শিক্ষাবৃত্তি

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ আবেদন কার্যক্রম শেষ হয়। এবার ঢাকা মহানগরে ৪১টি বিদ্যালয়ে ৮৫ হাজার ৭৮৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করেছে বলে জানা গেছে। এসব বিদ্যালয়ে ১২ হাজার ৩৬৬টি সিট রয়েছে। অর্থাৎ আসন প্রতি গড়ে এবার সাতজন ভর্তিযুদ্ধে নামছে।

সূত্র জানায়, ঢাকার ৪১টি হাইস্কুলের মধ্যে ১৭টিতে প্রথম শ্রেণিতে শিশু ভর্তি করা হবে। এই ১৭ প্রতিষ্ঠানে মোট এক হাজার ৯৬০টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ২২ হাজার ১৭৯ শিশুর। প্রতি আসনের বিপরীতে প্রায় ১২ ক্ষুদে শিক্ষার্থী লড়বে। এসব শিশুর ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে ১৭ ডিসেম্বর। শেষ হবে ২০ ডিসেম্বর। এর মধ্যে শেষদিন প্রথম শ্রেণির ভর্তি লটারি অনুষ্ঠিত হবে।

গত ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই আবেদন প্রক্রিয়ায় সারাদেশে ৪ শতাধিক সরকারি হাইস্কুলেও ভর্তির আবেদন পড়ে। ওইসব প্রতিষ্ঠানের জন্য সর্বমোট আবেদন জমা পড়েছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৪২টি। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের আসন সংখ্যা জানা যায়নি।

এবার ঢাকার ৪১ হাইস্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। হাইস্কুলগুলো তিন গ্রুপে ভাগ করে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। ৪১টি হাইস্কুলের মধ্যে ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপে ১৪টি করে এবং ‘গ’ গ্রুপে ১৩টি হাইস্কুল আছে। এর মধ্যে ৩৮টি হাইস্কুলে ১২ হাজার ৩৬৬টি আসন আছে।

১৭ হাইস্কুলে প্রথম শ্রেণিতে এক হাজার ৯৬০টি আসন রয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৮৪৯টি, তৃতীয় শ্রেণিতে দুই হাজার ১২৬টি, চতুর্থ শ্রেণিতে ৮২২টি, পঞ্চম শ্রেণিতে ৮৪৯টি, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৩ হাজার ৫৫৭টি, সপ্তম শ্রেণিতে ৭৩৮টি, অষ্টম শ্রেণিতে ৯৯৭টি এবং নবম শ্রেণিতে ৪৬৮টি আসন রয়েছে। নতুন প্রতিষ্ঠিত তিনটিতে আলাদা ভর্তি কার্যক্রম চলবে। এই তিন প্রতিষ্ঠানের আসন সংখ্যা এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি। স্কুল তিনটি হলো- হাজী এমএ গফুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সবুজবাগ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং শহীদ মনু মিঞা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) পরিচালক অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান বলেন, ঢাকা মহানগরীর সঙ্গে দেশের প্রায় চারশ’ সরকারি হাইস্কুলে ভর্তির আবেদন নেয়া হয়। পরীক্ষা ও লটারিতে শিক্ষার্থী বাছাই শেষ হলে নির্বাচনী কাজে কোনও বিঘ্ন না ঘটিয়ে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তি কাজ শেষ করা যাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ মোতাবেক এই সময়সূচি চূড়ান্ত করা হয়েছে।

ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, এবার স্কুলগুলোতে ১০৯ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এর মধ্যে ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী হবে মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী এবং শিক্ষা কোটায়। বাকি ১০০ শতাংশের মধ্যে ৪০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকা কোটার এবং অবশিষ্ট ৬০ শতাংশ আসন উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় পূরণ করা হবে।

ভর্তির ক্ষেত্রে সহোদররা অগ্রাধিকার পাবে। তবে ভর্তি পরীক্ষার ন্যূনতম শর্ত বা পাস নম্বর পেলেই চলবে। শুধু ষষ্ঠ শ্রেণির ভর্তির ক্ষেত্রে মোট আসনের ১০ শতাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। প্রথম শ্রেণির ভর্তিতে শিক্ষার্থীর বয়স জানুয়ারিতে ছয় বছরের বেশি হতে হবে।

দ্বিতীয়-অষ্টম শ্রেণির শূন্য আসনে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাক্রম অনুসারে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। নবম শ্রেণির ক্ষেত্রে জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বোর্ডের প্রস্তুত করা মেধাক্রম অনুসারে নিজ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির পর অবশিষ্ট শূন্য আসনে অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্ধারিত ভর্তি কমিটির বাছাই করতে হবে। দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পূর্ণমান-৫০, এর মধ্যে বাংলা-১৫, ইংরেজি-১৫, গণিত-২০ নম্বর। ভর্তি পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা। চতুর্থ-অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পূর্ণমান-১০০। এর মধ্যে বাংলা-৩০, ইংরেজি-৩০, গণিত-৪০ নম্বর থাকবে। ভর্তি পরীক্ষার সময় দুই ঘণ্টা।

প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করা হবে লটারিতে। প্রথম শ্রেণিতে রাজধানীর যে ১৭টি স্কুলে ভর্তি করা হবে, সেগুলো হলো- আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ধানমন্ডি গভ. ল্যাবরেটরি উচ্চবিদ্যালয়, ধানমন্ডি গভ. বয়েজ উচ্চবিদ্যালয়, ধানমন্ডি গভ. বয়েজ উচ্চবিদ্যালয়ের ফিডার শাখা, তেজগাঁও বালক উচ্চবিদ্যালয়, তেজগাঁও বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, মতিঝিল বালক উচ্চবিদ্যালয়, খিলগাঁও সরকারি হাইস্কুল, খিলগাঁও সরকারি হাইস্কুলের ফিডার শাখা, নারিন্দা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ সংযুক্ত উচ্চবিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও গণভবন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়।

I hope you are enjoying this article. Thanks for visiting this website.