আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ঈদুল আজহা ২০২৪ কত তারিখে। অনেক ভাইয়েরা জানতে চান যে, কোরবানির ঈদ কত তারিখে 2024 সালে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ঈদুল আজহা ২০২৪ কত তারিখে বা কোরবানির ঈদ কত তারিখে 2024।

কোরবানি বা ইদ উল আজহা

কোরবানি একটি আরবী শব্দ এর অর্থ ত্যাগ করা বা ত্যাগের উৎসব। প্রতিবছর জিলহজ্ব মাসের 10 তারিখ থেকে 12 তারিখ পর্যন্ত মুসলমানেরা আল্লাহর হুকুমে বিভিন্ন ধরনের পশু কোরবানি দিয়ে থাকে। জিলহজ্ব মাসের 10 তারিখে সকাল ভোর বেলা ফজরের নামাজ আদায় করার পর প্রত্যেক মুসলমানের আর দুই রাকাত ঈদ উল আযহার নামাজ আদায় করে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়ে থাকে।

একদিন রাত্রে বেলা হযরত ইবরাহীম (আঃ) স্বপ্নে দেখেন আল্লাহ তা’আলা তাঁর প্রিয় বস্তুটি কে কোরবানি দিতে বলেছেন। ইব্রাহিম (আঃ) তাঁর প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাইল (আঃ) তার প্রিয় বস্তু ভেবে তাকে কোরবানি দিতে চায়। তখন মহান আল্লাহ তা’আলা ইব্রাহিম (আঃ) এর উপর সন্তুষ্ট হয়ে পশু কোরবানি দিতে বলেন। সেই থেকে প্রত্যেক বছর মুসলমানেরা তাদের নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী কোরবানি দিয়ে থাকে।

কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যাবে?

আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য যাদের উপর কুরবানী করা জায়েয রয়েছে তাদের কে প্রতি বছর কোরবানি দিতে হয়। প্রতি বছর কোরবানি দেওয়ার জন্য যেসব পশু গুলো হালাল বা যেসব পশু কুরবানি দেওয়া যাবে সেসব পশু গুলো হলো গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া এবং দুম্বা। একটি উট বা একটি মহিষ অথবা ষাড় সাতজন ভাগে মিলে কুরবানী দিতে পারবে। কোরবানি দেওয়ার মধ্যে যতটা পারা যায় নিজে নিজেই পশু কোরবানি দেওয়া সবচাইতে ভালো হয়। একটি হাদীসে এসেছে নিজের পশু কোরবানির নিজের হাতেই দেওয়া যাবে। আর নারী এবং পুরুষ উভয়েই কোরবানির পশু জবাই করতে পারবে।

ঈদুল আজহা কত তারিখে?

ইসলামের নিয়ম অনুসারে প্রতিবছর জিলহজ মাসের 10 তারিখ 18 তারিখ এবং 12 তারিখে পবিত্র ঈদুল আযহার পালিত হয়ে থাকে এইদিন মুসলমানেরা সকাল ভোরে নামাজ আদায় করার পর দুই রাকাত ঈদুল আযহার নামাজ জামাতের সহিত আদায় করে পশু জবাই করে থাকে।

পবিত্র ঈদুল আযহা সব সময় চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। প্রতিবছরের মতো এই বছর ঈদুল আযহা ইংরেজি মাসের 9,10, 11 জুলাই তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। যদিও কোরবানি চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল তবে জিলহজ্ব মাসের 10, 11, 12 তারিখ হিসেবে জুলাই মাসের 9, 10, 11 তারিখ এই কোরবানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত প্রতিবছর এই কোরবানি তিনদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে। এই তিনদিন মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পশু যা আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদের জন্য হালাল করেছেন তা কোরবানি দেওয়া হয়ে থাকে।

কোরবানির গোসত বন্টন

একটি পশু কোরবানি দেওয়ার পর সেই পশুর গোশত প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করে বিতরণ করতে হয়। একটি হাদিস থেকে এসেছে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এক ভাগ কোরবানির মাংস নিজের পরিবারের জন্য রাখতেন, আরেক ভাগ প্রতিবেশীদের জন্য দিতেন এবং সর্বশেষ তৃতীয় ভাগ গরিব দুঃখীদের মাঝে বিতরণ করতে করতেন।

সেই থেকে প্রতিবছর আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য প্রত্যেকটি মুসলমানেরা কোরবানি দেওয়ার পর তিন ভাগে গোশত ভাগ করে বিতরন করে। এক ভাগ মাংস নিজের পরিবারের জন্য রাখে, দ্বিতীয় ভাগ প্রতিবেশীদের কে বিলিয়ে দেয় এবং তৃতীয় ভাগ গরিব দুঃখীদের মাঝে বিতরণ করে থাকে। বিভিন্ন ইমাম ও হাদিসের মতে গরুর মাংস তিন ভাগে ভাগ করেছে মুস্তাহাব বলা হয়।

অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন যে, কোরবানি কত তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। আর তাদের জন্য বলতে চাই একটা কথা ঈদুল আজহা বা কোরবানি মূলত চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। আর এছাড়াও কোরবানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জিলহজ মাস অনুযায়ী এই জুলাই মাসের 9, 10, 11 তারিখে। যেহেতু প্রতিবছর জিলহজ্ব মাসের 10, 11, 12 তারিখে এই তিন দিনে কোরবানি দেওয়া হয়।

আশা করি আপনারা কোরবানি সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারলেন। এছাড়াও আরও জানতে পারলেন যে ঈদুল আজহা ২০২৪ কত তারিখে এবং কোরবানি সম্পর্কে আরও বিভিন্ন তথ্য। এখন হয়তো আপনারা কোরবানি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরে সঠিক ভাবে কোরবানি দিতে পারবেন। এর পর ও যদি কোরবানি সম্পর্কে কোন কিছু জানতে বা বুঝতে না পারেন।

তাহলে অবশ্যই আমাদের কে কমেন্টে বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা আপনার সমস্যাটির সমাধান করে দেয়ার চেষ্টা করব। যাতে করে আপনি কোরবানি সম্পর্কে অনেক কিছুর ধারণা খুব সুন্দর এবং সাবলীল ভাবে পেতে পারেন। তো দেখা হবে আবার নতুন কোন আর্টিকেলে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত আশা করি সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

জানতে ও জানাতে চাই।