‘সার্ক সাহিত্য পুরস্কার-২০১৯’-এ ভূষিত হয়েছেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সার্ক কালচারাল সেন্টারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় এ পুরস্কার। গত সোমবার শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় অবস্থিত সার্ক কালচারাল সেন্টারের সদর দপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠানের সহকারী পরিচালক কিষানি জয়সিংহ-জয়শেকারা স্বাক্ষরিত পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২১ মে সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী ভুটানের থিম্পুতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনিসুজ্জামানের হাতে পুরস্কারটি তুলে দেওয়া হবে। পুরস্কারপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় আনিসুজ্জামান বলেন, ‘সার্ক সাহিত্য পুরস্কার একটি মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার। এই পুরস্কার পেয়ে আমি আনন্দিত।’
এদিকে বাংলা একাডেমির সভাপতি আনিসুজ্জামানের পুরস্কারপ্রাপ্তিতে একাডেমির পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে তাঁকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
আনিসুজ্জামানের জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, অবিভক্ত ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাটে। তিনি চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষক। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে গিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করেন। বর্তমানে বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
আনিসুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইমেরিটাস অধ্যাপক। তিনি ভাষা আন্দোলন (১৯৫২), ঊনসত্তরের গণ–অভ্যুত্থান (১৯৬৯) ও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ড. কুদরাত-এ-খুদাকে প্রধান করে গঠিত জাতীয় শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নিয়ে তাঁর গবেষণা সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।
আনিসুজ্জামান শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য একাধিক পুরস্কার লাভ করেছেন। প্রবন্ধ গবেষণায় অবদানের জন্য ১৯৭০ সালে তিনি বাংলা একাডেমি থেকে প্রদত্ত বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। শিক্ষায় অবদানের জন্য তাঁকে ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য তাঁকে ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ পদক প্রদান করা হয়। সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তাঁকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করা হয়।