ancient Bengal Map

ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর এর পূর্বে প্রশ্ন নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো। যাতে করে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রশ্ন বুঝে এবং প্রশ্নের নং অনুযায়ী অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর সংগ্রহ করে নির্ভুলভাবে এসাইনমেন্ট তৈরি করতে পারে।

এসএসসি ইতিহাস পঞ্চম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২৪ উত্তর

https://i.imgur.com/xbzxt1A.jpg

অ্যাসাইনমেন্টঃ

প্রাচীন বাংলার মানচিত্র অঙ্কন করে জনপদগুলো চিহ্নিত কর এবং তোমার বর্তমান জেলা কোন জনপদের অধীনে ছিল তার বর্ণনা।

নির্দেশনাঃ

  1. প্রাচীন বাংলার মানচিত্র অঙ্কন করে জনপদগুলাে চিহ্নিত করা
  2. জনপদগুলাের গুরুত্ব বাথ্যা
  3. প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের ধারণা ব্যাখ্যা
  4. শিক্ষার্থীর বর্তমান নিজ জেলা যে জনপদে অন্তর্ভুক্ত ছিল তাঁর ব্যাখ্যা

ক.প্রাচীন বাংলার মানচিত্র অংকন করে জনপদগুলাে চিহ্নিত করনঃ

প্রাচীনকালে বাংলার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলগুলাের নাম দেয়া হয়েছিল জনপদ। চতুর্থ শতক হতে গুপ্ত যুগ, গুপ্ত পরবর্তী যুগ, পাল, সেন প্রভৃতি আমলের উল্কীর্ণ শিলালিপি ও সাহিত্য গ্রন্থে প্রাচীন বাংলার ১৬ টি জনপদগুলাের নাম পাওয়া যায় (বাংলায় ছিল ১০টি)।যথা বঙ্গ, গৌড়, সমতট, হরিকেল, চন্দ্রদ্বীপ, রাঢ়, পুণ্ড ও বারিন্দ্রী প্রভৃতি নামে জনপদ ছিল।

ancient Bengal Map

খ.প্রাচীন বাংলার জনপদগুলাের গুরুত্ব ব্যাখ্যাঃ

আমাদের এই অতিপ্রিয় বাংলার জন্ম কিন্তু রাতারাতি হয় নি। প্রাচীন বাংলার যাত্রা শুরু হয় বেশ কিছু জনপদের মাধ্যামে। উত্তীর্ণ শিলালিপি ও বিভিন্ন সাহিত্যগ্রন্থে প্রায় ১৬টি জনপদের কথা জানা যায়। তবে একেকটি জনপদের সীমা এক এক রকম ছিল। এই জনপদগুলাে ধীরে ধীরে বর্ধিত হয়ে বর্তমান বাংলার রূপ পরিস্ফুটন হয়েছে। তাই এই জনপদগুলাের গুরুত্ব অপরিসীম। নিচে কয়েকটি উল্লেখযােগ্য জনপদের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হলােঃ

পুন্ড্রঃ প্রাচীন বাংলার অন্যতম প্রধান জনপদ ছিল পুন্ড্র। বর্তমান বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চল নিয়ে গঠিত পুন্ড্রদের রাজধানী ছিল পুন্ড্রনগর যা পরবর্তীকালে মহাস্থানগড় নামে পরিচিত হয়। প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের মধ্যে পুন্ড্রই ছিল সবচেয়ে সমৃদ্ধ জনপদ। পাথরের চাকতিতে খােদাই করা প্রাপ্ত লিপিগুলােকেই মনে করা হয় বাংলাদেশের প্রাচীনতম শিলালিপি।

বঙ্গঃ বঙ্গ নামেই বাংলা নামটি জড়িয়ে আছে। এটি অতি প্রাচীন জনপদ। বর্তমান বাংলাদেশের বিক্রমপুর, ফরিদপুর, বাকেরগঞ্জ ও পটুয়াখালির নিচু জলাভূমি পর্যন্ত ছিল বঙ্গ জনপদের বিস্তৃতি। বঙ্গ জনপদ ছিল খুবই শক্তিশালি অঞ্চল। এই বঙ্গ’ নাম থেকেই বাঙালি জাতির উৎপত্তি ঘটেছিল।

গৌড়ঃ প্রাচীন বাংলায় সবচেয়ে জনপ্রিয় জনপদ ছিল গৌড়। তবে এই জনপদটির প্রাথমিক অবস্থান ঠিকমতাে জানা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হয় ষষ্ঠ শতকে পূর্ব বাংলার উত্তর অংশে গৌড় রাজ্য নামে স্বাধীন এক রাজ্য। ছিল। যার রাজা ছিলেন শশাঙ্ক এবং রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। রাজা শশাঙ্ক ছিলেন শক্তিশালী রাজা।তার শাসনামলে প্রাচীন বাংলায় গৌড় জনপদ অনেক সমৃদ্ধ হয়েছিল।

হরিকেলঃ সপ্তম শতকের লেখকদের বর্ণনায় হরিকেল জনপদের অবস্থান যে পূর্ব বাংলায় ছিল সেটা জানা যায়। বর্তমান সিলেট থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত এই জনপদ ছিল সমৃদ্ধ। সমতট অনেকেই মনে করেন সমতট বর্তমান কুমিল্লার প্রাচীন নাম। গঙ্গা-ভাগীরথীর পূর্ব তীর থেকে শুরু করে মেঘনার মােহনা পর্যন্ত সমুদ্রকূলবর্তী অঞ্চলকেই সম্ভবত সমতট বলঅ হতাে। কামতা ছিল এর রাজধানী। এই জনপদের নিদর্শন পাওয়া যায় কুমিল্লার ময়নামতিতে। শালবন বিহার এদের অন্যতম। উপরিল্লিখিত প্রাচীন জনপদগুলাে থেকে আমরা প্রাচীন বাংলার ভৌগলিক অবয়ব, সীমারেখা, রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারি। প্রাচীন জনপদগুলাতেই পারস্পরিক বিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান বাংলার জনপদ হিসেবে গড়ে উঠেছে।প্রাচীন বাংলার এই জনপদের বিভিন্ন নিদর্শন আমাদের ঐতিহ্যগত সম্পদ। তাই এই জনপদগুলাের গুরুত্ব অপরিসীম।

গ.প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের ধারণা ব্যাখ্যাঃ

প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের সময়কাল নিয়ে কিছুটা দ্বিধাবিভক্তি দেখা যায় ঐতিহাসিকগণের মধ্যে। তখনকার আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে ঐতিহাসিক সময়কালগুলাে অর্থাৎ যুগ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ঐতিহাসিকগণ মনে করেন যে, খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দ থেকে ১৩০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে বাংলার ইতিহাসের প্রাচীন যুগ বলা হয়। আবার কেউ কেউ খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দ থেকে ৬০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে আদি ঐতিহাসিক যুগ এবং ৭০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৩০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে প্রাক-মধ্যযুগ বলেও যুগ বিভাজন করে থাকেন।

এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ দিকে প্রাচীন বাংলার অবস্থান। বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনাবলির বদৌলতে এর সীমানা বারবার পরিবর্তিত হয়েছে। ১৯৪৭ সালে ইংরেজদের বিদায়ের পর বাংলা দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। বর্তমান বাংলাদেশ পূর্ব পাকিস্তান নাম ধারণ করে এবং অপর বাংলা ভারতের অংশ হয়ে যায়। পরে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে পরিণত হয়।প্রাচীন যুগে বাংলা এখনকার মতাে কোনাে একক ও অখন্ড রাষ্ট্র বা রাজ্য ছিল না। বাংলার বিভিন্ন অংশ তখন ছােট ছােট অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। আর প্রতিটি অঞ্চলের শাসক যার যার মতাে শাসন। করতেন। বাংলার এ অঞ্চলগুলােকে তখন সমষ্টিগতভাবে নাম দেয়া হয়েছিল জনপদ।

ঘ. আমার বর্তমান জেলা যে জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিলােঃ

আমি বর্তমানে যে জেলায় বাস করি তার নাম হলাে ঢাকা। যা পূর্বে বঙ্গ জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাে। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলাে। বৃহত্তর ঢাকা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, বরিশাল, পাবনা, ফরিদপুর নােয়াখালী, বাকেরগঞ্জ ও পটুয়াখালীর নিম্ন জলাভূমি এবং পশ্চিমের উচ্চভূমি যশাের, কুষ্টিয়া, নদীয়া, শান্তিপুর ও ঢাকার বিক্রমপুর সংলগ্ন অঞ্চল ছিল বঙ্গ জনপদের অন্তর্গত। পাঠান আমলে সমগ্র বাংলা বঙ্গ নামে ঐক্যবদ্ধ হয়। পুরানাে শিলালিপিতে ‘বিক্রমপুর ও ‘নাব্য’ নামে দুটি অংশের উল্লেখ রয়েছে। প্রাচীন বঙ্গ ছিল একটি শক্তিশালী রাজ্য। ঐতরেয় আরণ্যক’ গ্রন্থে বঙ্গ নামে উল্লেখ পাওয়া যায়।

এছাড়া রামায়ণ, মহাভারতে এবং কালিদাসের ‘রঘুবংশ’ গ্রন্থে ‘বঙ্গ’ নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।বঙ্গ নামেই বাংলা নামটি জড়িয়ে আছে। এটি অতি প্রাচীন জনপদ। বর্তমান বাংলাদেশের বিক্রমপুর, ফরিদপুর, বাকেরগঞ্জ ও পটুয়াখালির নিচু জলাভূমি পর্যন্ত ছিল বঙ্গ জনপদের বিস্তৃতি। বঙ্গ জনপদ ছিল খুবই শক্তিশালি অঞ্চল। এই ‘বঙ্গ’ নাম থেকেই বাঙালি জাতির উৎপত্তি ঘটেছিল।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.