ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে ।

খ. গনতন্ত্র সফল করার উপায়ঃ

গনতন্ত্রের ধারণাঃ গণতন্ত্র হল জনগণের সরকার। জনগণের দ্বারা এবং জনগণের জন্য যে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় তাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে। লর্ড ব্রাইস এর মতে, “যে শাসন ব্যবস্থায় শাসন ক্ষমতা কোনাে বিশেষ শ্রেণীর হাতে ন্যস্ত না থেকে সমাজের সকল সদস্যের হাতে ন্যস্ত থাকে তাকে গণতন্ত্র বলে।” একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সকল মানুষের স্বাধীনভাবে রাষ্ট্রের শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সকলে মিলে সরকার গঠন করে। আধুনিক গণতন্ত্রে জনগণের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। মতামত প্রকাশের অধিকার ভােগের মাধ্যমে ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে এবং সরকারের সমালােচনার সুযােগ থাকে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তিত হয়। এতে জনগণের স্বার্থ রক্ষার সুযােগ থাকে এবং নাগরিকের অধিকার ও আইনের শাসনের স্বীকৃতি দেয়া থাকে। বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ রাষ্ট্রই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র । যেমন: বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র।

গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ত্রুটি সমূহঃ

গণতন্ত্র উত্তম শাসন ব্যবস্থা হলেও এর কিছু ত্রুটি আছে। নিম্নে এগুলাে আলােচনা করা হলঃ

১. দলকানা শাসন ব্যবস্থাঃ গণতন্ত্রে ক্ষমতাশীল দল সর্বদাই নিজ দলের স্বার্থ রক্ষা করে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতি অনেকটা অবজ্ঞা করে।

২. অজ্ঞ ও অযােগ্যদের দ্বারা শাসনকার্য পরিচালনাঃ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচনের মাধ্যমে শাসক মনােনয়ন করা হয়। ফলে অযােগ্য লােক নির্বাচিত হওয়ার সুযােগ পায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী লেকি (Lacky) বলেন, “গণতন্ত্র, দরিদ্র, অজ্ঞ ও অযােগ্যদের শাসন।” বিজ্ঞ ও শান্তিপ্রিয় মানুষ নির্বাচনের জটিলতায় অংশ নিতে চায় না বলেই অদক্ষ মানুষ যে সুযােগ নিয়ে থাকে।

৩. যােগ্যতার চেয়ে সংখ্যার প্রাধান্যঃ গণতন্ত্রে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে। ফলে এখানে গুণ বা যােগ্যতার চেয়ে সংখ্যার গুরুত্ব প্রাধান্য পায়। গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সরকার নির্বাচিত হয় বিধায় মেধা ও যােগ্যতার অবমূল্যায়নের সুযােগ রয়ে যায়।

৪. ঘন ঘন সরকার পরিবর্তনঃ ঘন ঘন সরকার পরিবর্তন গণতন্ত্রের অন্যতম সীমাবদ্ধতা। একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করার পর সুনির্দিষ্ট কর্মসূচী গ্রহণ ও পরিকল্পনা তৈরি করে। কিন্তু ঘন ঘন সরকার পরিবর্তনের ফলে এসব পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে না।

৫. আবেগ দ্বারা পরিচালিতঃ গণতন্ত্রে আবেগের প্রভাব বেশি। অনেক সময় বক্তাগণ আবেগময় বক্তৃতার মাধ্যমে জনগণকে বশ করে ফেলে। এর ফলে দূর্নীতিপরায়ণ ও অযােগ্য ব্যক্তিরাই নির্বাচিত হয়।

গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা সফল করার উপায়ঃ

১. দায়িত্বশীল শাসন ব্যবস্থাঃ এ শাসন ব্যবস্থায় সরকার জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে। সরকার রাষ্ট্রের যে কোন কাজের জন্য জনগণের নিকট দায়ী থাকে এবং পরবর্তী নির্বাচনে জয় লাভের জন্য জনস্বার্থমূলক কাজ করে থাকে। এর ফলে দেশে দায়িত্বশীল শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।

২. ব্যক্তি স্বাধীনতার রক্ষাকবচঃ গণতন্ত্র নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে। গণতন্ত্রের মাধ্যমে জনগণ মতামত প্রকাশের অধিকার ভােগ করে। ফলে ব্যক্তি স্বাধীনতার বিকাশ ঘটে। সকলে মিলে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করে। এতে নাগরিকের অধিকার রক্ষা হয়।

৩. সমানাধিকারঃ গণতন্ত্রে সবাই সমান। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সবাই জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমান অধিকার ভােগ করে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রত্যেক ক্ষেত্রে সবার অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করে।

৪. সরকারের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধিঃ জনগণের আস্থা যত দিন থাকে সরকার তত দিন স্থায়ী হয়। তাই জনসমর্থন লাভের আশায় দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সরকার পরিচালনা করতে স্বচেষ্ট হয়। এতে সরকারের সুনাম ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

৫. নাগরিক মর্যাদা বৃদ্ধিঃ রাষ্ট্র পরিচালনার ভার থাকে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের হাতে। অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতির অন্যতম হাতিয়ার হল নির্বাচন। এটি জনগণকে রাষ্ট্রীয় কাজে অংশ গ্রহণের সুযােগ করে দেয়। ফলে নাগরিকদের সংস্কৃতি উন্নত হয় এবং ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে এবং নাগরিকের সম্মান বেড়ে যায়।

৬. বিপ্লবের সম্ভাবনা হ্রাসঃ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকার পরিবর্তনশীল। সুনির্দিষ্ট সময় পরপর সরকার পরিবর্তন হওয়ার সুযােগ থাকায় বিপ্লবে সম্ভাবনা কম থাকে।

৭. রাজনৈতিক শিক্ষা ও সচেতনতার মাধ্যমঃ গণতন্ত্র সকলকে রাজনৈতিক চর্চার সমান সুযােগ দেয়। ফলে সকলেই রাজনীতি চর্চা ও রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক শিক্ষা ও সচেতনতা লাভ করে। তাই জে.এস. মিল বলেন, “গণতন্ত্র উত্তম শাসন ব্যবস্থার শিক্ষা দান করে।”

‘ গ ’ নং প্রশ্ন : সংসদীয় সরকারের গুণ ও ক্রটি । 

উত্তর : সংসদীয় সরকারের গুণ সংসদীয় বা মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের যেসব গুণ রয়েছে তা নিম্নরূপ

১. দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা : সংসদীয় সরকার দায়িত্বশীল সরকার । এতে ক্ষমতাসীন ও বিরােধী দল উভয়ই তাদের কাজের জন্য জনগণের নিকট দায়ী থাকে ।

২. আইন ও শাসন বিভাগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক : শাসন বিভাগের সদস্যগণ আইনসভার সদস্য হওয়ায় এ সরকারে আইন ও শাসন বিভাগের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকে ।

৩. বিরােধী দলের মর্যাদা : এ সরকার ব্যবস্থায় বিরােধী দলকে বিকল্প সরকার মনে করা হয় । ফলে জাতীয় সংকটে ক্ষমতাসীন ও বিরােধী দল একসাথে আলাপ – আলােচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পারে । বিরােধী দল হচ্ছে সংসদীয় ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ ।

৪. সমালােচনার সুযােগ : এ সরকারে সংসদ সদস্যগণ বিশেষ করে বিরােধী দলের সদস্যগণ সংসদে বসে সরকারের কাজের সমালােচনা করার সুযােগ পায় । ফলে সরকার তার কাজে সংযত হয় ও ভালাে কাজ করার চেষ্টা করে ।

৫. রাজনৈতিক শিক্ষা দেয় : সংসদীয় সরকার জনমতের দ্বারা পরিচালিত হয় । জনমতকে অনুকূলে রাখার জন্য তাই সরকারি ও বিরােধী দল সবসময় তৎপর থাকে । সংসদে বিতর্ক হয় । এতে জনগণ রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয় ।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.