সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী ফর্ম

সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী ফর্ম pdf / word

সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি, যেখানে কর্মচারীর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া থাকে। এতে একজন কর্মচারীর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, ঋণ, স্থায়ী বিনিয়োগ, এবং অন্যান্য সম্পদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে। আর সরকারি কর্মচারীদের এই তথ্য দাখিল করার জন্যই মূলত সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী ফর্ম প্রয়োজন হয়। সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী ফর্ম pdf / word ফরম্যাটে আপনি পাবেন।

সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার ফলে সরকারি কর্মচারীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সৃষ্টি হয়। এই নথিটিই জানায় তাদের আয়ের উৎস এবং সম্পদের পরিমাণ। প্রতিটি সরকারি কর্মচারীকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সম্পদ বিবরণী হালনাগাদ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিতে হয়। এটি কর্মচারীদের সম্পত্তির অপ্রত্যাশিত বৃদ্ধি বা আর্থিক অনিয়মের ক্ষেত্রে একটি প্রাথমিক প্রমাণ হিসেবে কাজ করতে পারে।

আরও দেখুনঃ আপনার স্মার্টকার্ড কবে কোথায় পাবেন এসএমএস করে জেনে নিতে পারেন !

সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণীর গুরুত্বঃ

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কারণ আপনারা জানেন যে অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সম্পদের পাহাড়, ইত্যাদির অভিযোগ পাওয়া যায়। চলুন কারণগুলো বিস্তারিত ভাবে জেনে নেয়া যাকঃ

১। সরকারি কর্মচারীর সম্পদের বিবরণী জমা দিয়ে তাদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে স্বচ্ছ তথ্য প্রকাশ করা হয়। এটি কর্মচারীদের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

২। কর্মচারীদের আয়ের উৎস এবং সম্পদের পরিমাণ সম্পর্কে নিয়মিত নজরদারি রাখা সম্ভব হয়। এর ফলে কর্মচারীদের প্রতি জনগণের আস্থা বজায় থাকে এবং তাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করে।

৩। সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা আয়ের সাথে সঙ্গতিহীন সম্পদের মালিকানা অর্জন দুর্নীতির ইঙ্গিত দেয়। সম্পদ বিবরণী জমা দিয়ে একজন কর্মচারীর আয় এবং সম্পদ বৃদ্ধির তথ্য বিশ্লেষণ করা যায়। এর ফলে দুর্নীতি অনেকংশেই রোধ করা যায়।

৪। সম্পদ বিবরণী প্রদান করলে কর্মচারীরা অবৈধ উপায়ে আয় করতে নিরুৎসাহিত হয়। তাদের সম্পদ সম্পর্কে নিয়মিত তথ্য প্রদান করতে হয়, তাই অস্বাভাবিক আয় বাড়ে তাহলে তা সহজেই ধরা পড়বে।

৫। সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়া আইনি বাধ্যবাধকতা। এর মাধ্যমে তারা সরকার নির্ধারিত নীতিমালা অনুসরণ করতে বাধ্য থাকেন। তাই কোন প্রকার অনিয়মের সুযোগ নেই।

সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী ফর্ম pdf / word

সম্পদ বিবরণী ফর্মটির PDF ডাউনলোড করুন 

সম্পদ বিবরণী ফর্মটির Word ডাউনলোড করুন

সম্পদের হিসাব বিবরণী কোথায় দাখিল করবেন?

এবার প্রশ্ন হচ্ছে এই সম্পদ বিবরণী কোথায় দাখিল করতে হবে। সর্বশেষ চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় যেখানে সুস্পষ্ট ভাবে সম্পদের বিবরণী দাখিল করার ব্যাপারে বলা আছে।

  • যারা বিসিএস ক্যাডার এবং প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা (৯ম গ্রেড এবং তদূর্ধ্ব) তাঁরা তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিকট নিজেদের সম্পদের বিবরণী দাখিল করবেন।
  • এরপর যারা দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড এবং নন গেজেটেড কর্মকর্তা (১০ম গ্রেড) আছেন তাঁরা তাঁদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পদের বিবরণী জমা দিবেন।
  • এছাড়া ১১ তম গ্রেড হতে ২০ তম গ্রেড পর্যন্ত যেসব সরকারি কর্মচারীগন আছেন তাঁরা তাঁদের স্ব স্ব নিয়োগকারীর কাছে সম্পদের বিবরণী দাখিল করবেন।

সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী ফর্মে কি কি তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হয়?

আপনি যদি একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে থাকেন তাহলে এই বিষয়টি জানা আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখবেন এই ফরমে থাকা তথ্য গুলোই আপনার সম্পত্তির বৈধতা নির্দেশ করবে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কোন কোন তথ্য থাকে এই ফরমে।

সাধারণ তথ্যাবলি: এই অংশে কর্মচারীর নাম, পদবি, কর্মস্থল, এবং আইডি নম্বর দিতে হয়।

স্থাবর সম্পত্তি: এই অংশটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কর্মচারীর জমি, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, বাণিজ্যিক স্থাপনার বিবরণ থাকে। এমনকি তাঁর সম্পত্তির

বিস্তারিত যেমন – অবস্থান, আয়তন, এবং ক্রয় মূল্য ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকে।

অস্থাবর সম্পত্তি: এরপর আসবে অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব। এক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে আপনার যানবাহন, গহনা, আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ইত্যাদির বিবরণ।

ব্যাংক হিসাব ও নগদ টাকা: আপনার ব্যাংক হিসাবের বিবরণ, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা, নগদ টাকা ও সঞ্চয়ের তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে এই অংশে।

ঋণ ও দায়: আপনার যদি কোনো ঋণ থাকে বা কোনো দায়বদ্ধতা থাকে, তাহলে তার বিস্তারিত বিবরণ এখানে দিতে হবে।

অন্য কোন আয় বা সম্পদ: আপনার যদি অন্য কোন আয়ের উৎস থেকে থাকে তাহলে তা উল্লেখ করতে হবে এখানে। এক্ষেত্রে সম্পত্তি, উপহার, বা বীমা পলিসির মতো অন্যান্য সম্পদ বা আয়ের উৎসের বিবরণ লিখতে হবে।

সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী কত তারিখের মধ্যে জমা দিতে হবে?

গত ২২ সেপ্টেম্বর একটি নোটিশ প্রকাশ করা হয় সেখানে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক কর্মচারীকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই তাঁদের সম্পদের বিবরণী জমা দিতে হবে। এখানে আরেকটি কথা বলে রাখা ভালো যে অনেকেই বুঝতে পারেন না সম্পদ বিবরণী কিভাবে লিখে জমা দিতে হবে। এজন্য হাতে লেখার প্রয়োজন নেই যেহেতু ফরম টি আপনি অনলাইনেই পাবেন সেহেতু কম্পিউটারে কম্পোজ করে তারপর প্রিন্টআউট করে জমা দেয়া উচিৎ।

শেষ কথা

আশা করছি আপনারা সম্পদ বিবরণী কি এবং কিভাবে দাখিল করতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন আমাদের উপরের আলোচনা থেকে। এখানে একটি কথা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন; যে সকল তথ্য আপনি ফর্মে দিচ্ছেন তা যেন অবশ্যই সত্য হয়। মিথ্যা যেকোনো তথ্য আপনাকে আইনগত জটিলতায় ফেলতে পারে। আগে ফরমটি ভালো করে দেখুন তারপর একেবারে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করুন। তারপর প্রিন্ট করে জমা দিন। সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী ফর্ম pdf / word ফরম্যাটে প্রিন্ট করে জমা দিতে পারবেন।

About Author

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.