প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশা করছি সবাই ভালো আছো। তোমরা কি ৯ম শ্রেণি দ্বাদশ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২৪ ভূগোল ও পরিবেশ বিষয় এর উত্তর সম্পর্কে ধারণা নিতে চাচ্ছো? কিংবা এসাইনমেন্টটি কিভাবে প্রস্তুত করতে হয় সে সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? তাহলে বলবো তোমরা ঠিক ওয়েবসাইটে এসেছো। তোমাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটিতে রয়েছে ৯ম শ্রেণির দ্বাদশ সপ্তাহের ভূগোল ও পরিবেশ অ্যাসাইনমেন্টের বাছাইকরা উত্তর- “সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীতে জলবায়ুগত তারতম্য পরিলক্ষিত হয়”- অনধিক ৩০০ শব্দের মধ্যে একটি প্রতিবেদন লেখ।

মূল্যায়নের লক্ষ্যে প্রকাশিত নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দ্বাদশ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে সম্পন্ন করার পর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষকের নিকট জমা দিবে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকেরা মূল্যায়ন করে যথাযথ নিয়মে সংরক্ষণ করবেন। তোমাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটিতে রয়েছে ৯ম শ্রেণি দ্বাদশ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২৪ ভূগোল ও পরিবেশ এর বাছাইকরা সমাধান।

৯ম শ্রেণি দ্বাদশ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২৪ ভূগোল ও পরিবেশ

https://i.imgur.com/AVVluzJ.jpg

অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ :

সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীতে জলবায়ুগত তারতম্য পরিলক্ষিত হয়- অনধিক ৩০০ শব্দের মধ্যে একটি প্রতিবেদন লেখ।

সংকেত :

  • ১। সূচনা
  • ২। পৃথিবীর বার্ষিক গতি ও ঋতু পরিবর্তন প্রক্রিয়ার বর্ণনা
  • ৩। ঋতু পরিবর্তনের চিত্র
  • ৪। উপসংহার

নির্দেশনা :

  • ১। পাঠ্যপুস্তক থেকে ঋতু পরিবর্তন পড়তে হবে
  • ২। পৃথিবীর গতি সম্পর্কিত অন্যান্য বইয়ের সাহায্য নেয়া যেতে পারে
  • ৩। ইন্টারনেটের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।

৯ম শ্রেণির দ্বাদশ সপ্তাহের ভূগোল ও পরিবেশ অ্যাসাইনমেন্টের বাছাইকরা উত্তর

সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীতে জলবায়ুগত তারতম্য পরিলক্ষিত হয়।

তারিখ : ২১ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রি .

বরাবর ,

প্রধান শিক্ষক

’ক’ উচ্চ বিদ্যালয় স্কুল, কুমিল্লা

বিষয় : সূর্যকে পরিমণকালে পৃথিবীতে বায়ুগত তারতম্য পরিলক্ষিত হয় ।

জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে , আপনার আদেশ নং বা.উ.বি.৩৫৫-১ তারিখ ১৮/৮/২০২৪ অনুসারে উপরােক্ত বিষয়ের উপর আমার স্বব্যখ্যাত প্রতিবেদনটি নিম্নে পেশ করলাম ।

সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীতে জলবায়ুগত তারতম্য পরিলক্ষিত হয়

সূচনা:

পৃথিবী এবং সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ সূর্যের চারপাশে ঘোরে। প্রতিটি গ্রহই দু’ভাবে ঘোরে, একটা তার নিজের অক্ষে, যেটাকে বলা হয় আহ্নিক গতি। পৃথিবীর এই আহ্নিক গতির কারণে দিন এবং রাত হয়। পাশাপাশি পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে। এই ঘোরাকে বলা হয় পৃথিবীর বার্ষিক গতি। সূর্যকে ঘুরে আসতে পৃথিবীর সময় লাগে ৩৬৫ দিন ৬ ঘণ্টা। এই সময়কালকে এক বছর বা এক সৌর বছর বলে। পৃথিবীর এই বার্ষিক গতির কারণে ঋতু পরিবর্তন হয়।

পৃথিবী আমাদের আবসস্থল। পৃথিবীর চারদিকে ঘিরে রয়েছে অসীম মহাকাশ। সৈারজগতের কেন্দ্রে সূর্য রয়েছে। মহাকাশে এরূপ বহু নক্ষএ রয়েছে।পাশাপাশি চন্দ্র(উপগ্রহ), পৃথিবী (গ্রহ), ধুমকেতু, উল্কা,নীহারিকা প্রভৃতি রয়েছে । ক্ষুদ্র পোকামাকড় ও ধূলিকণা থেকে শুরু করে আমাদের এই পৃথিবী, দূর-দূরান্তের সকল জ্যোতিষ্ক এবং দেখা না দেখা সবকিছু নিয়েই মহাবিশ্ব।

পৃথিবীর বার্ষিক গতি ও ঋতু পরিবর্তনের প্রক্রিয়া

পৃথিবীর গতি (The Movement of the Earth):

পূর্বে মনে করা হতো পৃথিবী স্থির এবং সূর্যই পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। কিন্তু পরবর্তীতে প্রমাণিত হয় যে, সূর্য সৌরজগতের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং পৃথিবীই সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। পৃথিবী শুধু সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে না, নিজ অক্ষ বা মেরুরেখার উপরও আবর্তন করে। পৃথিবীর গতি দুই প্রকার। নিজ অক্ষের উপর একদিনে আবর্তন করাকে আহ্নিক গতি (Rotation) এবং কক্ষপথে এক বছরে সূর্যকে পরিক্রমণ করাকে বার্ষিক গতি (Revolution) বলে।

আহ্নিক গতি (Rotation):

পৃথিবী গতিশীল। পৃথিবী তার নিজের মেরুদণ্ডের বা অক্ষের চারদিকে দিনে একবার নির্দিষ্ট গতিতে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করে। পৃথিবীর এই আবর্তন গতিকে দৈনিক গতি বা আহ্নিক গতি বলে। পৃথিবী তার নিজের মেরুদণ্ডের উপর একবার পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করতে সময় নেয় ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড বা ২৪ ঘণ্টা অর্থাৎ একদিন। একে সৌরদিন বলে।

পৃথিবীর আহ্নিক গতি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম। পৃথিবীপৃষ্ঠ পুরোপুরি গোল না হওয়ায় এর পৃষ্ঠ সর্বত্র সমান নয়। সে কারণে পৃথিবীপৃষ্ঠের সকল স্থানের আবর্তন বেগও সমান নয়। নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর পরিধি সবচেয়ে বেশি। এজন্য নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর আবর্তনের বেগ সবচেয়ে বেশি। ঘণ্টায় প্রায় ১৭০০ কিলোমিটার। ঢাকায় পৃথিবীর আহ্নিক গতির বেগ ১৬০০ কিলোমিটার। যত মেন্নুর দিকে যাবে এ আবর্তনের বেগ তত কমতে থাকে এবং মেরুদ্বয়ে প্রায় নিঃশেষ হয়ে যায়।

বার্ষিক গতি:

সূর্যের মহাকর্ষ বলের আকর্ষণে পৃথিবী নিজের অক্ষের উপর অবিরাম ঘুরতে ঘুরতে একটি নির্দিষ্ট পথে নির্দিষ্ট দিকে (ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে) এবং নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যের চারদিকে ঘুরছে। পৃথিবীর এই গতিকে বার্ষিক গতি বা পরিক্রমণ গতি বলে।

একবার সূর্যকে পূর্ণ পরিক্রমণ করতে পৃথিবীর সময় লাগে ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। একে সৌরবছর বলে। কিন্তু আমরা ৩৬৫ দিনকে এক বছর ধরি। এতে প্রতি বছর প্রায় ৬ ঘণ্টা অতিরিক্ত থেকে যায়। এ অতিরিক্ত সময়ের সামঞ্জস্য আনার জন্য প্রতি ৪ বছর অন্তর ফেব্রুয়ারি মাসে ২৪ ঘণ্টা বা ১ দিন বাড়িয়ে সময়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখা হয়। এভাবে যে বছর ফেব্রুয়ারি মাসকে ১ দিন বাড়িয়ে ২৯ দিন করা হয় এবং ঐ বছরটিকে ৩৬৬ দিন ধরা হয়। সেই বছরকে লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষ বলে। সাধারণত কোনো বছরকে ৪ দিয়ে ভাগ করলে যদি ভাগশেষ না থাকে তবে ঐসব বছরকে অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার (Leap Year) ধরা হয়।

বার্ষিক গতির ফল (The results of Revolution): বার্ষিক গতির ফল হলো– (১) দিবারাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি, – (২) ঋতু পরিবর্তন।

(১) দিবারাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি : পৃথিবীর দিবারাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ—

  • (ক) পৃথিবীর অভিগত গোলাকৃতি;
  • (খ) পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথ;
  • (গ) পৃথিবীর অবিরাম আবর্তন ও পরিক্রমণ গতি;
  • (ঘ) পৃথিবীর মেরুরেখার সর্বদা একই মুখে অবস্থান;
  • (ঙ) পৃথিবীর কক্ষপথে কৌণিক অবস্থান।

সূর্যকে প্রদক্ষিণের সময় পৃথিবী আপন মেরুরেখায় কক্ষপথের সঙ্গে ৬৬.৫° কোণে হেলে থাকে । পৃথিবী ৬৬.৫° কোণ করে চলার কারণে ২১ শে মার্চ সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। এরপর ধীরে ধীরে সূর্যের কিরণ উত্তর গোলার্ধের দিকে যেতে থাকে।

সূর্যকে পরিক্রমণ করতে করতে ২১ শে জুন পৃথিবী এমন এক জায়গায় আসে যে তখন সূর্যের রশ্মি ভূপৃষ্ঠের ২৩.৫° উত্তর অক্ষাংশে অর্থাৎ কর্কটক্রান্তির উপর লম্বভাবে পড়ে। এ সময় উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে থাকে। সে কারণে এই সময় উত্তর গোলার্ধে দিনের দৈর্ঘ্য ও তাপমাত্রাও বেশি হয়ে থাকে। উত্তর গোলার্ধে ২১ শে জুন দীর্ঘতম দিন ও ক্ষুদ্রতম রাত হয়। ২১ শে জুন সূর্য উত্তরায়ণের শেষ সীমায় পৌঁছায়, একে কর্কটসংক্রান্তি বলে।

২৩ শে সেপ্টেম্বর পুনরায় ২১ শে মার্চের মতো সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। সেদিন সর্বত্র দিবারাত্রি সমান থাকে। ২৩ শে সেপ্টেম্বর থেকে আবার সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধের দিকে কিরণ বেশি দিতে থাকে। ২২ শে ডিসেম্বর এমনভাবে কোণ করে থাকে তাতে দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন এবং উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন হয়।

(২) ঋতু পরিবর্তন :

তাপমাত্রার পার্থক্য অনুসারে সারাবছরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। এ প্রতিটি ভাগকে এক একটি ঋতু বলে। তাপমাত্রার পার্থক্য অনুসারে সারাবছরকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো— গ্রীষ্মকাল, শরৎকাল, শীতকাল ও বসন্তকাল। আমরা জানি, সমগ্র পৃথিবীকে দুটো গোলার্ধে ভাগ করা হয়েছে। নিরক্ষরেখার উপরের দিকের অংশকে উত্তর গোলার্ধ এবং নিচের দিকের অংশকে দক্ষিণ গোলার্ধ ধরা হয়। উত্তর গোলার্ধে যখন গ্রীষ্মকাল দক্ষিণ গোলার্ধে তখন শীতকাল। আবার উত্তর গোলার্ধে যখন শীতকাল দক্ষিণ গোলার্ধে তখন গ্রীষ্মকাল। তেমনি উত্তর গোলার্ধে যখন বসন্তকাল দক্ষিণ গোলার্ধে তখন শরৎকাল। আবার উত্তর গোলার্ধে যখন শরৎকাল দক্ষিণ গোলার্ধে তখন বসন্তকাল। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান উত্তর গোলার্ধে। এখানে জুন মাসের দিকে গরম বেশি অনুভূত হয়। এই সময়ে দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল।

ঋতু পরিবর্তনের কারণ (Causes of changing season): পৃথিবীতে ঋতু পরিবর্তনের কারণ হলো—

(১) পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দিবারাত্রির তারতম্যের জন্য উত্তাপের হ্রাস-বৃদ্ধি: পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে সূর্য পৃথিবীর যে গোলার্ধের নিকট অবস্থান করে তখন সেই গোলার্ধে দিন বড় এবং রাত ছোট। তার বিপরীত গোলার্যে রাত বড়, দিন ছোট। পৃথিবী দিনের বেলায় তাপ গ্রহণ করে ফলে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয় এবং রাতের বেলায় বিকিরণ করে শীতল হয়। তখন একটি স্থানে বড় দিনে ভূপৃষ্ঠ যে তাপ গ্রহণ করে ছোট রাতে সে তাপ পুরোটা বিকিরণ করতে পারে না। ঐ স্থানে সঞ্চিত তাপের কারণে আবহাওয়া উষ্ণ হয় এবং তাতে গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়া পরিলক্ষিত হয়। বিপরীত গোলার্ধে রাত বড় এবং দিন ছোট হওয়াতে দিনের বেলায় যে তাপ গ্রহণ করে রাতের বেলায় সব তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা অনুভূত হয় তখন শীতকাল ৷

(২) পৃথিবীর গোলাকার আকৃতি: পৃথিবী গোল, তাই পৃথিবীর কোথাও সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে আবার কোথাও তির্বকভাবে পড়ে। ফলে তাপমাত্রার পার্থক্য হয় এবং ঋতু পরিবর্তিত হয়।

(৩) পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথ: পৃথিবীর আবর্তন পথ উপবৃত্তাকার তাই বছরের বিভিন্ন সময় সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব কমবেশি হয়। এতে তাপমাত্রার পার্থক্য হয়, তাই ঋতু পরিবর্তিত হয়।

(৪) পৃথিবীর কক্ষপথে কৌণিক অবস্থান: সূর্যকে পরিক্রমণের সময় নিজ কক্ষতলের সঙ্গে পৃথিবীর মেরুরেখা সমকোণে না থেকে ৬৬.৫° কোণে হেলে একই দিকে অবস্থান করে। এতে বছরে একবার পৃথিবীর উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু সূর্যের নিকটবর্তী হয়। যে গোলার্ধ যখন সূর্যের দিকে ঝুঁকে থাকে সে গোলার্ধে সূর্য লম্বভাবে কিরণ দেয়। তার তাপমাত্রা তখন বেশি হয় এবং দূরে গেলে তাপমাত্রা কম হয়, ফলে ঋতু পরিবর্তন ঘটে।

(৫) বার্ষিক গতির কারণে পৃথিবীর বার্ষিক গতির জন্য সূর্যকিরণ বিভিন্ন স্থানে কমবেশি পড়ার কারণে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রার পার্থক্য ঘটছে। ফলে বিভিন্ন স্থানে জলবায়ুর বিভিন্নতা হয়। একে ঋতু পরিবর্তন বলে।

ঋতু পরিবর্তন প্রক্রিয়া (The process of changing ) :

আমরা জানি, পৃথিবীতে চারটি ঋতু— গ্রীষ্মকাল, শরৎকাল, শীতকাল ও বসন্তকাল। আমরা এখন দেখব ঋতু কীভাবে পরিবর্তিত হয়। সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীর চারটি অবস্থা থেকে ঋতু পরিবর্তনের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।

Seasons change

ঋতু পরিবর্তনের চিত্র

উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল :

২১ শে মার্চের পর থেকে পৃথিবী তার নিজ কক্ষপথে এগিয়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর মেরু ক্রমশ সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। এর সঙ্গে সঙ্গে যত দিন যায় তত উত্তর মেরুতে আলোকিত অংশ বাড়তে থাকে। এভাবে ২১ শে জুনে গিয়ে সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দিতে থাকে। ফলে ২১ শে জুন উত্তর গোলার্ধে বড় দিন এবং ছোট রাত হয়। ঐ দিনই সূর্যের উত্তরারণের শেষ এবং তার পরের দিন থেকে পুনরায় সূর্ব দক্ষিণ দিকে আসতে থাকে।

দিন বড় হওয়ার কারণে উত্তর গোলার্ধে ২১ শে জুনের দেড় মাস পূর্ব থেকেই গ্রীষ্মকাল শুরু হয় এবং পরের দেড় মাস পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল স্থায়ী হয়। এই সময়ে দক্ষিণ গোলার্ধে ঠিক বিপরীত অবস্থা দেখা যায় অর্থাৎ শীতকাল অনুভূত হয়। এ সমদ্র সূর্য হেলে থাকার কারণে এ গোলার্ধে সূর্য কম সময় ধরে কিরণ দেয়। ফলে দিন ছোট এবং রাত বড় হয়। দিনে ভূপৃষ্ঠ যতটুকু উত্তপ্ত হয়, রাতে তাপ বিকিরণের ফলে তা ঠান্ডা হয়ে যায়। এখানে ভন পীতের আবহাওয়া বিরাজ করে। দক্ষিণ গোলার্ধে এ সময়কে শীতকাল বলে।

উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে বসন্তকাল :

২১ শে জুন থেকে দক্ষিণ মেরু সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। উত্তর গোলার্ধে অংশগুলো কম কিরণ পেতে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধের অংশগুলো বেশি সূর্যকিরণ পেতে থাকে। এভাবে ২৩-এ সেপ্টেম্বর সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। তাই এ সময় পৃথিবীর সর্বত্র দিন ও রাত্রি সমান হয়। দিনের বেলায় যে তাপ আসে রাত সমান হওয়ায় একই পরিমাণ তাপ বিকিরিত হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে আবহাওয়াতে ঠান্ডা গরমের পরিমাণ সমান থাকে। এই সময় উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে বসন্তকাল বিরাজ করে। ২৩ সেপ্টেম্বরের দেড় মাস আগে থেকেই উত্তর গোলার্ধে শরৎকালের সূচনা হয় এবং দেড় মাস পর পর্যন্ত এই শরৎকাল স্থায়ী থাকে।

উত্তর গোলার্ধে শীতকাল দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল :

২৩ এ সেপ্টেম্বরের পর দক্ষিণ গোলার্ধ ক্রমশ সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। এই সময় দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের কাছে আসতে থাকে। উত্তর গোলার্ধ দূরে সরতে থাকে। ফলে দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্য সম্বভাবে এবং উত্তর গোলার্ধে কোপ করে কিরণ দিতে থাকে। এতে উত্তর গোলার্ধে দিন ছোট ও দক্ষিণ গোলার্ধে দিন বড় এবং রাত ছোট হতে থাকে। এর মধ্যে ২২ শে ডিসেম্বর সূর্য মকরক্রান্তির উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। সেই দিন উত্তর গোলার্ধে ছোট দিন ও বড় রাত হওয়াতে শীতকাল। ঐ দিনই সূর্যের দক্ষিণ শেষ এবং তার পরের দিন থেকে সূর্য উত্তর দিকে আসতে থাকে। ২২ শে ডিসেম্বরের দেড় মাস পূর্বেই উত্তর গোলার্ধে শীতকাল শুরু হয় এবং পরের দেড় মাস পর্যন্ত বিরাজ করে। এই সময়টাতে দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল।

উত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে শরৎকাল :

পৃথিবী তার কক্ষপথে চলতে চলতে ২২ শে ডিসেম্বরের পর থেকে ২১ শে মার্চ পর্যন্ত এমন স্থানে ফিরে আসে যখন সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দিতে থাকে। ফলে ২১ শে মার্চ পৃথিবীর সর্বত্র দিনরাত্রি সমান হয়। দিনের বেলায় সূর্যকিরণের কারণে ভূপৃষ্ঠের বায়ুক্তর গরম হয় এবং রাত্রিবেলায় বিকিরিত হয়ে ঠান্ডা হয়। এই সময় উত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে শরৎকাল। ২১ শে মার্চ পৃথিবীর সর্বত্র দিনরাত্রি সমান হয় এবং ঐ দিনটিকে বাসন্ত বিষুব বা মহাবিষুব বলে।

ঋতু পরিবর্তনের প্রভাব (Impact of changing season) :

  • ঋতু পরিবর্তন মানুষের দৈনন্দিন জীবনমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পেশাকে প্রভাবিত করে।
  • পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান ঋতু পরিবর্তনর ফলে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হয়।
  • ঋতু পরিবর্তন জীবজগতের বৃদ্ধি, বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হয়।

উপসংহার :

সূর্য একটি নক্ষত্র এবং চাঁদ একটি উপগ্রহ। এই আকাশের শুরু ও শেষ নেই। আদি-অন্তহীন এ আকাশকে মহাকাশ বলে। মহাকাশে অসংখ্য জ্যোতিষ্ক রয়েছে। এরা সুশৃঙ্খলভাবে নিজস্ব কক্ষপথে নির্দিষ্ট গতিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদের মধ্যে কোনো কোনোটার আলো আছে আবার কোনো কোনোটার আলো নেই। মহাকাশে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, ধূমকেতু, উল্কা, নীহারিকা, পালসার, কৃষ্ণবামন (Black dwarf), কৃষ্ণগহ্বর (Black hole) প্রভৃতি সবকিছুই রয়েছে। এদের সবাইকে নিয়ে গঠিত হয়েছে মহাবিশ্ব। মহাবিশ্ব যে কত বড় তা কেউ জানে না। কেউ জানে না মহাবিশ্বের আকার বা আকৃতি কেমন, অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন মহাবিশ্বের শুরু ও শেষ নেই। আবার কেউ কেউ এখনও বিশ্বাস করেন মহাবিশ্বের আকার ও আকৃতি আছে। মানুষ প্রতিনিয়তই মহাবিশ্ব সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য আবিষ্কার করছে, এর অনেক কিছুই এখনও অজানা রয়ে গেছে। এই অজানা হয়তো চিরকালই থাকবে।

প্রতিবেদকের নাম : খাদিজাতুল স্বর্ণা
প্রতিবেদনের ধরন : প্রাতিষ্ঠানিক
প্রতিবেদনের শিরোনাম : সূর্যকে পরিমণকালে পৃথিবীতে বায়ুগত তারতম্য পরিলক্ষিত হয়
প্রতিবেদন তৈরির স্থান : কুমিল্লা
তারিখ : ২১.০৮.২০২৪ ইং

এই ছিল তোমাদের জন্য আজকের আর্টিকেল : ৯ম শ্রেণির দ্বাদশ সপ্তাহের ভূগোল ও পরিবেশ অ্যাসাইনমেন্টের বাছাইকরা উত্তর- “সূর্যকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীতে জলবায়ুগত তারতম্য পরিলক্ষিত হয়”- অনধিক ৩০০ শব্দের মধ্যে একটি প্রতিবেদন লেখ।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.